• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন

আন্দোলন ও আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত বিএনপি’র


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৮, ২০১৮, ৮:৪৬ AM / ৬৭
আন্দোলন ও আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত বিএনপি’র

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসন্ন রায়কে কেন্দ্র করে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যদি এ মামলার রায়ে ৮ ফেব্রুয়ারির ‘সুবিচার‘ না পায় তাহলে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে নামতে চায় দলটি।

শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, জরুরী পরামর্শ ও দিকনির্দেশনার জন্য দীর্ঘ কয়েক বছর পর ডাকা হচ্ছে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শুরুতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ ২০১১ সালে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দলের ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর গঠিত নতুন কমিটি এখন পর্যন্ত বৈঠকে বসেনি বলে জানা গেছে।

এদিকে রোববার ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন জোট বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া ১ ফেব্রুয়ারি আবারো স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে দলের একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আজকে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আবারো আমরা বৈঠকে বসবো। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ নেতা চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার জন্য খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দেন। তারা বলেন, সরকারকে আর সুযোগ দেয়া যাবে না।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকে সর্বস্তরের কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ নিয়ে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবেন দলীয় প্রধান। এটা নির্বাচনের বছর। নেতাকর্মীরা ডাক পেলে রাস্তায় নেমে আসবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গোটা জাতি আজকে উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ। আমরা মনে করি, এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এবং সকলের অংশগ্রহণে ইনক্লুসিভ ইলেকশন নষ্ট করার জন্য এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটির আজকের সভা থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক ‍উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা দিয়ে সরকারের আইন-আদালতের নিয়মনীতির বিরুদ্ধ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারের নামে সরকারি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান জানাচ্ছি।’

কোনো কর্মসূচিগ্রহণ করা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা জানাবো রায় ঘোষণা হবার পরে। পুরো বিষয়টা আমরা আবার জানাবো রায় ঘোষণা হলেই।’

গত ২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ আদালতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্তি করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘আমাদের উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, রহস্যজনক। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রীকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণা সেই অপচেষ্টার অংশ বলেই দেশবাসী মনে করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সরকার প্রধান থেকে শুরু করে গত কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রীগণ এবং বিশেষ দূত এই মামলার রায় এবং তার সম্ভব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে সরকার ও সরকারি দলের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা যে ভাষায় বলে চলেছেন তাতে প্রমাণিত হয়- মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও তার রায় কি হবে তা সরকার ও সরকারি দলের জানা আছে বলেই মনে হয়।’

‘জ্বাল-জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন ও বিরোধী পক্ষ থেকে দমন করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করার আরেকটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। সেক্ষেত্রে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়বেন।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৮:৪৫এএম/২৮/১/২০১৮ইং)