• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন

শিবগঞ্জে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে বসতবাড়ি-জমি


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৫, ২০১৯, ৮:৪৯ PM / ২৬
শিবগঞ্জে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে বসতবাড়ি-জমি

মো. আমিনুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে বসতবাড়ি ও জমি। অভিযোগ রয়েছে- অজ্ঞাত কারণে প্রশাসনের টনক নড়েনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন- একদিকে নদী তারবর্তী কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষের ফসলী জমি নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে কয়েকটি গ্রাম আবারো হুমকির মুখে পড়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- প্রায় ১৫-২০টি ট্রাক্টরে বালু বোঝাই করে বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি ট্রাক্টরে ৩ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন। অন্যদিকে দুলর্ভপুর থেকে সদর উপজেলার দ্বারিয়াপুর সড়কে সারিবদ্ধভাবে বালু বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল করায় রাস্তার বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে শেষ প্রান্তে একদল সিন্ডিকেট বসে বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে ট্রাক্টর প্রতি ৮শ’ টাকা করে আদায় করছেন। তবে বাস্তবে টোকেনে ৩শ’ টাকা করে উল্লেখ রয়েছে। বালু উত্তোলনের সময় ট্রাক্টরের চালক দূর্লভপুর ইউনিয়নের বাসির আলী ও বকুল জানান, আমরা ট্রাক্টর প্রতি ৮শ’ টাকা করে দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকি। এতে ট্রাক্টর প্রতি মাত্র ১ হাজার টাকা করে লাভ হয়। এরই মধ্যে রয়েছে তেল ও শ্রমিক খরচ। ট্রাক্টরের শ্রমিক ১২ রশিয়া গ্রামের সফিক, বাবলু ও হাকিমসহ প্রায় ২০-২৫ জন শ্রমিক জানান, আমরা ট্রাক্টর প্রতি ৩শ’ টাকা করে পেয়ে থাকি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জমির মালিক জানান, এলাকার প্রভাবশালী ও সাবেক মেম্বার তোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে স্থানীয় দলীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের এক বড় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাকা আদায়কারি তিন যুবক জানান, আমাদের তোজাম্মেল হক মেম্বার যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই আমরা টাকা আদায় করছি। এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। তোজাম্মেল হক মেম্বারের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন গড়ে ৩৫-৪০ টাকা করে ভাগ পাচ্ছি। মুল টাকা যাচ্ছে প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার নিকট আত্মীয়ের পকেটে। তিনি প্রশাসন ম্যানেজের অজুহাতে কোন সময় ট্রাক্টর প্রতি ৫শ’ টাকা আবার কোন সময় ট্রাক্টর প্রতি ৩শ’ টাকা করে নিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ নেতার নিকটতম আত্মীয়ের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন- এখানে আমাদের দলীয় প্রায় ৩শ’ জন কর্মীর রুজী রুটির ব্যাপার আছে। তাই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে আমি প্রশাসনকে দেয়ার অজুহাতে কোন টাকা গ্রহণ করেন না দাবি করেন। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার মশিউর রহমান বলেন- বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোন অর্থ আমরা গ্রহণ করিনা। বরং সহকারী কমিশনার যখনই অভিযান ডাকেন তখনি পুলিশ অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন। সহকারী কমিশানা (ভুমি) বরমান হোসেন বলেন- এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত তৎপর রয়েছি। ইতোমধ্যে কয়েকটি অভিযান চালিয়েছি। প্রয়োজনে আরো অভিযান চালিয়ে জনস্বার্থ বিরোধী বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকজন লিখিত অভিযোগ করেছেন। শীঘ্রই সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা: সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল বলেন- যেহেতু বালু উত্তোলন জনস্বার্থ বিরোধী সেহেতু বালু উত্তোলনের হোতারা যেই হোক না, তাদের কোন ছাড় দেয়া হবে না হুশিয়ারি দেন।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৮:৫০পিএম/২৫/৪/২০১৯ইং)