আতাউর রহমান বিপ্লব, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার জছিমিঞা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে চমকে দিয়েছে প্রতিবন্ধী মানিক রহমান। সে পা দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে এই সফলতা পেল। তার এই অর্জনে খুশি সহপাঠীরাসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ।
জছিমিঞা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী জানান, মানিক মেধাবী শিক্ষার্থী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার রোল নম্বর ৬১৮০১৩। এর আগে সে প্রাথমিক সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে।
পা দিয়ে লিখে সফলতা অর্জনের পর অত্যন্ত খুশি মানিক রহমান বলেন, ‘আমার দুটো হাত না থাকলেও আল্লাহ রহমতে পা দিয়ে লিখে এবারের জেএসসি পরীক্ষায় সকল বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে প্রকৌশল বিশ^ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে চাই।
ছেলের এমন ফলাফলে খুশিতে কেঁদে ফেললেন মানিক রহমানের বাবা মিজানুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের বললেন, আমার দুটো সন্তান। ছোট সন্তান ক্লাস টুতে পরে। আমি দু’সন্তানকেই সমান চোখে দেখি। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত না থাকলেও ছোট থেকে মানিকের মা ও আমি তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। এজন্য আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগমের অবদানটাই অনেক বেশি। সমাজে অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক ছেলে-মেয়েদের চেয়েও মানিক এবারের জেএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজান্ট করেছে। ওর জন্য আমরা গর্ব বোধ করি। সবাই আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন সে যেন সুস্থ সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে পারে এবং আল্লাহ যেন ওর স্বপ্নগুলো পূরণে সহায়তা করেন।’
ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মানিক অসাধারণ শিক্ষার্থী। সে আমাদের বিদ্যালয়ের সম্পদ। সে ডান পায়ে বুড়ো আঙ্গুলের ফাঁকে কলম ধরে লিখে আর বাম পা দিয়ে প্রশ্ন ও খাতার পাতা উল্টাতে পারে। এভাবে পরীক্ষা দিয়ে সে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার ১৩৯ জন পরীক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। শতভাগ উত্তীর্ণ এ এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানিক রহমানসহ ৩২ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে বলে জানান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/১০:০৩পিএম/৩১/১২/২০১৯ইং)
আপনার মতামত লিখুন :