• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন

চলছে সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলা(ভিডিও)


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৩০, ২০১৯, ১০:৩৩ AM / ১০৫
চলছে সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলা(ভিডিও)

সোনারগাঁ থেকে ফিরে সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি : বাংলার ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল প্রাচীন জনপদের নাম ‘সোনারগাঁও’। প্রায় তিনশ’ বছর সোনারগাঁও ই ছিল প্রাচীন বাংলার রাজধানী। সুলতানী আমলের পটভুমিতে আমাদের সোনালি ঐতিহ্যের দিকে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখতে বেছে নেয়া হয়েছিল সোনারগাঁকে। মুঘল সুবেদার ইসলাম খানের সময়ে ১৬০৮ সালে ঢাকায় রাজধানী স্থানান্তরিত হওয়ার পর সোনারগাঁয়ের গুরুত্ব ম্লান হয়ে যায়। তথাপি সোনারগাঁও আমাদেরকে নিয়ে যায় সোনালি অতীতের কাছে। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ে অতীত স্মৃতিকে সামনে রেখেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরামর্শ এবং আর্থিক সাহায্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় গৌরবদীপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন যা সোনারগাঁও জাদুঘর নামেও পরিচিত।

এখন বছরের শুরু, চলছে সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এর মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা। প্রতিদিনই দেশের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছে মেলা দেখার জন্য। ছেলে-বুড়ো সবাই মেলায় উপভোগ করছে নিজেকে।

‘বন্ধুর বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বায়স্কোপ, বায়স্কোপের নেশায় আমায় ছাড়ে না’

বাংলার অনেক বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম একটি এই ‘বায়স্কোপ’। ছোট বেলায় কত বায়স্কোপের খেলা দেখার জন্য বাবার কাছে কত বায়না করতাম। কিন্তু সেই দিনগুলি আজ কোথায় হারিয়ে গেল!

মেলার সবচেয়ে মজার জিনিস হচ্ছে নৌকায় চড়ে ঘুড়ে বেড়ানো। বিশেষ করে শহর থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা এ সুযোগ মিস করতে চান না।প্রতি ১০ মিনিট ২০০ টাকার বিনিময়ে লেকে ঘুরা যায়। লেকের মধ্যে লাল পদ্ম মন জুড়িয়ে যায়।

মেলায় এসে নাগড় দোলায় চড়বেন না তা কি হয়। জনপ্রতি ২৫ টাকার বিনিময়ে নাগড়দোলায় চড়া যায়। নাগড়দোলায় চড়ার মজায় আলাদা।

এবারের মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে নকশি কাথা। এ নকশি কাথা দেখলে জসীম উদ্দিনের “নকশি কাথার মাঠ”কাব্যের কথা মনে করিয়ে দেয়।মেলায় সুন্দর করে নকশি কাথা প্রদর্শন করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নকশিবিদরা মেলায় অংশ নিচ্ছে। এছাড়া শিতলপাটি, শতরঞ্জিরও মেলাতে পাওয়া যাচ্ছে।

মেলায় কাপড়ের দোকানের মধ্যে জামদানি শাড়ির দোকানগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

প্রাচীনকালের মিহি মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে জামদানি শাড়ি বাঙ্গালী নারীদের অতি পরিচিত। মসলিনের উপর নকশা করে জামদানি কাপড় তৈরি করা হয়।

খেজুরের রস মেলার অন্যতম আকর্ষণ। ছোট বড় সবাই মেলায় খেজুরের রস খেতে ভিড় করে।

মেলায় পুরনো ধাতব, কাসার থালা পিতলের বিভিন্ন আসবাবপত্র বিক্রি হচ্ছে। এক দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান আমি ১২ বছর যাবত প্রতিবার এ মেলায় দোকান বসাই। যদিও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এগুলোর কদর কমে যাচ্ছে। আগের মত লাভ হয় না।

ছোটদের মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস যেমন মাটির তৈরি পুতুল, হাড়ি পাতিল, কলসি ইত্যাদি মেলাতে পাওয়া যায়। এছাড়া সোলার তৈরি নানা জিনিস পাওয়া যায় মেলাতে যা মেয়েদের মন কারে।

রয়েছে ঐতিহাসিক পানাম নগরী। পানাম নগর পৃথিবীর ১০০টি ধ্বংসপ্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি। ২০০৬ সালে পানাম নগরকে বিশ্বের ধ্বংসপ্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় প্রকাশ করে। ঈসা খাঁ এর আমলের … পানাম নগরী (Panam City) এর দুই ধারে ঔপনিবেশিক আমলের মোট ৫২টি স্থাপনা রয়েছে।

দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের পদচারণয় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় রয়েছে ১৭২টি স্টলে জামদানি, শীতল পাটি, বাঁশ-বেত শিল্প, মাটির তৈজসপত্রের পসরা সাজানো হয়েছে। মাসব্যাপী এ মেলায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে নকশীকাঁথা প্রদর্শনীর। ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তো আর দেরি না করে এখনি চলে আসুন মেলা উপভোগ করতে।

ভিডিও সংবাদটি দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-

https://www.youtube.com/watch?v=wqjcapSpZLg&feature=youtu.be

রিপোর্ট : আমাদের ঢাকারনিউজ২৪.কম এর সোনারগাঁ প্রতিনিধি সাইফুল খাঁন ও স্টাফ ফটো জার্নালিস্ট খাদিজা আক্তার ভাবনাকে সাথে নিয়ে ‘সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি’।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১০:২০এএম/৩০/১/২০১৯ইং)