• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১১:২৮ পূর্বাহ্ন

নৌকায় ভোট দিন, উন্নয়ন দেব : শেখ হাসিনা


প্রকাশের সময় : মার্চ ২১, ২০১৮, ১০:২২ PM / ৪৩
নৌকায় ভোট দিন, উন্নয়ন দেব : শেখ হাসিনা

ঢাকারনিউজ২৪.কম, চট্টগ্রাম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকায় ভোট দিন, আপনাদের উন্নয়ন দিতে পারব। তিনি বলেন, মানুষের উন্নত জীবনদান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে পিতার মত জীবন দিতে প্রস্তুত।

বুধবার(২১ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি একথা বলেন।

উপস্থিত জনতার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের কাছে নৌকার পক্ষে ভোট চাই। আপনারা নৌকায় ভোট দেন, আমি আপনাদের উন্নয়ন দিতে পারব। আমরা যদি নৌকায় ভোট পাই, আগামীতে ক্ষমতায় আসি, আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা আজকে দেশের উন্নতি করছি, কাদের স্বার্থে? আপনাদের স্বার্থে। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের উন্নতি হবে। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আপনারা আমার এই কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আগামীতে ক্ষমতায় আনবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ আসলে উন্নয়ন হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসলে কী করে? মানুষ খুন-লুটপাট। তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পায় না।

নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৪ সালে ও সরকার হঠানোর নামে ২০১৫ সালে বিএনপি জোটের কর্মসূচির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, তাদের হাত থেকে মা-বাবা থেকে শুরু কোলের শিশু পযন্ত রেহাই পায়নি। ড্রাইভার-হেল্পার কেউ না। খালেদার নির্দেশে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এ সব মানুষদের। কোনো মানুষ মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারতে পারে? পারে না। ওরা কোনো মানুষ না।

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেইনি বলে ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। আমেরিকার গ্যাস কোম্পানি বাংলাদেশের গ্যাস বিক্রি করবে ভারতের কাছে। আমেরিকা ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দিলো না।

এসময় জঙ্গিবাদের উত্থানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই দেশে শায়েখ আবদুর রহমান বাংলা ভাইয়ের মতো জঙ্গি সৃষ্টি করেছে। তারা সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচার করার সময় উদ্ধার করা হয়েছে। কে করেছে এটা? তার (খালেদা জিয়া) ছেলে তারেক রহমান। ক্ষমতায় থাকতে কালো টাকা বানিয়েছে আবার কালো টাকা সাদা করেছে।

তিনি বলেন, এত টাকা আসে কোথা থেকে? মানি লন্ডারিং করেছে, দুর্নীতি করে টাকা পাচার করেছে। তারা দুর্নীতি করে ধরা পড়েছে। এ জন্য সিঙ্গাপুর কোর্টে বিচার হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে টাকা এনে বাংলাদেশের টাকা বাংলাদেশের জনগণের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে এতিমখানার জন্য টাকা আসছে। কোরাআন শরীফে লেখা আছে এতিমের হক কেড়ে নিও না। এতিমের সম্পদ লুট করো না, এতিমকে তার ন্যায্য হক দিয়ে দাও। সেই কোরআন শরীফের নির্দেশ না মেনে একটা টাকাও এতিমকে দেয়নি। সব নিজেরা আত্মসাৎ করেছে।

তিনি বলেন, এ মামলা তো আওয়ামী লীগ সরকার দেয়নি। দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার কারা? তারই বেছে নেয়া মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন-ইয়াজউদ্দিন। তারাই দিয়েছে মামলা, সেই মামলায় আজ শাস্তি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় দুর্নীতি দমন কমিশন এই মামলা করেছে, কোর্ট রায় দিয়েছে। কোর্টের রায়ও তারা মানে না। এটাই তাদের চরিত্র। তারা আইন মানবে না, কানুন মানবে না, কিছুই মানবে না। মানুষের সম্পদ কেড়ে খাবে, এতিমের টাকা কেড়ে খাবে। শাস্তি দিলো কেন এ জন্য হুমকি-ধামকি আন্দোলন। জনগণ কোনো দুর্নীবাজ, জঙ্গি, সন্ত্রাসীর সঙ্গে নাই।

এসময় তিনি বলেন, ‘আমি একটা কথা বলতে চাই, বাবা-মা হারিয়েছি। ভাইদের হারিয়েছি। একজন আপনজন হারালে আপনারা কি সেই কষ্ট সইতে পারেন? আর একই দিনে আমি আমার মা-বাবা, তিন ভাই, ছোট্ট রাসেল ও ভাইয়ের বউদের হারিয়েছি। একমাত্র চাচা, মেজো ফুপু, সেজো ফুপুর বাড়িতে আক্রমণ করে কাউকে বাঁচতে দেয়নি।’

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তাদেরকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছি। এই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণই আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। এ কথা ভুললে চলবে না।

তিনি বলেন, কাজই তাদেরকে (মুক্তিযোদ্ধা) আমাদের সম্মান দিতেই হবে। তাদের ছেলেমেয়ে, নাতি-পুতি পর্যন্ত যেন চাকরি পায়, তার জন্য কোটার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর যদি কোটায় না পায়, তাহলে ইউনিভার্সিটির যারা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়া যাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের এই বিশেষ ব্যবস্থা করতেই হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

এতে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আওয়ামী লীগে উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদন আমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুস ছালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:২০পিএম/২১/৩/২০১৮ইং)