বাড়ি নির্মাণে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)। সংস্থাটি এ ছাড়া ঋণের সুদের হার কমাবে এবং প্রথমবারের মতো বাড়ি নির্মাণে কৃষকদের ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঋণ দেবে।
ঋণের সীমা ও আওতা বৃদ্ধি এবং সুদের হার কমানোর জন্য বিএইচবিএফসির গত ফেব্রুয়ারির এ প্রস্তাব সম্প্রতি অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এখনো চিঠি পাইনি। আশা করছি, এ সপ্তাহের মধ্যে পেয়ে যাব।’ চিঠি পাওয়ার পর বিএইচবিএফসি পর্ষদ নতুন করে একটি নীতিমালা করবে, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে বলে জানান দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী।
বিএইচবিএফসি অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, বাজার চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ঋণের সীমা বৃদ্ধি, সুদের হার কমানো এবং নতুন পাঁচটি ঋণপণ্য চালু করা দরকার। বর্তমানে যেসব ঋণ দেওয়া হয়, নামকরণের দিক থেকেও সেগুলো সেকেলে। বিদ্যমান পরিস্থিতি দিয়ে ‘সবার জন্য আবাসন’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
বিএইচবিএফসিতে বর্তমানে সাধারণ, গ্রুপ, ফ্ল্যাট, বর্ধিত, ২০ বছর মেয়াদি মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত, পাঁচ বছর মেয়াদি বিশেষ এবং সেমিপাকা, এমন সাত ধরনের ঋণ চালু আছে। এখন বাড়ি নির্মাণে একক, গ্রুপ এবং ফ্ল্যাট কেনা—এই তিন ধরনের ঋণ কর্মসূচি চালু হবে।
পাশাপাশি নতুন ঋণ কর্মসূচি চালু করা হবে অনাবাসী বাংলাদেশি, পল্লি জনগণ ও কৃষকের আবাসন এবং আবাসন উন্নয়ন ও আবাসন মেরামত ঋণ কর্মসূচি—এই পাঁচ ধরনের।
এককভাবে বাড়ি নির্মাণে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন এলাকার অতি উন্নত এলাকায় বর্তমানের ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি টাকা, দুই মহানগরীর অন্যান্য উন্নত এলাকায় ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৮০ লাখ এবং টঙ্গী, সাভারসহ দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শহরে ৪০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
গ্রুপ বা দলগতভাবে বাড়ি নির্মাণে ঋণের সীমা দুই মহানগরীর অতি উন্নত এলাকায় গ্রুপের প্রত্যেকের জন্য বর্তমানের ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬০ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগের মতোই দুই মহানগরীর অন্যান্য উন্নত এলাকায় ৫০ লাখ এবং টঙ্গী, সাভারসহ বিভাগীয়-জেলা পর্যায়ে ৪০ লাখ টাকা রাখা হবে।
ফ্ল্যাট কেনার জন্য আগে সব এলাকার জন্যই সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হতো। এখন দেওয়া হবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের অতি উন্নত এবং অন্যান্য উন্নত এলাকার জন্য ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়া টঙ্গী, সাভারসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে ফ্ল্যাট কিনতে দেওয়া হবে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ।
সুদের হার বাড়ি নির্মাণে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, ফ্ল্যাট কেনায় ১০ শতাংশ এবং টঙ্গী, সাভারসহ সব বিভাগীয় শহরে বাড়ি নির্মাণে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ করা হবে।
আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের প্রথম সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভুঁইয়া বিএইচবিএফসি তথা সরকারের নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দেরিতে হলেও সিদ্ধান্তটি এসেছে, যা একদিকে দেশের আবাসন খাতকে চাঙা করবে, অন্যদিকে উপকৃত হবেন গ্রাহকেরা।
![scriptForHost](http://www.dhakarnews24.com/wp-content/uploads/2022/10/250736330_317230573153387_7122495033757131903_n.png)
আপনার মতামত লিখুন :