• ঢাকা
  • সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন

কোটালীপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্ধকৃত বাড়ী নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম


প্রকাশের সময় : জুলাই ২৩, ২০১৯, ৮:৩৫ PM / ৭৬
কোটালীপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্ধকৃত বাড়ী নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম

এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নিজের জীবন বাজি রেখে এ দেশকে স্বাধীন করেছিল যে সকল বীর বাঙ্গালী তাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের কন্যা, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দু:স্থ ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় হতে কিছু বাড়ী বরাদ্ধ করেন। এরই অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৫ জন অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ী নির্মানের প্রকল্প আসে।
কোটালীপাড়া উপজেলায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে তিন মাসের মধ্যে বাড়ী নির্মাণ করার কথা থাকলে ও সে বাড়ী নির্মান কাজ সম্পূর্ণ করতে সময় লেগে গেছে প্রায় দেড় বছর। নাম মাত্র টেন্ডারের মাধ্যমে ১৯-০৩-২০১৮ইং তারিখে কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশিষ বাগচী ঠিকাদার সৈয়দ জিয়াউল হককে কাজটি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। ১৮-০৬-২০১৮ইং তারিখে ৩ মাসের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৬ মাসের মধ্যে কাজটির ১০% কাজও শেষ হয়নি। অথচ ৩ মাস পরে ঠিকাদার ১৮-০৬-২০১৮ইং তারিখে কাজ সম্পূর্ণ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় ঠিকাদারের কাছ থেকে পে-অর্ডারটি তুলে নেয় উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশিষ বাগচী।
পরবর্তীতে ১০০% কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে বরাদ্ধকৃত অর্থ উত্তোলন করেন কোটালীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশিষ বাগচী। এরপরে নিজ দায়িত্বে কাজ সমাপ্ত করে দেবে বলে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্বাস দেয়। দায়িত্ব নেওয়ার ১ বছর পরেও কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ দেয় ওই সকল মুক্তিযোদ্ধারা।
অভিযোগ পেয়ে গোপালগঞ্জ থেকে একদল সংবাদকর্মী সরেজমিনে গিয়ে পুর্ণবর্তী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন, বানিয়ারি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রসিদ তালুকদার, বলুহার গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাদেব, সোনা টিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা উকিল শেখ ও রামশীল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা খগেন তালুকদারের বাড়ীর কাজ পরির্দশন করে।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেনর নিকট জানতে চাইলে তিনি কেঁদে কেঁদে সাংবাদিকদেও বলেন, আমরা তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে একটি ঘর দিয়েছে। ৩ মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা থাকলেও দেড় বছরেও আমার ঘরটির কাজ শেষ হয়নি অথচ দ্রুত কাজটি শেষ করে দিবে বলে আমার কাছ থেকে ২৫০০০ টাকা নেয় এরপরেও কাজটি শেষ হয়নি। বাবা আমার বয়স প্রায় শেষ জানিনা আমি এ ঘরে শুয়ে যেতে পারবো কি ? বাবা তোমাদের মাধ্যমে আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন করছি নেত্রী যেন বলে দেয় যাতে আমাদের ঘরের কাজটি দ্রুত শেষ করে দেয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশিষ বাগচীর সাক্ষাৎকার নিতে চেয়ে ফোন করলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রেখে অফিসে আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং এই প্রকল্পের বিষয়ে কোনো বক্তব্যই তিনি দেননি।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে ফজলুল হকের কাছে জানতে চাইলে, তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চেয়ে সাংবাদিকদের অনুরোধ করে বলেন, প্লিজ অফ দ্যা রেকর্ড । তিনি বলেন , ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অপারগতা প্রকাশ করায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাড়ী পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পে-অর্ডার নিয়ে আমরা নিজেরা তত্বাবাধনে কাজটি করছি।
উল্লেখ্য সাংবাদিকদের টিম ওই এলাকায় যাওয়ার কারনে তরিঘড়ি করে মুক্তিযোদ্ধাদেও বাড়ী নির্মানে হাত দেয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/৮:৩৭পিএম/২৩/৭/২০১৯ইং)