• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা


প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৫, ২০২২, ১১:০৯ PM / ৫০
কুড়িগ্রামে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা

কুড়িগ্রাম(উলিপুর) প্রতিনিধি : কুুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অপরাধে অবশেষে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা ।
মামলা দায়েরের খবরে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।

উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালান সরকারি কমিশনার (ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমান। তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে গিয়ে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক ও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল আটক করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের
কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ পারভেজ নুর আলম ২০১০ সালের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ১৫(১) ধারায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হচ্ছে, মাইদুল ইসলাম, জিয়া মিয়া ও বাবু মিয়া। সকলের সাং হাতিয়া ভবেশ।

জানাগেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ার গ্রাম ঘাট এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাইদুল ইসলাম, জিয়া ও বাবুসহ ৫-৬ জনের একটি সিন্ডিকেট বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সেখানে একটি অবৈধ বালু মহাল গড়ে তোলে। অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেট বাহিনীর বেপরোয়া তৎপরতা ও অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে, ওই এলাকায় নদী তীরবর্তী বেশ কিছু ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও ব্রহ্মপুত্রের তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ে।

অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করে প্রতিকার দাবি করেন। এরপরই অভিযানে নামেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) উলিপুর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেট সদস্যরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োজিত ঠিকাদার গুনবাবুর চলমান তীর রক্ষা কাজকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক বালু জেলা ও জেলার বাইরে নির্বিঘ্নে বিক্রি করে আসছিল। তারা প্রচার করত এ-সব বালু সদর উপজেলার মোগল বাসা এলাকার পাউবো’র একটি তীর রক্ষা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
“পানি উন্নয়ন বোর্ডের বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর” কম্পিউটারে লেখা এমন স্টিকার ব্যবহার করে কয়েকটি ট্রাক্টর অবৈধ বালু পরিবহন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ।
এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, এ সব অবৈধ কর্মকান্ডে সহযোগিতা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত প্রকৌশলী ও কর্মচারীরা। শুধু তাই নয়, এসব বালু কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস করতেই স্থানীয় দোকানদার, আশপাশের লোকজন এবং পাথর ভাঙ্গা শ্রমিকরাও সিন্ডিকেট বাহিনীর সদস্যদের শেখানো মতে বালু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্য একটি সাইটে যাচ্ছে বলে দাবি করত।

এদিকে, এসব অবৈধ বালু দিবারাত্রি ট্রাকযোগে পরিবহনের কারণে স্থানীয় পাকা রাস্তা গুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামীন এসব পাকা সড়ক দিয়ে অটোসহ যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ছোট ছোট যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে,তিনি মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সহকারী কমিশনার ( ভূমি) উলিপুর কাজী মাহমুদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন , অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং যেকোনো মূল্যে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।