• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:৫০ অপরাহ্ন

“নিরাপদ সড়ক চাই-স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা চাই”


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৪, ২০১৮, ১:১১ PM / ৩০
“নিরাপদ সড়ক চাই-স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা চাই”

ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ : সড়ক পথে মৃত্যুর মিছিলে ঝরে যাচ্ছে- প্রতিদিনই কত তাজা প্রাণ! অকালেই নিভে যাচ্ছে- জীবন প্রদ্বীপ! তাই নিরাপদ সড়কের প্রতিবাদে যখন দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে, এরই মধ্যে গতকালও (৩ আগস্ট) দেশের ৬টি স্থানে চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালনোয় ঝরে গেছে ৮টি তাজা প্রাণ। ধ্বংসের শেষ সুড়ঙ্গে এসে দাঁড়িয়েছে ৮ টি পরিবার। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৩ জন। মিডিয়ার খবরে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রাজধানীতেই বাসের ধাক্কায় মারা গেছেন ১ জন মোটরসাইকেল আরোহী। কীভাবে হুশ ফিরবে এই ‘ঘাতক’ চালকদের- এমন প্রশ্নই করছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা যখন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে হয়, কিভাবে পরীক্ষা করতে হয় কাগজপত্রের তখন কেন এই দুর্ঘটনা। সড়ক-মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারা কী করছেন? যে কোন মূল্যে থামাতে হবে এই মৃত্যুর মিছিল। রাজধানীর মগবাজারে বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। চালককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। কুমিল্লার দাউদকান্দির শহীদনগরে রাস্তা পারাপারের সময় গৌরীপুর সুবল-আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র আলিফ হাসান (১৪) নিহত হয়েছে। টাঙ্গাইলের সখীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুল ছাত্রী নিহত হয়েছে। শরীয়তপুরে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন টমটম গাড়ি চালক নিহত হয়েছেন। রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা গেছেন ৩ জন, আহত হয়েছেন ৩০ জন যাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর মগবাজারের ওয়ারলেস গেট সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল ইসলাম রানা (৩০) ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতাল মগবাজারের নার্স (ব্রাদার) ছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা সাতক্ষীরা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটিতে (ঢাকা মেট্রো ঝ ১৪-০২১৪) আগুন ধরিয়ে দেয়। চালক ইমরান সরদার (২৫) পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় জনতা তাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটি মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার দিয়ে নেমে মালিবাগের দিকে যাচ্ছিল। ওয়্যারলেস গেটের ঢাল দিয়ে নামার পরই বাসটি মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয়। আরোহী রানা ছিটকে পড়ে গুরুতর জখম হন। এ সময় একটি রিকশাকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। এতে রিকশার চালক ও দুই যাত্রী সামান্য আহত হন। স্থানীয় লোকজন রানাকে নিকটস্থ সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেলা সোয়া ২টার দিকে চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করেন। ক্ষুব্ধ জনতা বাসটি আটকে এর চালককে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে যায়। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। কঠোর অাইনের ও তা প্রয়োগের অভাবে মৃত্যুর মিছিল থামছে না। সারা দেশ যখন সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উত্তাল তখনও মৃত্যুর কাফেলা থেমে নেই।কবে পাবে নিরাপদ সড়ক বাংলাদেশ, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন (?) হয়ে দাঁড়িয়েছে! তাই; এখন বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীরা রাজপথে দাবি আদায়ে নেমেছেন নির্ভয়ে। সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও আন্দোলন ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। টাইমলাইনের পোস্ট আর প্রোফাইলে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে যেন! নিরাপদ সড়ক চাই? আর শিক্ষার্থীসহ দেশের সকল সচেতন মহল ও নাগরিকের একটাই দাবি ও সর্বত্রই স্লোগানে আওয়াজ দিচ্ছে- “নিরাপদ সড়ক চাই-স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা চাই?”

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১:০৮পিএম/৪/৮/২০১৮ইং)