ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থান হানাদার বাহিনীর হাতে নিগৃহীত ঝিনাইদহের দুই নারীকে বীরঙ্গনা স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। স্বীকৃতিপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগর এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা জয়গুন নেছা ও কালিগঞ্জ উপজেলার মোল্লাকোয়া গ্রামের ফাতেমা বেগম। এই দুই নারী ছাড়াও নির্যাতিত আরো ১০ নারীকে বীরাঙ্গনা উপাধী দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট জারি করেছে সরকার। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনার সংখ্যা দাড়ালো ২৭১ জন। ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চননগর পাড়ার বাসিন্দা বীরাঙ্গনা জয়গুন নেছা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বামী হাবিবুর রহমান ও সতিনের মেয়ে হাসিনা খাতুনকে হারিয়েছেন তিনি। পাক সেনারা তাদের ধরে নিয়ে গিয়ে আর ফেরৎ দেয়নি। নিজের উপর পাক বাহিনীর পাশবিক নির্যাতন ও বর্বরতার কথা মনে হলে এখনো গাঁ শিউরে ওঠে তার। শরীরে দগদগে সেই ভয়াল স্মৃতি চিহ্ন বয়ে বেড়িয়েছেন। স্বাধীনতার এতো বছর পরও তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বৃদ্ধ বয়সে সার্টিফিকেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ঘুরেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। বিভিন্ন সময় ছুটেছেন এ অফিস থেকে সে অফিস। জয়গুন নেছা বলেন, অবশেষে তিনি ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে যান এবং সাংবাদিক আসিফ ইকবাল কাজলের স্মরনাপন্ন হন। তিনিই বিষয়টি নিজের ফেসবুক ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করেন। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ঝিনাইদহ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল থেকে তার কাগজ পাঠানো হয় ঢাকায়। অবশেষে এ বছর সরকার তার স্বীকৃতি প্রদাণ করছেনে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কারণেই তিনি আজ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সম্মান পেয়েছেন। অপর বীরাঙ্গনা ফাতেমা বেগম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার বানুড়িয়া গ্রাম থেকে পিতার বাড়ি যশোরের চৌগাছা উপজেলার চন্ডিপাড়া গ্রামে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে কালীগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর এলাকা থেকে পাক-হানাদার বাহিনীরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকদিন আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালায়। সেখান থেকে ফিরে আসলেও স্বামী সিরাজুল তাকে গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাকোয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী তাকে বিয়ে করেন। দীর্ঘদিন পর মুক্তিযোদ্ধ ও বীরঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/১১:৪৮পিএম/১৬/২/২০১৯ইং)
আপনার মতামত লিখুন :