• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:১৩ অপরাহ্ন

ওল কচু মান-চড় থাপ্পড় সমাচার


প্রকাশের সময় : জুন ৩, ২০১৮, ৩:১২ PM / ৪৮
ওল কচু মান-চড় থাপ্পড় সমাচার

মোঃ রেজাউন্নবী রেনু : চড় কি ? চড় অর্থ চপেটাঘাত, চড় কিন্তু অনেক প্রকার। মায়ের হাতের চড় একজিনিস, আর স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকার চড় আরেক জিনিস। জনপ্রতিনিধির চপেটাঘাত আর এক জিনিস। ছাত্র-যুব প্রতিনিধি যুব নেতার চড়ের স্বাদ আলাদা। কিন্তু প্রেম নিবেদনের পর প্রেমিকার হাতের চড়  অতিমিষ্টি। স্বামীর হাতের চড় যে এক বারেই তা নয়, তা বাঙ্গালী নারীর আমেরিকার নারী যে কমজানে তা নয়।

কিন্তু কিছু চড়ের স্মৃতি বাঙ্গালী পুরুষ আমৃত্যু ভুলতে পারেনা। কোন নির্জন স্থানে, রাস্তার মোড়ে কোনো তরুনীকে একাকী পেয়ে অজাতীত প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে যুবতীর হাতে চপেটাঘাত কাক পক্ষিটি না দেখলেও বা লোক চক্ষুর সামনে দেখলেও তার ব্যাথাটা যতটা নয়, সে চড়ের জ্বালা তুষের আগুনের মত বুকে জ্বলতে থাকে। গণতন্ত্রে যেমন অনেক সুচক আছে, চড়ের ক্ষেত্রে ও সে রকম।

মধুর চড়ও আছে। বিশেষ মুহুর্তে দুষ্টু কোথাকার বলে প্রেমিকা যখন ছেলেটির গালে চড় দেয়, সে বড়ই মিষ্টি। চড় সাধারণত গালেই দেওয়া, তা সে চড় প্রেমিকার হোক যা কোন মাননীয় নেতার হাতেরই হোক। বাঙ্গালী চড় থাপ্পড়কে খুব গুরুত্ব দেয়। কারো উপর রেগে গেলে বলে ‘‘এক চড় মেরে দাঁত ভেঙ্গে দেব”। তবে চড় খেয়ে দাঁত খোয়া গেছে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। কিন্তু কানের বারোটা বেজেছে অনেকেরই। স্কুলে মারধর উঠে গেছে তবুও দেখা গেছে এক শিক্ষক ছাত্রকে চড় মেরেছে সে ছেলেটার কানে শোনে এখন শো শো শব্দ অন্য কোন শব্দ নয়।

“কিন্তু চড়ের স্মৃতি বাঙ্গালী পুরুষরা আমৃত্যু ভূলতে পারেনা। কোন নির্জন স্থানে বা রাস্তার মোড়ে তরুনীকে একা পেয়ে অযাচিত প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে যুবতীর হাতের চপেটাঘাত কাক পক্ষীটি না দেখলেও বা জন সাধারন দেখলেও তার মাথা ব্যাথা যতটা নয়, সে চড়ের জ্বালা তুষের আগুনের মত বুকে জ্বলতে থাকে।”

তিনি একজন শিক্ষিকা/শিক্ষক/ যিনি চড় থাপ্পড় মারলে তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। বঙ্গসমাজে চড় থাপ্পড় নেই কোথায়? অফিস আদালত বাসষ্টান্ড, রাস্তাঘাটের মোড়ে, রেলষ্টেশনে, লঞ্চটার্মিনালে, হাসপাতালে, নির্বাচন কেন্দ্রে, হাটবাজারে সর্বত্র আছে এই চড় থাপ্পড়। এইতো হিজরী রমজান সংযমের মাস। ইফতার পার্টির আয়োজনে কথা কাটাকাটি, হাতাহাতি, ও চড় থাপ্পড়ের ভেতরদিয়ে সমাপ্তি ঘটে। কোথায় শরবতের গ্লাস, আর কোথায় ছোলা, পিয়াজি, শসা, বেগুনি? বিভিন্ন অযুহাতে হাসপাতালে অহরহ ঘটছে চড় থাপ্পড়ের প্রতিযোগিতা।

বাংলার মাটিতে সবচাইতে চড় থাপ্পড় চলে নির্বাচনের সময়। দলের বিদ্রোহীদের মধ্যে এবং প্রতিপক্ষের নেতা ক্যাড়াদের মধ্যে তবে মানব জীবনের যতরকম নিষ্ঠুর কর্ম আছে, তারমধ্যে সবচেয়ে কর্মমাত্রার নিষ্ঠুরতা চড় থাপ্পড় আগ্নেয় অস্ত্রের চেয়ে হাতের তালু অনেক নিরাপদ। বাঙ্গালী আজন্ম চড় থাপ্পড়ে এতটাই অভ্যস্ত যে কোন দিন যদি বিনোদনের জন্য চড় থাপ্পড় প্রতিযোগীতা চালু হয়। (অনুকরন প্রিয় বাঙ্গালী তো করবেই) বঙ্গীয় চড়থাপ্পড় প্রতিযোগীতা কারিদের প্রশিক্ষন দেওয়ারজন্য নবদেশী কোচের প্রয়োজন হবেনা। বরং চাইলে এদেশ থেকে চড় থাপ্পড়ের কোচ ভাড়া নিতে পারে। একটি সভ্য সমাজে, যেখানে সেখানে অফিস আদালতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চড় থাপ্পড়ের দৃশ্য অতিশয় লজ্জার। পারিবারিক ও সমাজ জীবনে চড় থাপ্পড় থাকাটা সুখকর নয়। মায়ের হাতের চড় থাপ্পড় ছাড়া অন্য কোন হাতের চড় থাপ্পড় নিষিদ্ধ হওয়া একান্ত বাঞ্চনীয়।

লেখক- বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাউন্নবী রেনু
(সাংবাদিক ও কলামিস্ট)

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৩:০৫পিএম/৩/৬/২০১৮ইং)