• ঢাকা
  • সোমবার, ১৭ Jun ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন

গুরুদাসপুরে ৫০ হাজার টাকায় শিশু মিথিলার মৃত্যু ধামাচাপা


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮, ১১:১৮ PM / ৯৩
গুরুদাসপুরে ৫০ হাজার টাকায় শিশু মিথিলার মৃত্যু ধামাচাপা

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের গুরুদাসপুরে শিঙ্গাড়া খেয়ে অসুস্থ হওয়া শিশু মিথিলার (৫) মৃত্যুর ঘটনা চেয়ারম্যানের চাপে ৫০ হাজার টাকায় ধামাচাপা দিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে।

জানা যায়, বুধবার উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.মনিরুল ইসলাম দোলনের হস্তক্ষেপে শিশু মিথিলার দাফন সম্পন্ন হয়। গত মঙ্গলবার খুবজীপুর ইউনিয়নের পিপলা গ্রামের নুর ইসলাম ওরফে শুকুর আলীর দুই সন্তান নাইম (৮) ও মিথিলা (৫) পাশের হাবিলের দোকানের শিঙ্গাড়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মিথিলা মারা যায়। অসুস্থ ভাই নাইম হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রবিউল করিম শান্ত খাদ্যে বিষক্রিয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

এদিকে মিথিলার মৃতুর পর খুবজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম শিঙ্গাড়া বিক্রেতা হাবিলের পক্ষ নিয়ে প্রভাবখাটিয়ে মিথিলার পরিবারকে চাপ দিয়ে লাশ দাফনে বাধ্য করেন। বিতর্কীত লাশ পোষ্টমর্টেম ছাড়াই দাফন করা হয়।

বৃহস্পতিবার পিপলা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মিথিলার লাশ দাফন করতে চেয়ারম্যান বাধ্য করে, এমনকি ৫০ হাজার টাকায় জোড়পুর্বক মিমাংসা হতে বাধ্য করেছে বলে স্থানীয়রা জানায়।

মিথিলার মা লাবনীী বেগম বিলাপের সুরেই জানালেন, ‘বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে এক টুকরো জায়গা কিনে বাড়ি করেছিলেন। কিনেছিলেন একটি গরু। কিছু দিন আগে সেই গরুটি মারা যায়। ঋনদাতাদের চাপে পড়ে মিথিলার নামে করা ডিপিএসটি ভেঙে দুইটি এনওজিওর টাকা শোধ করেছিলেন। তার পরও ঋণ শোধ হচ্ছিলনা। তাই বাধ্য দুই সন্তানকে তার দাদা আফজাল হোসেনের কাছে রেখে গত ঈদের পর ঢাকায় গিয়েছিলেন গার্মেন্টস কাজ করতে।

আফজাল হোসেনের বলেন, ছেলে বাড়ী থাকেনা, তিনিও খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। ঝামেলায় যেতে চাইনি। চেয়ারম্যান বললেন তাই থানায় অভিযোগ দেইনি। তাছাড়াও মামলা করলে পড়ে ঝামেলা হতে পারে।

মিথিলার বাবা শুকুর আলী বলেন, এমনিতেই ঋণগ্রস্থ তারা। তার ওপর মামলা করে গ্রামের বিরোধ সৃষ্টি করতে চাইনা। গরীব মানুষ, চেয়ারম্যান যা দিতে চেয়েছেন তার বাহিরে যাওয়া যাবেনা।

শিঙাড়া বিক্রেতা হাবিল হোসেন দাবি করেন, শিঙাড়া খেয়ে নয়, অন্য কারনে মিথিলার মৃত্যু হয়েছে। চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়েছে। তবে পরিবারটি গরিব হওয়ায় তার দোয়া মাহফিলের জন্য কিছু খরচ তিনি বহন করবেন।

চেয়ারম্যান মনিররুল ইসলাম দোলন বলেন, শিঙ্গাড়া খেয়েই শিশু মিথিলার মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ সঠিক নয়। তাই স্থানীয়ভাবে বিষয়টি আপোষ করা হয়েছে। তবে কী ভাবে কত টাকায় আপোস করা হয়েছে তা বলেননি চেয়ারম্যান।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা বলেন, থানায় অভিযোগ না পাওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১১:১৫পিএম/১৩/৯/২০১৮ইং)