• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

শাশুড়ির ঠাই হলেও ছেলের তাই বাড়িতে জায়গা হলো না মায়ের!


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২০, ২০১৮, ১২:০০ PM / ৩৯
শাশুড়ির ঠাই হলেও ছেলের তাই বাড়িতে জায়গা হলো না মায়ের!

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : প্রতিটি মা-বাবাই অনেক ত্যাগ স্বীকার করে সন্তানকে লালন-পালন করেন। সেই মা-বাবাই যখন বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হন, তখন তাদের সেই আদরের সন্তানের কাছ থেকেই পান অপ্রত্যাশিত আচরণ, যা মোটেও কাম্য নয়। তেমনই একটি অমানবিক ঘটনা ঘটেছে ভারতের শিলিগুড়িতে।

১৯ ডিসেম্বর, বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছয় জনের সংসারে স্থানসংকুলানের ‍অজুহাত দেখিয়ে জয়শ্রী বিশ্বাস (৭০) নামের এক বৃদ্ধ মাকে তার আপন সন্তান বন্ধুর বাসায় রেখে এসেছেন। পরে হাসপাতাল হয়ে যার ঠাঁয় হয়েছে ১৪ বছর যে বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন সেখানে।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, বিন্নাগুড়িতে নিজেদের জমি-জায়গা ছিল জয়শ্রী বিশ্বাসদের। স্বামী মারা যাওয়ার পর মেয়ের বিয়ে দিয়ে আর্থিক কষ্টে পড়েন তারা। তখন তার ছেলে পার্থ শিলিগুড়িতেই জয়শ্রীর দিদির এসটিডি বুথ চালানোর কাজে যোগ দেন। পরে তিনি টোটো কেনেন।

জয়শ্রীর কথায়, তারপরই বউকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান পার্থ। ছেলে বউকে নিয়ে আলাদা হওয়ার পর বিপাকে পড়ে যান তিনি। পরে তিনি নিজের খরচ চালাতে হাকিমপাড়ার ঝিমলি ঘোষের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ নেন। সেখানে এর আগেও তিনি পরিচারিকার কাজ করেছিলেন। জয়শ্রীর দাবি, এই সময় জমি বিক্রির টাকাও কিছু কিছু করে অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে দিতে হয়েছে ছেলেকে।

ছয় মাস আগে জয়শ্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাকে বাড়িতে নিয়ে যান পার্থ। কিন্তু জয়শ্রীর অভিযোগ, তারপর থেকেই ছেলের বউয়ের সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় তার। শেষে ছেলে চম্পাসারিতে তার এক বন্ধুর বাড়িতে রেখে আসেন তাকে। সেখানে যাওয়ার পর বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখন তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানেই ঝিমলিদের বাড়ির কথা বলেন তিনি।

এ বিষয়ে ঝিমলি বলেন, ‘ছেলে বের করে দেওয়ার পরে অসহায় অবস্থায় জয়শ্রী দেবী আমাদের কথাই বলছিলেন। খবর পাওয়ার পর আশ্রয় না দিয়ে পারিনি। বিপদে পড়ে মানুষ নিজের বন্ধুর কথাই মনে করে। জয়শ্রী আমাদের কথা বলেছেন, কারণ এখানে উনি নিজের বাড়ির মতোই ছিলেন।’

সে বাড়িতে এখন ভালোই আছেন জয়শ্রী। তবে বেশিদিন অন্যের বোঝা হয়ে থাকতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটু সুস্থ হয়েই বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাব।’ স্থানীয় তৃণমূলের লোকজন তেমনই একটি বৃদ্ধাশ্রমের খোঁজ করছেন বলে জানান তিনি।

কেন মাকে বের করে দিতে হলো?—এ প্রশ্নের উত্তরে পার্থর দাবি, রবীন্দ্রনগরে দুই কামরার ভাড়াবাড়িতে তারা এমনিতেই ছয় জন মানুষ। বউ ছাড়াও তিন মেয়ে এবং তার অসুস্থ শাশুড়ি রয়েছেন। তার কথায়, ‘বউয়ের সঙ্গে মায়ের নিত্য ঝামেলা। তিন মেয়ের দুই মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। তার ওপর মায়ের শরীর ভালো নয়। যখন-তখন মলত্যাগ করে ফেলেন। তাই নিয়েও অশান্তি। কী করি!

পার্থ আরও বলেন, ‘আমার বউও পরিচারিকার কাজ করেই তার মায়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।’

মাকে কবে বাড়ি নিয়ে যাবেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলেননি পার্থ।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/১২:০০পিএম/২০/১২/২০১৮ইং)