• ঢাকা
  • বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশের সময় : মে ১৭, ২০১৮, ১০:১৭ AM / ৪৫
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : বীর মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল ১৬ মে(বুধবার) তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে গুণী এ শিল্পীর বাসায় গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, ‘আমার অসুস্থার বিষয়টি সরকারের দায়িত্বশীল কেউ হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রতিনিধি দল আমার ও আমার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে আসেন আজকে (বুধবার) সন্ধ্যায়। সে সময় তারা জানান, আমার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

এর আগে নিজের অসুস্থতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুলবুল চারদিন ভর্তি ছিলেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। তার হার্টে ইতোমধ্যে আটটি ব্লক ধরা পড়েছে। বাইপাস ছাড়া এ চিকিৎসা সম্ভব নয়।

ফেসবুকের ওই পোস্টে বুলবুল লিখেন, ‘‘সরকারের নির্দেশেই ২০১২তে আমাকে যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) কাঠগড়ায় সাক্ষী হিসাবে দাঁড়াতে হয়েছিল। সাহসিকতার সঙ্গে সাক্ষ্যপ্রমাণ দিতে হয়েছিল ১৯৭১-এ ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানার গণহত্যার সম্পূর্ণ ইতিহাস। আর ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে আমিও একজন। হত্যা করা হয়েছিল একসঙ্গে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে।

কিন্তু এই সাক্ষীর কারণে আমার নিরপরাধ ছোট ভাই ‘মিরাজ’ হত্যা হয়ে যাবে-এ আমি কখনোই বিশ্বাস করতে পারিনি। সরকারের কাছে বিচার চেয়েছি, বিচার পাইনি।’

গৃহবন্দী হয়ে আছেন দাবি করে নিজ স্ট্যাটাসে বুলবুল লিখেন, ‘আমি এখন ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারায় গৃহবন্দী থাকি একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব করুণ অধ্যায়। একটি ঘরে ছয় বছর গৃহবন্দী থাকতে থাকতে আমি আজ উল্লেখযোগ্যভাবে অসুস্থ। আমার হার্টে আটটা ব্লক ধরা পড়েছে এবং বাইপাস সার্জারি ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব না।’

বুলবুল জানান, বাইপাস সার্জারি করার জন্য মানসিকভাবে তিনি প্রস্তুত আছেন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে যেকোনো সময় এ সার্জারি করানো হতে পারে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন ও চিকিৎসার জন্য তার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, বন্ধু-বান্ধব বা শিল্পী সমাজের সাহায্যের প্রয়োজন নেই বলেও জানান।

গুণী এই শিল্পী জানান, তিনি নিজেই চিকিৎসা চালাতে সক্ষম। তবে অস্ত্রোপচার শুরুর আগে কিছুক্ষণের জন্য তিনি বাংলাদেশের পতাকা ও কুরআন শরিফ বুকের মধ্যে রাখতে চান।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭০ দশকের শেষলগ্ন থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সংগীত শিল্পে সক্রিয় রয়েছেন। ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বতন্ত্রভাবে তিনি অসংখ্য গানের অ্যালবামের কাজ ও চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদী, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনক চাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় শিল্পীকে নিয়ে কাজ করেছেন বুলবুল।

‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘তুমি আমার জীবন’, ‘আমি তোমার জীবন’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের গীতিকার ও সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:১৫এএম/১৭/৫/২০১৮ইং)