• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৫১ অপরাহ্ন

৫ গুণ বেতন বাড়ছে সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের


প্রকাশের সময় : মার্চ ৩১, ২০১৭, ১১:৪২ AM / ৪৯
৫ গুণ বেতন বাড়ছে সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

সরকারি উচ্চমাধ্যমিক কলেজ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ৫ গুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। আলোচনার মাঝখানে কিছু কিছু কথা বলার পর সবার শেষে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী, তবে সব বিষয়ে জবাব দেননি।
অর্থমন্ত্রী জানান, ‘যেসব সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ও টিউশন ফি ১২ থেকে ২০ টাকার মধ্যে, সেগুলো বাড়িয়ে আগামী বাজেটে ৫ গুণ করা হবে। দেখি কী প্রতিক্রিয়া হয়।’
বড়লোকের ছেলেমেয়েদের কেন কম টাকায় পড়াচ্ছেন—বেসরকারি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্ণধার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণাটি দেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ইন্টার্নি ডাক্তারদের গ্রামে অন্তত এক বছর কাজ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ এবং পাঁচ হাজার সরকারি ডাক্তারকে গ্রামে থাকার আরও প্রণোদনা দেওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, এতে মাত্র ৯০ কোটি টাকা খরচ হবে।
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পরামর্শটা ভালো। এটা করা যায়, টাকাও কোনো সমস্যা নয়। যদিও মূল ব্যাপারটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী তখন অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি মনে করিয়ে দিলেই কাজটি হয়ে যাবে।’
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) নামে চলমান প্রতারণা বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, আইসিইউর ভাড়া ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়েও বেশি। অজুহাত আসতে পারে যে চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানিতে ৬০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এ শুল্ক কমিয়ে দেওয়া যায়।
আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ৪ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
এনজিও প্রতিনিধিরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) সামনে রেখে আগামী বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দেন। তাঁরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বস্তি ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী ইত্যাদি খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান। পাশাপাশি স্কুল ফিডিং কর্মসূচি, দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিশেষ বরাদ্দ, তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিজ্ঞ করার ব্যাপারে নজর দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের আগেই বাংলাদেশ এসডিজি অর্জন করতে পারবে। এ জন্য জেলা পরিষদগুলোকে কাজে লাগানোসহ স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার তাগিদবোধ করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী আগামী বাজেটে স্থানীয় সরকার খাতে বরাদ্দ বাড়াবেন বলেও জানান।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী আগামী বাজেটে মোট জাতীয় বাজেটের ১৮ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা এবং শিক্ষা গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে দেশে ১১ হাজার জরাজীর্ণ বিদ্যালয় রয়েছে। দেশে এখন অনেক ক্যান্টনমেন্ট করার কথা হচ্ছে। অথচ বেশি দরকার জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো ঠিক করা।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম দেশে একটি শিশু অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, দলিত, হিজড়া, বেদেসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও অর্থ ঠিকমতো খরচ হচ্ছে কি না তদারকির ব্যবস্থা নেই।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু নাসের খান বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অথচ তাদের কাজ হওয়া উচিত অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মূল্যায়ন করা। তিনি জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় বেভারেজ ও ফাস্ট ফুড পণ্যের ওপর বেশি করে আরোপের দাবি জানান।
সবার আলোচনা শেষ হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসডিজি নিয়ে বেশ কাজ চলছে। এসডিজি সমন্বয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী একজনকে (আবুল কালাম আজাদ) দায়িত্ব দিয়েছেন। দেশে যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং আর কোনো নতুন রাস্তার আপাতত দরকার নেই বলে জানান অর্থমন্ত্রী। বলেন, তিনি শুধু পুরোনো রাস্তার সংস্কারের পক্ষে।
আগামী দুই বছর পর দেশে বিড়ির কোনো অস্তিত্ব থাকবে না বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সিগারেটটা তুলে দিতে পারব না। এটা বিশ্বের সব দেশেই আছে। কিন্তু বিড়ি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /১১.৩৮ এএম/৩১//২০১৭ইং)