• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে যাচ্ছে মরিয়মের পাটের তৈরী হস্তশিল্পের কাজ


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৪, ২০২১, ৫:১৭ PM / ৭০
পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে যাচ্ছে মরিয়মের পাটের তৈরী হস্তশিল্পের কাজ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : করোনার শুরুতে সকল স্কুল কলেজ যখন বন্ধ অবসর সময় টা কে কেউ দিয়েছে হেলায় নষ্ট করেছে, কেউবা বা করেছে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ। মফস্বল শহরে একটা পরিবারে যখন মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তখন তার সব দায়িত্ব টুকুই হয়ে যায় স্বামীর সংসারের প্রতি। বাবা-মা খেয়ে থাক আর না খেয়ে থাক তা দেখার দায়িত্ব আর মেয়ের থাকেনা, কিন্তু সরকারপাড়ার মরিয়মকে বাবা-মায়ের জন্য কিছুু করার তাগিদ যেন খুব বেশী তাড়া করে ফিরছিল।

বৃদ্ধ মা-বাবাকে বিয়ের আগে থেকে কখনো বুঝতে দেয়নি ছেলের অভাব। কখনো হয়তো টিউশনি করে, কখনো ছোট খাটো চাকরি করে, নিজের পড়াশোনা খরচ চালানোর পাশাপাশি বাবা মায়ের হাতে যেটুকু পারা যায় তুলে দিয়েছে। কষ্ট করে মাস্টার্সটা শেষ করে কাজ নেয় এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতায়। স্বামী, সন্তান, শ্বশুর, শ্বাশুরী নিয়ে ভালোই চলছিল দিন কাল। করোনা যেন জীবনের ভাবনা গুলোর পরিবর্তন এনে দিল।

বাবার ছোট একটা ব্যবসা ছিল তা বন্ধ হয়ে যায়, মরিয়মের স্কুলের চাকরি টা চলে যায়, হাজারো রকম দুঃশ্চিন্তায় জড়িয়ে যায় মরিয়ের জীবন। স্বামীর সংসারে অভাব নেই তার, কিন্তু এটা তো তার স্বামীর সংসার, আত্মমর্যাদা সম্পন্ন বাবা-মা কে এই সংসারের এক টাকা দেওয়াটাও বিবেকে বাধেঁ মরিয়মের।
ভাবনায় পড়ে সে কিছু একটা করতে হবে, নিজের সৃজনশীল প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনের সহযোগিতা নিয়ে তৈরি করতে শুরু অর্থকরী ফসল পাট দিয়ে বিভিন্ন শো-পিস, দু একটা তৈরি করে দেয় ঠাকুরগাঁওয়ের অনলাইন উদ্যোক্তা পরিবারে।আয়মান হস্তশিল্প নামে তৈরি করে নিজস্ব একটি ফেসবুক পেজও। এতে এতো পরিমান সাড়া পায় তাতে বেড়ে তার কাজের স্পৃহা। ছোট একমাসের একটি ট্রেনিংও নিয়ে নেয় ঠাকুরগাঁওয়ের ইইএসডিও নামক একটি বে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে।

কাজের গুণগত মান আরো বেড়ে যায়, মরিয়ম বলে তিন হাজার টাকা পুজিঁ করে শুরু বর্তমানে তের হাজার টাকা পুজিঁ। মাসে সাত হাজার টাকার অর্ডার পেলে লাভ থাকে দুইহাজার টাকা যা কম হলেও থেমে নেই, সংসারের সব কাজ শেষ করে,নিজের আড়াই বছরের বাচ্চা ঘুমিয়ে গেলে তার কাজ শুরু হয়।

চিন্তা তার বহুদূর, যদি বড় রকমের কোন আর্থিক সহযোগিতা বা সরকারী কোন পৃষ্ঠপোষকতা পায়, তাহলে দেশের অর্থকরী ফসলকে হারিয়ে যেতে দিবে না সে। করবে হাজারো নারীর কর্মসংস্থান, তার তৈরী বিভিন্ন শো-পিস, টেবিল ম্যাট, টিস্যু বক্স, কলম দানী, ফুল দানী, পুতুল, ব্যাগ সহ বহু জিনিস পাচঁটি বিভাগে সে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেছে। সহযোগী হিসেবে সব সময় পাশে পেয়েছে হাজবেন্ড রাকিব সাব্বির হিমেলকে, ইচ্ছে আছে তার পাটের তৈরী জিনিস গুলো দেশের বাইরেও পাঠানোর। লাল সবুজের পতাকা উড়বে একদিন বাইরের দেশেও, তার স্বপ্ন দেখা যেন থেমে না যায়, স্বপ্ন বাস্তবতায় রুপ দিতে সকলের দোয়া ও সহযোগিতায় চায় মরিয়ম।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৫:১৪পিএম/২৪.৩.২০২১ইং)