• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১২:০৪ অপরাহ্ন

ফিলিপাইনে ‘প্রেম কেন্দ্র’ থেকে ৬৫৮ জন উদ্ধার


প্রকাশের সময় : মার্চ ১৫, ২০২৪, ১:৫৩ AM / ৬১
ফিলিপাইনে ‘প্রেম কেন্দ্র’ থেকে ৬৫৮ জন উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিপাইনের বামবান শহরের একটি ‘প্রেম কেন্দ্র’ থেকে ৬৫৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব নারী-পুরুষদের প্রেমিক-প্রেমিকা সাজিয়ে অনলাইনে অন্যদের সঙ্গে প্রতারণা করতে বাধ্য করানো হতো।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) অভিযান চালিয়ে বামবান প্রতারণা কেন্দ্র থেকে ৩৮৩ জন ফিলিপিনো, ২০২ জন চীনা ও ৭৩ জন অন্যান্য দেশের নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতারণা কেন্দ্রটি ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি স্ক্যাম বা প্রতারণার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অনলাইন স্ক্যামের প্রেক্ষাপটে দেশটি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যে, অনেক সময় স্থানীয় প্রতারকরা নিজেরাই প্রতারণার শিকান হন ও অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রতারণা করে থাকেন।

গত বছরের আগস্টে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছিল, অনলাইন স্ক্যাম চালানোর জন্য সারাবিশ্ব থেকে কয়েক লাখ মানুষ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাচার হয়েছে।

বিশেষ করে তরুণ ও তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কে জানাশোনা ব্যক্তিদের লোভ দেখিয়ে এসব প্রতারণায় যুক্ত করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে অর্থপাচার, ক্রিপ্টো ও কথিত প্রেম প্রতারণা। প্রতারকরা সাধারণত নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করেন ও ভুয়া পরিচয় দিয়ে ওই নারী বা পুরুষের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সবশেষে কথিত প্রেমিক-প্রেমিকাকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করানোর মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেন প্রতারকরা।

ফিলিপিনো পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের অভিযানটি চালানো হয়েছে ভিয়েতনামের এক নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। তাকে ওই কেন্দ্রে আটকে রেখে প্রতারণা করতে বাধ্য করা হতো। এছাড়া সেখানে তাকে নির্যাতনও করা হতো।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের ওই নাগরিক প্রতারণা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে এসে স্থানীয় এক খামারির কাছে আশ্রয় নেন। পরবর্তী সময়ে ওই খামারি তাকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একসঙ্গে ৬৫৮ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়।

অভিযান পরিচালনাকরী প্রেসিডেন্সিয়াল কমিশনের মুখপাত্র উইনস্টন ক্যাসিও বলেছেন, ৩০ বছর বয়সী ভিয়েতনামের ওই নাগরিক চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফিলিপাইনে আসেন। তাকে রাঁধুনির চাকরি দেওয়ার কথা বলে, প্রতারণা কেন্দ্রটি নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে বুঝতে পারেন যে তিনি আসলে মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছেন।

ফিলিপিনো পুলিশ আরও জানায়, প্রতারণার জন্য মূলত সুদর্শন নারী ও পুরুষদের ধরে আনা হতো। বিশেষ করে, চীনা নাগরিকদের এক্ষেত্রে বেশি টার্গেট করা হতো। গত বছরের মে মাসেও ফিলিপিনো প্রশাসন ১ হাজার জনেরও বেশি লোককে উদ্ধার করেছিল। তারাও ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত একটি প্রতারণা কেন্দ্রে বন্দ্রী ছিলেন ও প্রতারণা করতে বাধ্য হচ্ছিলেন।

অনেকের দাবি, বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি লাভের আশায় কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের মতো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যাওয়ার পরপরই তাদের ফাঁদে ফেলা হয় ও যদি তারা প্রতারণায় অংশ নিতে বাধ্য করানো হয়। আর সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া কিংবা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানানো ব্যক্তিদের ব্যাপক নির্যাতন করা হতো। (সূত্র: বিবিসি)