• ঢাকা
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির সংবাদ সম্মেলন


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ৮:৫৪ PM / ৩২৬
বাংলাদেশ পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) আওতাধীন বন্ধ ঘোষিত ২৬টি পাটকলের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি পাটকল সরকারি ভাবে পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ী সমিতি। আজ ১১ সেপ্টেম্বর’২৩ সোমবার সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, গত ১লা জুলাই ২০২০ সালে একটি নোটিশের মাধ্যমে বিজেএমসি’র অধীন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকল বন্ধ করা হয়। শ্রমিকরা কলোনী ছেড়ে যার যার অবস্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়। বন্ধ হয়ে যায় ছাত্র—ছাত্রীদের স্কুল—কলেজ পড়া—লেখা। কথাছিল “লে—অফ করবেন” অর্থাৎ সাময়িক বন্ধ হয়ে ৩ মাস পরে আবার নতুন করে মিল চালু হবে। কিন্তু আজ প্রায় সাড়ে ৩ বছর পার হলেও এখনও কোন মিল চালু হয় নাই। সরকার বিভিন্ন ভাবে ব্যক্তি মালিকানায় (লীজ) দিয়ে চালাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। কিছু কিছু মিল লিজ নিয়েও উৎপাদন করছেন না। অনেক মিলেই এখন পর্যন্ত লিজ দিতে পারে নাই। ফলে মিলগুলোর মেশিন পত্র মরিচা পরে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। অথচ এখনও মিলের কর্মকর্তা—কর্মচারী বহাল আছেন। এমনকি কোন কাজ না করেও সাড়ে তিন বছর যাবৎ বিজেএমসি’র প্রধান কার্যালয় সহ ২৬টি জুট মিলের প্রায় তিনশত কর্মকর্তা—কর্মচারী প্রতি মাসে বেতন নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমরা আরো মনে করি যে, বর্তমান অবস্থায় মিলগুলি লোকসানের সম্ভাবনাই নাই। কারণ মিলে এখন কোন স্থায়ী শ্রমিক নাই। শ্রমিক সংগঠনেরও কোন কার্য তৎপরতা নেই। মিলের কর্মকর্তা—কর্মচারীগণও অত্যন্ত সতর্ক। চাকুরী হারানোর আতঙ্কে আছেন। ফলে মিলের পরিবেশ অত্যান্ত শান্ত, নিরাপদ ও উৎপাদন সহযোগী। এমতাবস্থায় যদি কিছু মিল অর্থাৎ ৩টি এলাকায় (জোন) হইতে ১০টি মিল চালু করা হতো তাহলে মিল এলাকায় আবার কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে আসতো। উৎপাদন হওয়ার কারণে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে পাটের ন্যায্যমূল্য পাট চাষিরা ফেরত পেতো। মিলের উৎপাদনের কারণে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা তাদের প্রয়োজন মোতাবেক পাটের উৎপাদিত পণ্য ফিরে পেত। পরিবেশ পলিথিন মুক্ত হয়ে যেত। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগণ তাদের পুরোনো পেশায় ফিরে আত্মনিয়োগ করতে পারতেন। সকলেরই সংসার ধর্ম নিয়ে জীবন যাপন করে ভবিষ্যৎ বংশধরদের লেখা—পড়া চালিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় সহযোগী হতে পারতো। তাছাড়া উৎপাদিত পাট পণ্য বিদেশে রপ্তানী করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের উন্নয়নে সার্থক ভূমিকা রাখতে সম্ভব হতো। এ জন্য দরকার শুধুমাত্র সরকারি উদ্যেগে মিল চালু করার একটি ঘোষণা। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সঠিক সমাধান করা।

বাংলাদেশ পাট চাষী ও পাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ হাসান আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্র বাংলাদেশ। জুন—জুলাই মাসে প্রচন্ড খরার মধ্যে বিস্তৃত সবুজ পাট গাছ বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, অবিলম্বে ১০টি পাটকল সরকারি ভাবে না খুললে পাটের বাজারে ধস নামবে। এই সোনালী আঁশ কৃষকের হবে গলার ফাঁস। যে পাট ৫ হাজার টাকা মণ ছিল বর্তমান বাজারে ১৫০০—২৫০০ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়া।

সংবাদ সম্মলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মালেক ভূঁইয়া, মুজিব হোসেন চৌধুরী, নাদেম দত্ত, মো. মারফত, এনামুল হক বাবুল প্রমুখ।