• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:৪৬ অপরাহ্ন

সত্য সংলাপ- ফেলে আসা দিনগুলো


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮, ২:৪০ PM / ৩০
সত্য সংলাপ- ফেলে আসা দিনগুলো

গৌতম রায় : ৩৫ বছর আগের ছবি। যখন কলেজে পড়ি। খুব কবিতা লিখতাম সেকালে। দৈনিক সংবাদ, দৈনিক আজাদ আর মেয়েদের বেগম পত্রিকা পড়তাম। কিন্তু পকেটে পয়সা ছিল না। বাপের হোটেলেই খেতাম কিনা। তবু ঢাকা চলচ্চিত্রে নায়ক হবার স্বপ্ন ছিল। কি সোনালী অতীত পার করেছি। সাদা কালো ছবির যুগ। রঙ্গীন ছবির যুগ চালু হলেও খুব বেশী প্রচলন ছিল না। সেদিন যাদের কোলে নিয়েছি এরা আজ ৪০/৪১ বছরের যুবক যুবতী। এতগুলো বছরে কত প্রিয়জনকে হারিয়েছি, কত কাছের বন্ধু চলে গেছে দূরে বহুদূরে- এপাড়ে ওপাড়ে।
সমবয়সী মেয়েদের সাথে কথা বলতে খুব ভয় পেতাম। গলা শুকিয়ে যেত। গায়ে স্পর্শ লাগলে শরীর শিহরিত হতো। কলেজপড়ুয়া কোন মেয়ের সাথে রিক্সায় বসলে খুব লজ্জা পেতাম। আবার বেশ গর্ববোধও করতান। আজকের ছেলে মেয়েদের কাছে এগুলো সব ‘পান্তাভাত’। আগের আবেগ চলে গেছে ডিজিটালে। ইন্টারনেট সংযোগের মতোই। কখনো 4G স্পীডে চলে, আবার কখনো স্লো। ব্যালেন্স না থাকলে নেট বন্ধ তো প্রেমও বন্ধ। এখন ডিজিটাল প্রেম। আসে আর যায়। বন্ধুর প্রেমের চিঠি লিখে দিলে সিনেমা দেখার টিকেট পেতাম। আজ ভাবতেই কেমন লাগে। আজকাল মোবাইল টিপলেই প্রেম হয়ে যায়। সেদিন এত সহজলভ্য ছিল না। ঘন্টার পর ঘন্টা এখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েদের মন জয় করতে হতো। আমার এলাকার এমপিকে অনেক কষ্ট করে এভাবে পছন্দের মেয়েকে প্রেন নিবেদন করতে হয়েছে। সে এখন তার স্ত্রী। ছেলে এলাকার জবপ্রিয় যুবনেতা।
আজ আঙ্গুল টিপলেই তাকে দেখা যায় কত ছেলে মেয়ের হাসি খুশী কান্নাকাটির চিত্র। কুমার বিশ্বজিতের গান মনে মনে গাইতাম- “তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে, ফুল নিতে আসতে।” যদিও আমার বাগানের ফুল কেউ নিতে আসেনি সেদিন।
আর আসবে না কোনদিন সেই স্বর্ণালী দিনগুলো। অমিতাভ বচ্চনকে খুব ফলো করতাম। মিঠুন চক্রবর্তীর ‘ডিসকো ডেন্সার’ ছিল বহুল আলোচিত ছবি। শ্রীদেবী ছিল স্বপ্নের রানী। পয়সা দিয়ে VCR দেখতাম। আর আজ দেখি You tube এ। বয়সটা আজ যাদের পঞ্চাশের বেশী তাদের স্মৃতিতেই ভাসবে সেই সোনা ঝরা দিনগুলোর ছবি। ফেলে আসা দিনগুলো আমায় যে পিছু ডাকে…।

লেখক : মালয়েশিয়া প্রবাসী সাংবাদিক

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/২:৩৮পিএম/১৭/৯/২০১৮ইং)