• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন

নীলফামারীতে ধানের ব্লাষ্ট রোগে দিশেহারা কৃষক


প্রকাশের সময় : মে ৬, ২০১৭, ২:১৪ PM / ৪৭
নীলফামারীতে ধানের ব্লাষ্ট রোগে দিশেহারা কৃষক

ঢাকারনিউজ২৪.কম, নীলফামারী : সোনালী ধানের গোছা বাতাসে দোল খেলেও তাতে নেই দানা। রক্ত ঘাম হয়ে ঝরা কষ্টের কাঙ্ক্ষিত ফসল আজ চিটায় পরিপূর্ণ। আর ক’দিন বাদেই ধানের মৌ মৌ গন্ধে কৃষকের ঘর আর আঙ্গিনা ভরে যাওয়ার কথা থাকলেও সেখানে বিরাজ করছে হতাশা আর বিষাদের ছায়া। আগামী দিনগুলো কীভাবে কাটবে এই দু:চিন্তায় কৃষকের কপালে আজ বলি রেখার ছাপ।
দিনে গরম রাতে ঠাণ্ডা, ঘন কুয়াশা, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় নীলফামারীতে ব্রী-২৮ জাতের আগাম ধান আক্রান্ত হয়েছে ছত্রাক জনিত ব্লাষ্ট রোগে। কৃষকেরা এ ঘাতক রোগের কবল থেকে মুখের ভাত বাঁচাতে কৃষি বিভাগ আর বালাই নাশক ডিলারদের পরামর্শে দামী দামী ছত্রাকনাশক স্প্রে করেও বাঁচাতে পারছে না ক্ষেতের ফসল। আগামী দিনে পথে বসার আশঙ্কায় তারা আজ দিশেহারা। তবে কৃষি বিভাগ কৃষকের অভিযোগ অস্বীকার করে সামান্য পরিমাণ জমির ক্ষেত ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান।
নীলফামারী পৌর এলাকার মধ্য হাড়োয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক মজিবর রহমান অভিযোগ করেন, তার চার বিঘা জমির ব্রী-২৮ জাতের রোপা ক্ষেত সবল সতেজ হয়ে বেড়ে উঠেছে লকলক করে। ক্ষেতের গোছাও হয়েছে মজবুত। শীষ বের হওয়ার পরে দানা আসার মুহূর্তে সাদা হতে থাকে ধানের শীষ। কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ওষুধ এনে তিনবার স্প্রে করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। মাত্র তিন চার দিনের মাথায় পুরো ক্ষেতের শীষ সাদা হয়ে যায়। কোনো শীষেই নেই দানা। পরিবার পরিজন নিয়ে আগামী দিনগুলো কীভাবে কাটবে এ আশঙ্কায় দিশেহারা এই প্রান্তিক কৃষক।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, গোটা জেলার প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমির ব্রী-২৮ জাতের একই চিত্র। ক্ষেতের ধানের শীষে নেই কোনো দানা। অনেক কৃষক শান্তনা পেতে ক্ষেত থেকে ধান কেটে নিয়ে গিয়ে মাড়াই করে বিঘা প্রতি সামান্য পরিমাণ ধান পেলেও তার ভাত খেতে পারছে না। এছাড়াও ওইসব খড় গো-মহিষও খাচ্ছে না।
ব্রী-২৮ জাতের সব ধান ক্ষেত ব্লাষ্ট রোগে চিঠা হওয়ায় সর্বস্বহারা কৃষকেরা সরকারের সহযোগিতা দাবি করেছে।
নীলফামারীর বালাই নাশক ডিলার সত্যেন্দ্র নাথ রায় জানান, ব্লাষ্ট রোগ থেকে ধান ক্ষেত বাঁচাতে নামী দামী বালাই নাশক স্প্রে করেও কোনো সুফল পাচ্ছে না কৃষক। এতে কৃষকেরা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. কেরামত আলী বলেন, এবারে ৮২ হাজার হেক্টরে বোরো ধান আবাদ হলেও ব্রী-২৮ জাতের ধান আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার হেক্টরে। এর মধ্যে মাত্র ১৬ হেক্টর জমির ধান ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
তবে ক্ষেত বাঁচাতে কৃষককে সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/২:১২পিএম/৬/৫/২০১৭ইং)