গুরুদাসপুরে সংবাদ সম্মেলনে আ’লীগের অভিযোগ

শের মোহাম্মদ, গুরুদাসপুর (নাটোর) : নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের এমপি অধ্যাপক আব্দুল ক্দ্দুুস বিগত ইউপি নির্বাচনে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীদের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে তার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে নৌকা প্রতিককে হারিয়েছে। এমনকি তিনি উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে ধানের শীষ প্রতিকের পক্ষে ভোট দেওয়ার অভিযোগ করেন নেতৃবৃন্দ। নৌকার বিরুদ্ধে তার মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার ওই সকল এলাকার ভোটারদের তিনি স্যালুট দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন আওয়ীমীলীগ নেতারা।

আওয়ামীলীগ সংগঠনকে শক্তিশালী না করে ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষে নির্বাচন করেন। মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী মশিন্দা ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সভাপতি আখের উদ্দিনের নাতঅকে অর্থের বিনিময়ে ভুয়া কাগজ পত্র তৈরী করে নৌকা প্রতিক পাইয়ে দেন তিনি। বিএনপি ও জামায়াতের কিছু সুবিধাবাদীদের নিয়ে মাঠ সাজিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। একই কারণে তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতাকে পারজিত করিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা লিখিত বক্তব্য রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আলহাজ¦ আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলাল শেখ, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলালীগের সভাপতি শাহিদা আকতার মিতা, উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মিজানুর রহমান সুজা, ইমরান শাহ, বড়াইগ্রামের চান্দাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান জিন্নাহ, নাজিরপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী, পৌর যুবলীগ সভাপতি তাহের সোনার, সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান মিলন, ছাত্রলীগ সভাপতি সম সেলিম প্রমূখসহ গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জানায়, আব্দুল কুদ্দুস এমপি বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুরের বিভিন্ন ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত প্রভাব ও সাংসদের ক্ষমতা খাটিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে জাল ব্যালট ঢুকিয়ে বড়াইগ্রামের নৌকা প্রতীকের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে বিজয়ী হওয়ার সুযোগ করে দেন। গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে উপজেলা বিএনপি,র সহ-সভাপতি আয়নাল হক তালুকদারের পক্ষে তার সমর্থীতদের নিয়ে নির্বাচন করেন। এতে বিএনপি প্রার্থীর কাছে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে যান আওয়ামীলীগ প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী। একই ভাবে জেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য-জনসংখ্যা সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে দলীয় নৌকা প্রতিক পেলে এমপি আব্দুল কুদ্দুস ওই নৌকাকে ভেন্না কাঠের নৌকা আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কিন্তু ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জয়ী হন। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী নৌকা প্রতীক দিলেও এসব প্রার্থীরা এমপি কুদ্দুসকে চাহিদামত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তার এসব অপকর্ম রুখতে দুই উপজেলাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করে আগামী সংসদ নির্বাচনে আব্দুল কুদ্দুস এমপিকে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার দাবী জানান আ’লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।

তবে এসব বিষয়ে বার বার মোবাইল ফোনে রিং দিলে অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি ফোন রিসিভ করেননি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৭:০০পিএম/১২/৪/২০১৮ইং)