• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:১২ অপরাহ্ন

মাদক-কথিত ক্রসফায়ার আর খেলা প্রসঙ্গ


প্রকাশের সময় : জুলাই ৩, ২০১৮, ১০:১৩ PM / ৪২
মাদক-কথিত ক্রসফায়ার আর খেলা প্রসঙ্গ

মোমিন মেহেদী : শাদাকে শাদা আর কালোকে কালো বলার জন্য নিবেদিত ছিলাম, আছি, থাকবো। বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসি বলেই যত প্রণোদনা আমার। রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-অর্থনীতি-সমাজ ও পরিবেশনীতি সহ বিভিন্ন অঙ্গণে নিয়মিত আমার প্রত্যয়দীপ্ত পথচলা অব্যহত ছিলো, আছে থাকবে। তবে, খেলা নিয়ে আছে আমার অ-নে-ক কথা; যা খেলাপ্রিয় মানুষদের জন্য কষ্টদায়ক হলেও সত্য। যেমন-ফুটবল। ফুটবল বিশ্বকাপ খেলা আসলেই ব্রাজেলিয়, আর্জেন্টেনিয়ান আর জার্মান পতাকায় আমাদের দেশ সয়লাব হয়ে যায়; কিন্তু কেন? আমরা কি বাংলাদেশকে পেরেছি এত বছর পরও বিশ্বকাপ ফুটবলের ধারে কাছেও নিতে? যদি সেই ব্যর্থতা থেকেই থাকে, তাহলে তার মধ্যে এত সফলতার হাসি কেন? উত্তরণ চাই এই মানষিকতার উত্তরণ চাই। হয়তো ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, নয়তো খেলা নিয়ে হৈ হৈ করবেন না। পাশাপাশি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একরাম হত্যাকান্ডের বিষয়েও সচেতন হতে হবে আপনাদেরকে। তা না হলে আপনি, আপনার সন্তান অথবা আপনার পরিবারের-ই কেউ হয়ে যেতে পারে এমন মৃত্যুর মুখোমুখি। সেক্ষেত্রে করণীয় কি? করণীয় হলো- সচেতন করা, সচেতন হওয়া এবং সোচ্চারভাবে বাংলাদেশ-বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে বাঁচানোর জন্য নিরন্তর এগিয়ে যাওয়া। প্রয়োজনে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটি দিয়ে এই দেশের সংকট কাটাতে তৈরি থাকুন।
আপনি কি সেই হৃদয় স্পর্শ করা, কান্না ঝরা অডিওটি শুনেছেন? শুনে থাকলে একটু মন খুলে কাঁদুন আর ভাবুন নিজের কথা, নিজের দেশের বর্তমান কথা। আমরা শুনেছি এক ঢিলে নাকি দুই পাখি শিকার করা যায়। সম্প্রতি লিক হওয়া একটি ভিডিওটিতে সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানের কথা শুনে মনে হলো- এক ঢিলে শুধু দুই নয়, বহু পাখি শিকার করা সম্ভম! সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির বক্তব্য অনুযায়ী নিহত কাউন্সিলর একরামুল হক ইয়াবা ব্যবসায়ী কাউন্সিলর ইকামুল নয়। ইয়াবা ব্যবসায়ী একরামুল অন্য একজন। তার বদলে এই একরামুল হক কে বন্দুক যুদ্ধে ক্রস ফায়ারে দেয়া হয়েছে। তিনি দৃঢ়ভাবে আরও বলেছেন মিডিয়া প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চায়! আমার প্রশ্ন হচ্ছে সমগ্র মিডিয়া কি এই অভিযোগ সত্যি বলে মেনে নেবেন…??? অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় যে বাহিনীর দারা এই বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে তারাও কি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছেন বলে ভুল হত্যার দায় শিকার করবেন…???
উত্তরটা যদি হ্যা হয়; তাহলে একরামকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন জাতির জনক কন্যা শেখ হাসিনা। যদি না-ই পারেন, তাহলে কেন নির্মমতার রাস্তায় অদ্ভুতভাবে হাঁটছে বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে চলুন নতুন একটি সংবাদে চোখ রাখি। যেখানে উঠে এসেছে ভিন্ন প্লটের কথা ঠিক এভাবে- গাজীপুরে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত কামুর পরিচয় পাওয়া গেছে। রাতে মর্গে লাশটি দেখে আছমা বেগম নামে এক নারী সেটি তার স্বামী কামাল খান কামুর বলে শনাক্ত করেন। তবে শুক্রবার সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল কামু টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকার ২২ মামলার আসামি কামরুল ইসলাম কামু। এ কামু এখন কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখোলা-রায়েরদিয়া (গাইনীপাড়া) গ্রামে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামু নিহত হন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে জয়দেবপুর থানায় মামলা হয়েছে। আছমা বলেন, স্বামীর খোঁজখবর করেও পাইনি। এলাকাবাসীর মাধ্যমে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে মর্গে গিয়ে স্বামীর লাশ দেখতে পাই। তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের পোশাক পরিহিত ছয়জন তাদের বাসায় ঢুকে তল্লাশি শুরু করে। একপর্যায়ে কামুর সঙ্গে কথা রয়েছে বলে তাকে নিয়ে যায় তারা। একই সঙ্গে বাসার টেলিভিশন, মোবাইল ফোনসেট, স্বর্ণালঙ্কার, কিছু দলিল-দস্তাবেজ, কামুর জাতীয় পরিচয়পত্র ও বেশ কিছু কাগজপত্র নিয়ে যায় পুলিশ। টঙ্গীর এরশাদ নগরে তারা কখনও থাকেননি। এক সময় টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুরের বৌবাজারে তারা থাকতেন। কামু সেখানকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৬ মাস আগে গাইনীপাড়ায় প্রবাসী রুবেলের বাসা ভাড়া নেন তারা। বাবার বাড়ি থেকে উত্তরাধিকারের অংশের টাকা এনে দিলে তার স্বামী বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ৮ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। তার স্বামীর নামে কোনো মামলা-মোকদ্দমা ছিল না। স্বামীকে কখনও কোনো মামলায় আদালতেও যেতে শোনেননি। এলাকাবাসী জানান, কামু মাদক ব্যবসা করতেন কিনা তা তারা জানতেন না। অন্যদিকে এসব বিষয়ে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক আমীর হোসেন বলেন, ডিবি পুলিশ কামুর বাড়িতে যায়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে টিভি বা অন্য মালামাল নেয়ার অভিযোগও ঠিক নয়। কামু একজন সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে টঙ্গী ও কালীগঞ্জ থানায় দুটি মাদক এবং জয়দেবপুর থানায় একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে।
স্ব বিরোধী বক্তব্যে ভরে যাচ্ছে বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস। তার উপর আবার ডিবি পুলিশ কামুর নামের সংশোধনী দেয়। তার বাবার নামেও সংশোধনী আনে। বলা হয় নিহত ব্যক্তির নাম কামাল খান ওরফে কামু। তার বর্তমান ঠিকানা গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখোলা-রায়েরদিয়া এলাকার গাইনীপাড়ায়। তার বাবার নাম সিরাজ খান। অথচ পুলিশের পক্ষ থেকে আগে বলা হয়েছিল নিহত কামু টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকার ২২ মামলার আসামি কামরুল ইসলাম কামু। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে এ কামু টঙ্গীর একটি ডাবল হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে তার আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, জামিন না হওয়ায় ২ বছর ধরে কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি। কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে তার সঙ্গে স্ত্রী সাক্ষাৎ করেছেন। কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেলসুপার প্রশান্ত কুমার বণিকও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একই সাথে এত রকম কথা শুনে কেবলই মনে হচ্ছে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সটাকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা হাসিলের রাস্তায় অগ্রসর হচ্ছে প্রশাসন ও সরকারী দলের একাংশ। যে কারণে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক ডেরিক স্টিফেন প্রশাসকে বাঁচাতে গণমাধ্যমকে বলেছেন, নিহত কামুর পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র তার কাছে রয়েছে। সেখানে কামাল খান কামু, পিতা মৃত সিরাজ খান ও ঠিকানা টঙ্গীর আরিচপুর লেখা আছে। তিনি কালীগঞ্জের উলুখোলা নগরভেলা এলাকায় বসবাস করেন। তার নামে মাদকসহ তিনটি মামলা রয়েছে। হাসপাতাল মর্গ থেকে বলা হয়েছে, কামুর মা তার মরদেহ নিয়ে গেছেন। তবে টঙ্গীর আরিচপুর কিংবা কালীগঞ্জের উলুখোলায় এ নামে কোনো মরদেহ নেয়া হয়নি।
কামুকে হত্যা করা হয়েছে, না ক্রশ ফায়ার? এমন প্রশ্নে যখন তোলপাড় মিডিয়া; তখন কানে ভেসে আসে- একরামুল হকের স্ত্রীর কান্না ভেজা কন্ঠ- কাউন্সিলর কিছু করে নি… আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌছেছে কি না জানি না, বিবিসিকে তিনি বলেছেন, কক্সবাজারের টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার বিষয়টি একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করবেন।  শুধু তা-ই নয়; ওই ম্যাজিস্ট্রেটের দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ যদি প্রলুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, একরামের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অডিও রেকর্ডটি দেয়নি।
২৬ মে রাতে একরাম নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার তার পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করেছে। যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে কেউ দেয়নি। তারপরও অডিও রেকর্ডটি শুনেছি। যদি কেউ অন্যায় কাজ করে থাকে, কিংবা প্রলুব্ধ হয়ে বা স্বপ্রণোদিত হয়ে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু করে থাকে, তাহলে তার বিচার হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আবারও রিপিট করতে চাই, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অন্যায় করলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেন না। সেটাও আপনারা দেখেছেন। অডিও রেকর্ডটি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা যে অডিওটির কথা বলছেন। আমাদের কাছে অফিসিয়ালি আসেনি সেটি। আমাদের কাছে সেরকম তথ্য নেই। কেউ অফিসিয়ালি ঘটনাটি বলেনি। তথ্য এলে আমাদের যা করণীয় তাই করব। যে তালিকা অনুযায়ী অভিযান চলছে তা শুধু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের না। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনছে। যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ডাকে সাড়া দিচ্ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যারা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যারা অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার অভিযুক্তকে কারান্তরীণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের কারাগারে প্রায় ৮৩-৮৫ হাজার বন্দি আছে, যার প্রায় ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ মাদকের মামলার আসামি। মাদকের একটা নতুন আইন হচ্ছে, সেটি হলে সবকিছুর সমাধান হবে।
আশ্বাস শুনতে ভালোই লাগে। আর তাই আশ্বাস শুনে শুনে নিরন্তর তার বাস্তবায়ন চাই। যদিও বাস্তবায়ন হবে কি না, তার কোন নিশ্চয়তা অন্তত এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নাই। কেননা, ‘মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তৎকালীন ভৈরব থানার ওসি (বর্তমানে আশুগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে কর্মরত) বদরুল আলম তালুকদার আমাকে হয়রানি করতে দুটি মাদক মামলা ও একটি হত্যার পুরাতন মামলায় মিথ্যা আসামি করে আমার জীবনটা তছনছ করে গেছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আলোচনায় ওঠে আসে ওসি বদরুলের নাম। শনিবার যুগান্তরে ‘মাদকের পৃষ্ঠপোষক পাঁচ ওসিসহ ১৬ পুলিশ’ শীর্ষক খবর প্রকাশের পর ভৈরব প্রতিনিধির কাছে এভাবেই অভিযোগ করেন যুবক ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল। তিনি মাদকবিরোধী সংগঠন ‘মাদকমুক্ত ভৈরব চাই’ সংগঠনের আহ্বায়ক। গণমাধ্যমকে ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল আরো বলেছেন যে,  শহরের দেয়ালে মাদকবিরোধী লেখা লিখে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও এর পৃষ্ঠপোষকতায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তৎকালীন এ ওসি বদরুল আমাকে দুটি মাদক ও আরেকটি হত্যা মামলায় আসামি করেন। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মাসোয়ারা নিয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। দুই বছর ধরে এসব মিথ্যা মামলায় কিশোরগঞ্জ আদালতে আমি হাজিরা দিয়ে যাচ্ছি। ওসির অনুগত পুলিশের এসআই মো. নজমুল ৩০২ পিস ইয়াবা এবং এসআই অরুন কুমার বসাক ১০২ পিস ইয়াবা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন। শুধু তাই নয় একটি পুরনো (পেইন্ডিং) হত্যা মামলায় আমাকে মিথ্যা আসামি দেখিয়ে এসআই নজমুলকে দিয়ে আমাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছেন। আমার জীবনে কোনো দিন আমি ধূমপান করেনি অথচ মাদক ও হত্যার মিথ্যা মামলায় আমাকে ৭ মাস ১০ দিন জেল খাটিয়েছেন। তিন মামলায় গত দুই বছর ধরে আদালতে হাজিরা দিতে দিতে আমার জীবন আজ ধ্বংসের মুখে। ওসি বদরুল আমার সুখের জীবনটা শেষ করে দিয়ে গেছেন। ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল আরও জানান, মাদকবিরোধী সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ওসি বদরুলের কাছে আমি মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা গোপনে দিয়েছিলাম। তারপর একাধিক দিন বদরুল আমাকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে আন্দোলন থেকে সরে যেতে বলেন। টাকার প্রস্তাব দেন। আমি তার অসৎ প্রস্তাব প্রত্যাখান করে ভৈরবে একটি কমিনিউটি পুলিশিং সভায় তৎকালীন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেনের উপস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ জনতার সামনে মাইকে বলেছিলাম। এসবের প্রতিবাদই আমার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাল হোক আর জাল হোক, কখনোই কোন অন্যায় দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আমরা হয়তো একরামুলের মত আরো অনেক নিরাপরাধ মানুষকে হারাতে পারি, যদি না এখনই সচেতন হই; পদক্ষেপ না নেয় সরকার। যদিও এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে গভীরভাবে নজর রাখে জাতিসংঘ। সংস্থাটির অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি সদস্য দেশগুলোকে মাদক নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য এবং মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি মেনে চলারও আহ্বান জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরুর পর দুই সপ্তাহে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, অভিযান চালানোর সময় গোলাগুলিতে কিংবা মাদক বিক্রেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে তাদের মৃত্যু ঘটেছে। তবে মানবাধিকারকর্মীরা এই মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, মাদকের উৎস বন্ধ না করে এভাবে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-’ ঘটিয়ে অভিযানের সফলতা আসবে না। মাদক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক তিনটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও বিশ্বে মাদক সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিশেষ অধিবেশনের ফলাফলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভারসাম্য এবং মানবাধিকারভিত্তিক মাদক নিয়ন্ত্রণে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় ইউএনওডিসি। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মান ও রীতিনীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঠিক আইনি নিরাপত্তার মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সব দেশকে সহায়তা দিতে চাই। দেশগুলোকে তথ্যপ্রমাণভিত্তিক সুরক্ষা, চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
এমন পরিস্থিতিতে তৈরি হতে হবে বাংলাদেশের রাজনীতি সচেতন নতুন প্রজন্মকে। কথা বলতে হবে, সচেতন করতে। স্কুলে স্কুলে ক্যাম্পেইন করতে হবে। পাশাপাশি সমূলে উৎপাটন করতে হবে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষ ধ্বংশকারীদেরকে। গডফাদারদেরকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনে নিরবে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া অন্ধকারের বাসিন্দা হিসেবে যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে, এদেরকে কঠিনভাবে পর্যবেক্ষণ করে প্রমাণসহ গ্রেফতারের পর এমন শান্তি দিয়ে মৃত্যুতন্ড কার্যকর করা উচিৎ, যাতে করে কেউ মাদকের নাম-ও আর মুখে না নেয়। প্রত্যয়ে পথ চলি, প্রত্যয়ে কথা বলি। আর তাই প্রত্যাশার সাথে বলতে চাই- মাদক, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়তে পারলেই স্বার্থক হবে বঙ্গবন্ধুৃর স্বপ্ন। আর তখনই কেবল বলতে পারবো বিজয় বাংলাদেশ বিজয় নতুনধারা…
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি
Email: mominmahadi@gmail.com
01972740015

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১০:১২পিএম/৩/৭/২০১৮ইং)