• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

না’গঞ্জ জেলা যুবদলে ভাইটাল পোষ্টে জাকির খানের দুই অনুসারী


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৫, ২০১৯, ৭:০২ PM / ৬৪
না’গঞ্জ জেলা যুবদলে ভাইটাল পোষ্টে জাকির খানের দুই অনুসারী

বিশেষ সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদল কমিটির পর এবার জেলা যুবদলে ভাইটাল দুই পদে স্থান পেয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের দুই অনুসারী। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর শহিদুল ইসলাম টিটু ও গোলাম হোসেন ফারুকের নেতৃত্বে জেলা যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকায় ওঠে আসে তাদের নাম। তারা হলে নবগঠিত জেলা যুবদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পারভেজ মল্লিক ও জয়েন্ট সেক্রেটারী মো: দেলোয়ার হোসেন শাহ্। তারা দুই জনেই আগে মহানগর মৎস্যজীবী দলের নেতা ছিলেন।

দেলোয়ার হোসেন শাহ্ দীর্ঘদিন মহানগর মৎস্যজীবী দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পারভেজ মল্লিক একই সংগঠনের সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা এ পদে থেকে সাবেক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জাকির খানের পক্ষে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছে।

অতিতে যেখানে পুলিশী হয়রানীর ভয়ে নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে ভয় পেতো, সেখানে জাকির খানের এই একনিষ্ট কর্মীরাই মাঠে থেকেছেন। হামলা মামলার শিকার হয়েও কখনো মাঠ ছেড়ে যাননি তারা। রাজপথ দখলেই রেখেছেন। কিন্তু দল থেকে তারা তেমন মূল্যায়ন পাননি। বরাবরই দল থেকে ফয়দা লুটেছে সুবিধাবাদিরা। এ নিয়েও জাকির খানের অনুসারীরা আন্দোলন করেছেন। অবশেষে একটু দেরিতে হলেও তাদেরকে মূল্যায়ন করলো দল। দীর্ঘ প্রায় ২ যুগ পর জেলা যুবদলের কমিটিতে ভাইটাল পোষ্টে তাদের নাম লিপিবদ্ধ হওয়ায় দু’জনেই সস্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, এখন পোষ্ট পদবী বড় বিষয় নয়, সবার আগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হওয়াটাই বড় ব্যাপার।

নবগঠিত জেলা যুবদলের সহ সভাপতি পারভেজ মল্লিকের কাছে তার অভিব্যক্তির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কয়েক যুগ যাবৎ নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কোন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিলো না। এ বছর শহিদুল ইসলাম টিটু ও গোলাম হোসেন ফারুকের নেতৃত্বে যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে, এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানাই। তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য একজন নেতার যা যা করনীয় তারা তাই করে দেখিয়েছেন।

তিনি বলেন, এতদিন কমিটি হইছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার মত পরিবেশ সাবেক নেতারা সৃষ্টি করতে পারেনি। বর্তমানে আমার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে, এ অবস্থায় টিটু ও ফারুক ভাই যুবদলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তাদের এই পূর্ণাঙ্গ কমিটিটা একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে, আমি মনেকরি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আমার মা জেলে এ অবস্থায় পদ পদবীটা আমি বড় মনে করিনা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আর্দশে গড়া দলের সাথে অর্ন্তভূক্ত হয়েছি। এটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার। আমি কখনো কোনদিন পদ পদবীর জন্য রাজনীতি করি নাই, আর ভবিষতেও করবো না। আমি মনেকরি, পদ পদবীর চাইতে আমি জিয়ার সৈনিক, জিয়ার আর্দশে নিয়ে রাজনীতি করতে চাই আর এটাই আমার বড় পরিচয়।

তিনি যুবদলের সকল নেতাকর্মীদের প্রতি দাবি রেখে বলেন, যেহেতু আমার মা কারাবন্দি, আমার মাকে যে কোন কিছুর বিনিময়ে মুক্ত করতে হবে। কেন? শুধুমাত্র আমাদের যুবদলের জন্য নয়, সারাদেশের তথা ১৬ কোটি মানুষের গণতন্ত্রের মুক্তির চাবিকাঠি যার কাছে সেই মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য প্রয়োজনে জীবন বাজি রেখে কাজ করতে হবে। এ জন্য সকল প্রকার হিংসা বিদ্বষ ভুলে, কে কার অনুসারী, কে কার কর্মী এসব চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলে শুধুমাত্র শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসেবে দেশমাতা মুক্তির জন্য আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বো, এটাই হোক নব গঠিত কমিটির অঙ্গিকার।

এদিকে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে নব গঠিত কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহ্ একই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আসলে আমার কাছেও পদ পদবী বড় কথা না। যে পারে সে সদস্য পদে থেকেই অনেক কিছু করতে পারে। আমার নেতা জাকির খান সাবেক জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলো। তিনি ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট হয়েও দেখাগেছে, তিনি মূলদল সহ সকল অঙ্গসংগঠনগুলোতেও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকরা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। আমি তার কর্মী হিসেবে তার কাজ থেকে এই জিনিষটাই শিখেছি যে, দলের জন্য কাজ করার ইচ্ছা থাকলে যে কোন পদে থেকেই করা যায়। শুধু এ জন্য চাই দলের প্রতি ভালোবাসা ও আদর্শ। জাকির খান তার হৃদয়ে শহীদ জিয়ার আর্দশ লালন করতেন এবং তার আর্দশ নিয়েই রাজনীতি করতেন। তাই তার দ্বারাই ছাত্রদলের নেতা হয়েও মূল দলের ভূমিকার রাখা সম্ভব হয়েছে। আমরা এমন নেতাকেই বার বার চাই।

তিনি বলেন, এখন আমাদের মাথায় শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া অন্যকোন চিন্তা নাই। কেননা, তার মুক্তি মানে এ দেশের গণতন্ত্রের মুক্তি। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার মুক্তির জন্য কাজ করে যেতে হবে। আমরা জাকির খানের নেতৃত্বে পূর্বেও মাঠে ছিলাম, আছি, থাকবো। জাকির খান আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, যতদিন না দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হয়, ততদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে। আমরা তার নির্দেশনা মোতাবেক খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে কোন আন্দোলন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত আছি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৫ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে ঠাই পায় জাকির খানের দুই অনুসারী। জেলা ছাত্রদলের এ কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাকিব হাসান রাজ ও মহানগর কমিটিতে জাকির খানের চাচাতো ভাই শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন লিংরাজ খানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/৭:০২পিএম/২৫/৩/২০১৯ইং)