ঢাকারনিউজ২৪.কম, ঢাকা : দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার প্রথম শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
২০ জুলাই, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ফখরুল এই শর্তের কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসাসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। সমাবেশটি ২টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে শেষ হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর এই প্রথম রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করার অনুমতি পায় দলটি।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার অনির্বাচিত অবৈধ। এদের হাত থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। এরা দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির মাধ্যমে ভয়ের রাজ্য তৈরি করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষ অনিরাপদ। তারা স্বাভাবিক মুত্যুর গ্যারান্টি চায়।
মাদক অভিযানের নামে নিরপরাধ ও ছাত্রনেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। কোট সংস্কারের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের প্রথমে তুলে নেওয়া হচ্ছে, সাত-আটদিন গুম রেখে পরবর্তীতে পুলিশি নির্যাতনে নেওয়া হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আজকে সরকার একটিমাত্র উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দী রেখেছে। সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চায়। তারা খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে ফের নির্বাচনের নামে সাজানো নাটক করতে চায়।
কিন্তু আগামী নির্বাচনের প্রথম শর্ত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, খালেদাকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ নির্বাচন হতে দেবে না।’
দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশের মানুষ আইনের শাসন পাচ্ছে না। রাজনীতিবিদরা কথা বলতে পারছেন না। এই ধরনের অবস্থা চলতে পারে না। জাতীয় ঐক্যের মাধমে আন্দোলন গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
ক্ষমতার জন্য নয়, বিএনপির আন্দোলন ও বিএনপি আন্দোলন করছে দেশের মানুষের অধিকার ফিরে আনতে; গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়।’
সমাবেশে নবগঠিত ৮টি রাজনৈতিক দলের গঠিত জোটকে অভিনন্দন জানিয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে ‘জগদ্দল পাথরের ন্যায় বুকে চেপে বসে থাকা’ সরকারকে সরাতে আন্দোলনে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ নির্বাচন হলে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ২০ আসনও পাবে না বলেনও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ আদালত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ও অনশন, গণস্বাক্ষর, স্মারকলিপি প্রদান, কালো পতাকা প্রদর্শন, লিফলেট বিতরণ, প্রতিবাদ মিছিল এবং বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে প্রতিবাদ সমাবেশের মতো বিষয় ছিল। কিন্তু রাজধানীতে বিক্ষোভ/প্রতিবাদ সমাবেশ করতে চেয়ে অন্তত সাত থেকে আটবার অনুমতি চেয়েও পায়নি দলটি।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম সমাবেশ সঞ্চালনায় ছিলেন। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ। (প্রিয়.কম)
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৭:১৫পিএম/২০/৭/২০১৮ইং)
আপনার মতামত লিখুন :