• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

গোপালগঞ্জে বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদল নেতার চাকরি : প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড়


প্রকাশের সময় : জুন ২৫, ২০১৮, ৩:২০ PM / ৪১
গোপালগঞ্জে বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদল নেতার চাকরি : প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড়

ঢাকারনিউজ২৪.কম, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার এক ছাত্রদল নেতাকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রদলের সহ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলকে বশেমুবিপ্রবি-র আইন বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে জাতির জনকের নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-জামাত পন্থী একজন ছাত্র নেতার নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস এবং শহর জুড়ে বইতে শুরু করেছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সচেতন সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বিগত ২০১০ সালের ৬ নভেম্বর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু ও সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আমির স্বাক্ষরিত ছাত্রদল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির তালিকায় মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। ওই ছাত্রদল নেতা  বশেমুরবিপ্রবি-র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান সহকারী অধ্যাপক ও ইবি-র ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের সাবেক ছাত্রদল নেত্রী ফাতেমা খাতুনের সম্পর্কে দেবর হন। ফলে তিনি তার দেবর সোহেলকে বশেমুরবিপ্রবি-র আইন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে দেনদরবার করে আসছিলেন।

এরআগে, বিগত ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে নয় জন প্রভাষক পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রভাষক পদে নিয়োগের ‘গ’ নং শর্তে উল্লেখ করা হয় শিক্ষা জীবনে প্রাপ্ত ডিগ্রীর কোন পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ বা ৩.০০ নীচে জিপিএ গ্রহনযোগ্য হবেনা। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের এসএসসি-তে প্রাপ্ত জিপিএ নম্বর ২.৬২ হওয়া সত্বেও চাকরির যোগ্যতার শর্ত ভঙ্গ করে নিয়োগের সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাখা হয় তার নাম। এছাড়া তিনি আবেদনপত্র পূরনের সময় প্রাপ্ত রেজাল্টের ঘরে এসএসসি দ্বিতীয় বিভাগ উল্লেখ করেন। যদিও তার এসএসসির রেজাল্ট প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে। তখন বিভাগ পদ্ধতি বাতিল হয়ে জিপিএ পদ্ধতি চালু হয়। ওই সময় এ বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ স্থগিত করে দেয়। তখন বশেমুরবিপ্রবি-র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে বড় অংকের  আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠে।
এ ব্যাপারে ফাতেমা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল সম্পর্কে আমার স্বামীর আপন ফুফাতো ভাই হন। সে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করেছে। সে ছাত্রদল নয়। ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল।

ঘটনাটি নিয়ে কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনের স্বামী মিজানুর রহমানও ইবি শাখা ছাত্রদলের পদধারী নেতা ছিলেন। এবং ফাতেমার ফুফাতো দেবর মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল ইবি শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে।
বশেমুরবিপ্রবি-র প্রক্টর মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-জামাতের কোন স্থান হতে পারে না। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে তা আসলেই ন্যাক্কার জনক বলে আমি মনে করি।
গোপালগঞ্জের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মী ও উদীচীর জেলা শাখার সভাপতি নাজমূল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটলে তা হবে খুবই দুঃখ জনক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-র রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। ভিসি-তার নিজস্ব ভাব আদর্শের লোকজনদের নিয়োগ দিয়ে পরোক্ষ ভাবে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে দূর্বল করে দিচ্ছেন। তিনি এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৩:১৮পিএম/২৫/৬/২০১৮ইং)