• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন

প্রাণবন্ত মিষ্টি মেয়ে ছিলেন রাউধা


প্রকাশের সময় : মার্চ ৩০, ২০১৭, ৭:১৮ PM / ৪৯
প্রাণবন্ত মিষ্টি মেয়ে ছিলেন রাউধা

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

বাংলাদেশে পড়তে আসা মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফ ছিলেন খুবই প্রাণবন্ত। পিয়ানো শিখছিলেন দুই মাস ধরে। পাশাপাশি বাংলা ভাষাটাও শিখছিলেন।

পৃথিবী থেকে অকালে তাঁর চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না তাঁর পিয়ানো শিক্ষক ও সতীর্থ।

রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল বুধবার সকালে মহিলা হোস্টেল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি নিজের কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

রাজশাহী নগরে বসবাসকারী যুক্তরাষ্ট্রের পিয়ানো বাদক জন থর্পের কাছে একসঙ্গে পিয়ানো শিখতেন রাউধা আথিফ ও রাজশাহীর মাহমুদুল হাসান সজল। মাহমুদুল হাসান এখন জন থর্পের কাছে ইন্টার্ন করছেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগে সার্টিফিকেট কোর্স করছেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর (রাউধা) সঙ্গে পরিচয় ছিল। একদিন ফোন করে জানাল পিয়ানো শিখতে চায়। জন থর্প স্যারের কাছে কোর্স শুরু হতে দেরি হচ্ছিল। ২০ দিন পর কোর্স শুরুর বিষয়ে তাঁকে জানালাম। এরপর মাস খানেক থেকে সে সপ্তাহে একদিন করে পিয়ানো শিখতে আসত।’

মডেল রাউধা। ছবিটি ইনস্টাগ্রাম থেকে নেয়ামডেল রাউধা। ছবিটি ইনস্টাগ্রাম থেকে নেয়া

গত ২৬ মার্চ বিকেলেও পিয়ানো ক্লাস করেন রাউধা। মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সেদিনও অনেক গল্প করল। যাওয়ার সময় আমার কাছে জানতে চাইলে কবে ক্লাস। আমি তাকে বললাম, ফোন করে তোমাকে জানিয়ে দেব।’

রাউধা সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সে সব সময় অনেক উৎফুল্ল থাকত। সুন্দর করে কথা বলত। প্রতিদিন সুন্দর সুন্দর ড্রেস পরে আসত। সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ এই খবর শুনে আমি শকড। তাকে দেখে মনে হতো না সে কখনো এমন কাজ করতে পারে। অনেক গল্প হলেও কখনো কোনো সমস্যার কথা বলেনি।’

শিক্ষার্থী সম্পর্কে বলতে গিয়ে থর্প বলেন,‘ খবরটা শুনে দুঃখ পেয়েছি। ভদ্র, নম্র ও মিষ্টি একটা মেয়ে ছিল। পিয়ানোর প্রতি আগ্রহ ছিল। বাংলা খুব একটা বলতে পারত না, তাই বাংলাও শিখছিল। ও যে এ ধরনের কিছু করতে পারে, এমন কোনো ইঙ্গিতই পাইনি।
রাউধার মেডিকেল কলেজে ভর্তির আবেদন ফরমে দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, মালদ্বীপের মালেতে তাঁর বাড়ি। তাঁর বাবা মোহাম্মদ আথিফ পেশায় একজন চিকিৎসক। ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।

বিখ্যাত সাময়িকী ‘ভোগ ইন্ডিয়া’ ২০১৬ সালের অক্টোবরে তাদের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সংখ্যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মডেলদের নিয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য উদ্‌যাপন’ (সেলিব্রেটিং বিউটি ইন ডাইভার্সিটি) শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ‘একুয়া ব্লু’ চোখের অধিকারী এই মডেল। ভোগ ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদনের জন্য দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাউধা বলেছিলেন, ‘মডেলিং আমার কাছে পেশা নয়; শখই বেশি। পড়াশোনা শেষ করে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সাহায্য করা আমার কাছে সব সময়ের জন্য স্বপ্ন।’

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০৭.০০ পিএম/৩০//২০১৭ইং)