• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন

পল্লীবিদ্যুতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে দুদকে অভিযোগ


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৭, ২০১৯, ১১:০৮ PM / ৩৭
পল্লীবিদ্যুতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে দুদকে অভিযোগ

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : সমগ্র দেশের বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগী গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ৭০% গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে আসছে পল্লীবিদ্যুৎ, এই বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত করতে সরকার এই প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক পরিমাণে অর্থ বিনিয়োগ করছে এই সুযোগে প্রতিষ্ঠানটির কিছু অসাধু কর্মকর্তা একত্রিত হয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কেনাকাটায় দীর্ঘ দিন যাবৎ দুর্নীতি করে আসছে এতে পরোক্ষভাবে গ্রাহকদের সেবায় ক্ষতিকর প্রভাব পরছে, দুর্নীতির ধরন নিম্নরূপ।

সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে গত ৭ বছরে অনেক লাইন নির্মানের মালামাল ক্রয়, উপকেন্দ্র স্থাপন ও উপকেন্দ্রের জন্যে মালামাল ক্রয় এবং ডিজিটাল মিটার ক্রয়ে হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে।

(১)-বি,আর,ই,বি এর তথ্য মতে গত ৭ বছরে দেশে নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে প্রায় ৬০০ টি এতে জমি লেগেছে ১৮০০০( আটার হাজার) শতাংশ এই জমি ক্রয়ের দায়িত্বে ছিলেন সমিতির জিএম সহ কিছু প্রতিনিধি আর বি আরইবি এর এক্সিএন বা বিআরইবির নির্ধারিত অন্য কোন কর্মকর্তা,

প্রকৃত বিষয়টি হচ্ছে যে জমি গুলো ক্রয় করা হয়েছে তার পার্শবর্তী জমির মূল্য বা ক্রয়কালীন বাজার মূল্যের সাথে ক্রয়কৃত জমির দলিল মূল্যের বিস্তর ব্যবধান পাওয়া যাবে,

১ শতাংশ জমিতে গড়ে ১ লক্ষ টাকা অনিয়ম হয়েছে তাহাতে ১৮০০০ (আঠারো হাজার)শতাংশ জমিতে অনিয়ম হয়েছে প্রায়-১৮০০,০০০,০০০ (একশত আশি কোটি) টাকা।

(২)-প্রতিটা উপকেন্দ্রে নির্মানের দায়ীত্ব দেওয়া হয় ঠিকাদারকে, আর ঠিকাদারকে শর্ত দেওয়া হয় বিআরইবির নির্ধারিত কোম্পানির থেকেq ট্রান্সফরমার ক্রয় করার জন্য কারণ ঐ কোম্পানির সাথে তাদের দুর্নীতির গোপন চুক্তি আছে, নির্মীত উপকেন্দ্র গুলোতে টান্সফরমার লেগেছে কোনটায় ৩ টি কোনটায় ৬ টি গড়ে ৪ টি করে ধরলে ৬০০ উপকেন্দ্রে ২৪০০ পাওয়ার ট্রান্সফরমার ক্রয় করা হয়েছে, প্রতি ট্রান্সফরমারে নুন্যতম ৩,০০,০০০/ ৩ লক্ষ টাকা করে ক্রয় দূর্নীতি হলে মোট ক্রয়ে ৭২০,০০০,০০০/ টাকা দুর্নীতি হইছে।

(৩)-এ পর্যন্ত চল্লিশ লক্ষ ডিজিটাল মিটার ক্রয় করেছে বি আর ই বি ,বাজারমুল্য ৮৫০-১২০০ টাকা ,কিন্তু আর ই বি ক্রয় ভাউচার করেছে ২১৫০-২৯০০ টাকা গড়ে মিটার প্রতি ৫০০ টাকা করে হলে ৪০ লক্ষ মিটার ক্রয়ে ১০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে দুর্নীতি হইছে।

(৪)সদ্য অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা মোঃ দহিদুর ইসলামের দুর্নীতির প্রাথমিক তথ্য, তিনি মানব সম্পদ পরিদপ্তরের দায়ীত্বে থেকেও বদলী, পদোন্নতী, নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি টাকারও বেশি কামিয়েছেন। তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রশিক্ষন পরিদপ্তরে কর্মরত থাকাকালীন অবৈধ ভাবে প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তা/কর্মচারী গণকে বে-আইনি ভাবে পাস/উত্তীর্ণ করিয়েও প্রচুর অর্থ কামিয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অগনিত দাপ্তরিক অনিয়মের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানে আছে। ঢাকার রায়ের বাজার ও পান্থপথ এলাকায় তার ২টি বিলাশ বহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। তার নিজ জেলা রংপুরেও আছে ৪ তলা রাজকীয় বাড়ী। ব্যক্তিগত একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ী আছে। এ ছাড়াও তার ঢাকার পার্শবর্তী এলাকায় জমি ও ব্যাংকে বিভিন্ন নামে নগদ অর্থ আছে।

(৫)-আরেকজন অবসর প্রাপ্ত পরিচালক মোঃ মাহাবুবুল বাশার। তিনিও বদলী, পদোন্নতী, নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। তাছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রকার কেনাকাটায় অবৈধ ভাবে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। বি.আর.ই.বি এর বিভিন্ন মামলার ব্যায় বাবদ, মাঠ পর্যায় সমিতি গুলো থেকে পর্যায়ক্রমে স্বারক নং-বাপবিবো/সচি(আইন)/ফাঃ নং-১৪৩.১০৪৮/২০১৪/১৬৪ তারিখ ১০/১২/২০১৪ইং এবং বাপবিবো/সচি(আইন)/ফাঃ নং-১৪৩.১০৫৩/২০১৫/২২১, তাং- ১০/২/২০১৫ইং এই দুই চিঠিতে ২৭,৩০,০০০,০০ (সাতাইশ লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা উত্তলোন করেছেন। উকিল ফি বাবদ এতে দুর্নীতি হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা, সর্বশেষ ২৬/০৬/২০১৫ইং স্বারক নং-বাপবিবো/সচি(আইন)/ফাঃ নং-১৪৩.১০৭৬/২০১৫/৪১০ স্বারকেও মামলার সুনানী বাবদ ৩,৭৪,০০০,০০/-(তিন লক্ষ চুয়াত্তর হাজার) টাকা শুনানী বাবদ গ্রহন করে এতে দূর্নীতি হয়েছে। পরিচালক মাহবুবুল বাশারের ধানমন্ডি ও রায়ের বাজারে প্রায় ৩০০০ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট, পূর্ব রাজাবাজারে প্রায় ১৯৫০ বর্গফুট আরো একটি ফ্ল্যাট এছাড়াও নিজ জেলা গোপালগঞ্জে ২ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ী একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ী আছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয় পত্র ও বড় অংকের টাকা এফডিআর করে রাখা আছে যাহা তদন্তে আরো স্পষ্ট হবে।

(৬)-বর্তমানে কর্মরত পরিচালক মোঃ খালিদ চাকরী কালীন সময়ে প্রশিক্ষন পরিদপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরে দায়ীত্ব পালন করে, এই খালিদ সাবেক বি.আর.ই.বি এর চেয়ারম্যান জনাব মোঃ তৌহিদুর ইসলাম এর আপন শ্যালক হওয়ার সুবাদে কাউকে তোয়াক্কা না করে অবাধে নানান অনিয়ম করেছেন , নতুন গ্রাহক সংযোগ লাইন নির্মান সহ বিভিন্ন ভাবে সে দুর্নীতি করেছেন বিপুল অংকের টাকা। দঃ বাড্ডা এলাকায় প্রায় ২৪৫০ বর্গফুট একটি ফ্ল্যাট, গুলশান ০১ নং এর ১২৮নং রোডে প্রায় ৩০০০ বর্গফুট আয়তনের আরেকটি ফ্ল্যাট একটি টয়োটা গাড়ী লক্ষীপুর তার নীজ এলাকায় ২.৫ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ী যা অন্যের নামে করেছে তার অর্থায়নে, এই খালিদের দূর্নীতির বিরুদ্ধে বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে এর আগেও কয়েকদফা অভিযোগ জমা হলেও আজোও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গৃহীত হয়নি।এই খালিদের ছোট ভাই লক্ষীপুরের কুখ্যাত রাজাকার শফিউদ্দিন এর ছোট ছেলে এবং রায়পুর পৌর মেয়রের জামাতা মোরশেদ আলম লক্ষীপুর সদরের চররুহীতা ইউনিয়নের অধিকাংশ লাইন নির্মানের মাধ্যমে জনগনের নিকট থেকে কোটিটাকা হাতিয়ে নিয়েছে এতেও খালিদের সার্বিক সহযোগিতা, এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে লক্ষীপুরের মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার জনাব আবুল খায়ের মোবাইল নং০১৭১৯৪৪৩২৮ এর কাছে এদের দুর্নীতির আরো তথ্য মিলবে।

(৭)ঢাকা পবিস-৪ এরজেনারেল ম্যানেজার মোঃ মাহবুবুর রহমান গত প্রায় ৬ ছয় বছর যাবৎ মুন্সীগঞ্জ পবিসের দায়ীত্বে ছিল সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেখানে ব্যাপক দূর্নীতি করেছে। আর এই দুর্নীতিতে সহযোগিতা পেয়েছে বি.আর.ই.বি এর দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাগণের নিকট থেক, তিনি মুন্সীগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপকেন্দ্র নির্মান, নতুন লাইন তৈরী, উপকেন্দ্রের জমি ক্রয়, লাইন নির্মাণের মালামাল ক্রয়, ট্রান্সফারমার, মিটার, তার, মিটারবোর্ড, গ্রউন্ডিং রড, এ.সি.আর. ও.সি.আর পাওয়ার ট্রান্সফরমার সহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল ক্রয়ের মাধ্যমে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন। তিনি ঢাকার পান্থপথ এলাকার লাল বাড়ীতে ২০/১ ৫ম তলায় একটি বিশাল বহুল ফ্ল্যাট একটি গাড়ী টয়াটো ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-২৬৪৭ ঢাকাতে আরেকটি বহুতল ভবন নির্মান করছেন, এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে বড় অংকের টাকা সঞ্চয়ে আছে বলে জানাযায়।

সদ্য অবসরে যাওয়া মানব সম্পদ পরিচালক দৌহিদুল ইসলাম,মেম্বার ইন্জিনিয়ার মোস্তফা কামাল,সহ বেশকিছু মেম্বার ও পরিচালকগন এই সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা ও পল্লী বিদ্যুত সমিতির কিছু সংখ্যক জি এম ,(যারা ঢাকার পার্শবর্তী পল্লীবিদ্যুতে কর্মরত)এরা সকলেই নিয়োগ,বদলী,ও ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি করে কোটি-কোটি সরকারী টাকা আত্মসাত করেছে । অবসরে যাওয়ার পরও দৌহিদুল সাহেব কে প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাবান ব্যাক্তি তাকে নিয়োগ দিয়ে রেখে দিয়েছে সিন্ডিকেট সক্রিয় রাখতে ।গাজি পুরে spc pole,steel hardware factory করেছে একজন নির্বাহী কর্মকর্তা তারই এক নিকট আত্মীয়র নামে।এই চক্রের সকলেরই নামে বেনামে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট আছে ঢাকার মিরপু হাউজিং,উত্তরায়,খিলক্ষেত,মোহাম্মদ পুর,ধানমন্ডি, রায়ের বাজার,কলাবাগান,মগবাজার এলাকায় সবই করেছেন নিজের ও স্ত্রী, সন্তান, ভাই,সহ নিকট স্বজনের নামে।

তা ছাড়া আরো যে সকল কেনাকাটায় দুর্নীতি হচ্ছে তা হল, বিভিন্ন ধরনের তার, বিতরণ ট্রান্সফরমার, হার্ডওয়্যারী মালামাল, যানবাহন (মোটরসাইকেল ও পিক-আপ), এসিআর,ভোল্টেজ রেগুলেটর,ফিউজ কার্টআউট ক্রয়ে।

প্রতিটা পন্যই বাজার মূল্যের সাথে ক্রয়মূল্যের ব্যাপক ব্যবধান মিলবে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরকেএন/এসডিপি/১১:০৮পিএম/২৭/১/২০১৯ইং)