• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন

চীনে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম বন্দি


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ১১, ২০১৮, ১:৫৪ PM / ৩৬
চীনে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিম বন্দি

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : চীন সরকার দেশটির ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলমানকে ‘কাউন্টার-এক্সটেরিমিজম সেন্টার’-এ বন্দি করে রেখেছে। এদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ নেই, বরং ধর্মীয় কারণে এবং চীনের কমিউনিস্ট সরকারের প্রতি জোরপূর্বক আনুগত্য আদায়ের জন্য বন্দি করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে কমিশনে এমন প্রতিবেদন তুলে ধরেছে।

জাতিসংঘের বর্ণবাদী বৈষম্য নিশ্চিহ্নকরণ সংক্রান্ত কমিটিতে চীনের ওপর আলোচনার শুরু হয়েছে শুক্রবার। দুই দিনের এ আলোচনা সোমবার শেষ হবে।

বিবিসি ও আলজাজিরাসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, আলোচনার শুরুতে শুক্রবার চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন পেশ করতে গিয়ে কমিটির সদস্য গে ম্যাকদুগাল উইঘুর মুসলমানদের ব্যাপারে ওই তথ্য উপস্থাপন করেন।

ম্যাকদুগাল বলেছেন, চীন স্বায়ত্তশাসিত উইঘুর অঞ্চলকে এক প্রকার বন্দি শিবিরে পরিণত করেছে এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন কমিটির সদস্যরা।

এ ছাড়া আরো ২০ লাখ মুসলমানকে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মতাদর্শে দীক্ষিতকরণের অংশ হিসেবে রি-এডুকেশন (পুনঃশিক্ষণ) ক্যাম্পে বন্দি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গে।

আলোচনায় অংশ নেওয়া চীনের ৫০ সদস্যের প্রতিনিধি দল এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সোমবার শেষ দিন তারা এর জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

প্রসঙ্গত, চীন এর আগে এ ধরনের বন্দি শিবিরের অস্তিত্বের কথা অস্বীকার করেছে।

উইঘুর হলো চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলিম সম্প্রদায়। যারা সেখানকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ। চীনের সংবিধান বা আইন অনুযায়ী জিনজিয়াং তিব্বতের মতো স্বায়ত্তশাসিত এলাকা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলমানদের গণহারে বন্দি করা হচ্ছে- এমন খবর গত কয়েক মাস ধরেই প্রচার হচ্ছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো জাতিসংঘে প্রতিবেদন দিয়েছে, যাতে ব্যাপকহারে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের বন্দি করা কথা বলা হয়েছে। ক্যাম্পে বন্দি করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংগঠনগুলো।

দ্য ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস তাদের রিপোর্টে বলেছে, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই বন্দি করা হচ্ছে এবং কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে উচ্চস্বরে স্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এ ছাড়া বন্দিদের সামান্য খাবার দেওয়া এবং ব্যাপকহারে নির্যাতনের অভিযোগও করেছে সংগঠনটি।

তারা বলছে, ক্যাম্পে যাদের বন্দি করা হয়েছে তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে জীবনে কোনো অপরাধ করার অভিযোগ নেই।

কিন্তু চীন বলছে, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ দমনের অংশ হিসেবেই তাদের বন্দি করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, উইঘুর মুসলিমদের বিষয়ে এমন সময় এ তথ্য প্রকাশ করা হলো যখন দেশটির অন্যত্র মসজিদ ভাঙার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় আন্দোলন করছেন মুসলমানরা।

উত্তর-পশ্চিমের নিয়াংজিয়া অঞ্চলে নতুন করে নির্মিত ওয়েইঝু গ্রান্ড মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গতকাল শুক্রবার রাস্তায় নামেন শত শত মানুষ।

কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবন নির্মাণের যথাযথ নিয়ম না মেনেই নতুন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।

কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, চীনে এমনিতেই ধর্মীয় কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তার ওপর এখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরকারের বৈরিতা আরো বাড়ছে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/১:৫২পিএম/১১/৮/২০১৮ইং)