• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৮ Jun ২০২৪, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন

ব্যবসায়ীদের দেওয়া আশ্বাসে বাণিজ্যমন্ত্রীর বিশ্বাস


প্রকাশের সময় : মে ১, ২০১৭, ১০:১৭ AM / ৩৬
ব্যবসায়ীদের দেওয়া আশ্বাসে বাণিজ্যমন্ত্রীর বিশ্বাস

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত ও সরবরাহ পরিস্থিতি চাহিদার তুলনায় বেশি আছে। আগামী রমজানে তাই দাম বাড়ানো হবে না—ব্যবসায়ীদের এমন আশ্বাসে বিশ্বাস রাখলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
সচিবালয়ে গতকাল রোববার রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে কথা বলেন মূলত ব্যবসায়ীরা, বাণিজ্যমন্ত্রী ফাঁকে ফাঁকে অংশ নেন এবং তাঁদের কথার জবাব দেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘১৯৯৬-২০০০ সময়ে বাণিজ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় বাজারদর স্বাভাবিক রাখতে পেরেছিলাম। এবার মন্ত্রী হয়েও তা পেরেছি। বাজার নিয়ন্ত্রণে আসলে কড়াকড়ি নয়, ব্যবসায়ীদের বন্ধু হিসেবে ভাবতে হয়। তাঁদের প্রতি বিশ্বাস আছে।’
বৈঠকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রথম কথা বলেন পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম। রমজানে মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানিকারকদের প্রতি শুধু সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী পণ্যওয়ারি চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি জানতে চাওয়ার পর ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবদুল কাইয়ুম ভোজ্যতেল ও চিনির চাহিদার তথ্য দেন। বলেন, দুটি পণ্যেরই চাহিদা হচ্ছে ১৫ লাখ টন করে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা নেই। চিনির দাম হঠাৎ বাড়ছে কেন—এর জবাব ব্যবসায়ীরা দেবেন বলে তিনি আশা করেন।
ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, কারণ নেই, তবু আশ্চর্যের বিষয় যে চিনির দাম পাইকারি বাজারে মণপ্রতি ৩০০ টাকা করে বেড়ে গেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তখন ব্যবসায়ীদের ‘বাস্তবসম্মত’ কথা বলার পরামর্শ দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘দুটি চ্যানেল বৈঠকটি লাইভ দেখাচ্ছে। এমন কথা আমরা না বলি, যাতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’
এ পর্যায়ে বক্তব্য দেন সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান। চিনির দাম বেড়ে যাওয়ার সত্যতা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ডলারের দাম যে চার-পাঁচ টাকা বেড়ে গিয়েছিল, একে অছিলা করেই চিনির দাম বাড়িয়েছে কেউ কেউ। ডলারের দাম আসা উচিত ৮০ টাকার নিচে।
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ভোজ্যতেল ও চিনির সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো আছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম বন্দরে একটিমাত্র ঘাট দিয়ে পণ্য খালাস করতে হয় বলে অসুবিধার কথাও জানান।
রমজান শুরুর কাছাকাছি সময়ে কারখানা বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমেও পণ্যমূল্য বাড়ানো হয় বলে অতীতে দেখা গেছে। বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি জানান যে মেঘনা গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানা ২৮ এপ্রিল থেকে বন্ধ।
বাণিজ্যমন্ত্রীও তখন বলেন, ‘কারখানা বন্ধ রাখলে পণ্যমূল্য যে একবার বাড়ে, তারপর আর কমতে চায় না।’ সাংবাদিকেরা মোস্তফা কামালের কাছেই কারখানা বন্ধের কারণটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। কারখানা মেরামতের কাজ চলছে।’
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘মেঘনা গ্রুপের কারখানা কয়েক দিন বন্ধ থাকায় যে পরিমাণ চিনি উৎপাদন কম হবে, আমরা বেশি উৎপাদন করে তা পুষিয়ে দেব।’
ঢাকা চেম্বারের আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির আহ্বায়ক নূরুল হক চাঁদাবাজি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানির কারণেও রমজানে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি হয় বলে মনে করেন। জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ সমস্যাগুলো এখন আর নেই।’
খুচরা ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মিলমালিকেরা চাল সরবরাহ করছে না এবং সরকারের পক্ষ থেকে ঠিকমতো বাজার তদারকি হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। বাদামতলী চাল আড়ত সমিতির সভাপতি নিজামউদ্দিন ভারত থেকে চাল আমদানির দাবি জানান।
মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম বলেন, ঢাকায় বর্তমানে একটিমাত্র স্থায়ী গরুর হাট রয়েছে, যা উত্তর সিটি করপোরেশনে পড়েছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও হাট থাকা জরুরি। বাণিজ্যমন্ত্রী মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে শিগগির একটি বৈঠক করবেন বলে জানান।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম ১০.১৬এএম/০১//২০১৭ইং)