ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার উদ্দেশ্যে জি টু জি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে ৩ লাখ টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই গম কিনতে খরচ হবে এক হাজার ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এতে প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে ৩৪ টাকা ৪৩ পয়সা।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এই গম কিনতে অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাশিয়া থেকে জি টু জি পদ্ধতিতে ৩ লাখ টন গম এক হাজার ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকায় আমাদনির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে ৩৪ টাকা ৪৩ পয়সা।’
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য সংগ্রহ সুসংহত রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ উৎসের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকেও গম সংগ্রহ করে থাকে। চলতি অর্থবছরে গমের চাহিদা সরকারি পর্যায়ে ৯ লাখ ২২ হাজার টন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এখন পর্যন্ত গম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এক লাখ টন গম সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান।
সূত্র জানিয়েছে, গম আমদানির প্রধান উৎস রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারত। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গম আমদানিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে দামও বেড়ে যায়। আবার ভারত সরকার গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় গমের বাজার নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ কারণে সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার পাশাপাশি গমের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অতি জরুরি ভিত্তিতে রাশিয়া থেকে ৩ লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নেয় সরকার। গত ১৯ জুন রাশিয়ার ফরেন ইকোনমিক করপোরশন (এফইসি) গম সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দেয়।
সেই চিঠি পর্যালোচনা করে দেশের চাহিদা বিবেচনায় এফইসির সঙ্গে ১৭ আগস্ট ভার্চুয়াল সভায় জি টু জি পদ্ধতিতে গম আমদানির চুক্তিনামা এবং মূল্য নিয়ে আলোচনা ও নেগোশিয়েশন শেষে রাশিয়া থেকে প্রতি টন সিআইএফ-এলও টার্মে ৩১৩ মার্কিন ডলার দরে ৩ লাখ টন গম আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা হয়। উভয় পক্ষ সভার সিদ্ধান্তপত্রে সই করে।
জানা গেছে, রাশিয়ার প্রতিনিধিদল লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার তারিখ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ৩ লাখ টন গম সরবরাহে সম্মত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ১৫ দিন পর পর ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিটি জাহাজে গম সরবরাহ করবে রাশিয়া।
আপনার মতামত লিখুন :