• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩৯ অপরাহ্ন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন ও কিভাবে খোলা যাবে?


প্রকাশের সময় : জুন ৩, ২০২০, ১১:১৫ PM / ৩০
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন ও কিভাবে খোলা যাবে?

ড.আবু হেনা মোস্তফা জামাল : দুই মাসের অধিক সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আমাদের ভাবতে হবে এই সময় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হল। আমার বিবেচনায় মোটেও ক্ষতি হয়নি। কারন প্রথমত গত ২ মাসের মধ্যে ১ মাসের বেশী রমজানের ছুটি থাকত। আর এক মাস কেন এর চেয়ে বেশী সময় আমাদের দেশের হরতাল অবরোধ এর কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকত। আমাদের দেশে যখন করোনা রুগী সনাক্তই হয়নি তখন যেসব দেশে করোনা নিয়ন্ত্রনে চলে এসেছিল সেসব দেশেও এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হয়নি। তবে আমাদের দেশে কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা আসছে। এর কারন প্রাইভেট স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের একটা ব্যবসার পন্য হল শিক্ষা এটা ভাবা ঠিক নয়। তাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না চললে তাদের টিউশন ফির টাকা সংগ্রহ কমে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তাদের অনেক শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না। এই ব্যাপারে সরকারকে ভাবতে হবে। তাহলে কিভাবে খুলবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান?

১) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাঃ একটি বছর মানুষের জীবনে শিক্ষা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলেও কিছু যায় আসবে না। এজন্য এই বছর এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খোলার পক্ষে আমি। ইতিমধ্যে দূরশিক্ষন যেমন টিভি ও ইন্টারনেট ভিত্তিক অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চলছে। আর বছর শেষে স্বল্প পরিসরে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব এবং সেটা স্বাস্থ্য বিধি মেনেই। যেমন, সব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ১০০ নম্বরের একটি পরীক্ষা হবে, অনেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মত। আর এক এক দিন একটি ক্লাসের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, এতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা যাবে। অটোপ্রমোশন দিলেও কি খুব সমস্যা? আপনার সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখুন, বেঁচে থাকলে পড়াশোনা অনেক করতে পারবে। কারন স্বাস্থ্য বিধি মানার সক্ষমতা কোন কোন স্কুলের থাকলেও , অভিবাবকদের জমায়তে তা অসম্ভব হয়ে যাবে।

এস, এস,সি ও এইচ, এস,সি পরীক্ষাঃ আপাতঅত এটাই বাংলাদেশের শিক্ষার সবচেয়ে বড় সংকট। আমার মনে হয় এইচ,এস,সি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশের সকল স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এ আসন বসালে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব এবং একসাথে মার্কস কমিয়ে ২ / ৩ টি পরীক্ষা একদিনে নেওয়া উচিৎ। আর নিয়মিত ক্লাস সমুহ ইন্টারনেট ও টিভির মাধ্যমে নেওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় সমূহঃ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ অতি সহসা খোলা অসম্ভব, কারন ১৫-২০ হাজার হাজার শিক্ষার্থী এক এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে যার প্রায় ৮০ শতাংস হল ও মেসে থেকে পড়াশোনা করে, যা এই মুহুর্তের যে স্বাস্থ্যবিধি তা মানার জন্য অসম্ভব। আপাতত online class ও শুধু পরীক্ষার কথা চিন্তা করা যায়। পরীক্ষার জন্যও তো ছাত্র-ছাত্রীদের হলে আসতে হবে, তাহলে কি উপায়। এজন্য পরীক্ষা হতে হবে কেন্দ্রীয় রুটিন অনুযায়ী। যেমন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি নির্দিষ্ট তারিখ দিবেন আর সেই সময় শুধু একটি সেশনের পরীক্ষা হবে, এবং প্রতিদিন পরীক্ষা হবে। সেই সেশনের পরীক্ষা শেষে তারা হল ত্যাগ করবে, তারপর আর এক সেশন এর পরীক্ষা শুরু হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা আমাদের অনেকের শিক্ষা জীবন এর অনেক সময় এমনিতেই নষ্ট হয়েছে, যেটুকু ক্ষতি হবে তা নিশ্চয় জীবনের চেয়ে বড় নয়। আর সবার সহায়তা থাকলে এটুকু ক্ষতি আমরা কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব ইনশাআল্লাহ।

লেখক : ড.আবু হেনা মোস্তফা জামাল
সহযোগী অধ্যাপক, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইবি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১১:১৫পিএম/৩/৬/২০২০ইং)