• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন

না’গঞ্জে জ্বীন তাড়ানোর নামে শারীরিক নির্যাতন : নারী নিহত


প্রকাশের সময় : জুন ২০, ২০১৯, ৪:৫০ PM / ৩৩
না’গঞ্জে জ্বীন তাড়ানোর নামে শারীরিক নির্যাতন : নারী নিহত

সিদ্ধিরগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিদ্ধিরগঞ্জে ফারুক হোসেন নামে সেই কবিরাজ ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীপাড়াস্থ বিল্লাল মিয়ার বাড়ীর ২য় তলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জ্বীনে আছর করেছে বলে চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতনে শাহানাজ আক্তার শিখা (২৫) নামে এক সন্তানের জননীকে হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রাতে মামলা করেছেন নিহতের মা সুরাইয়া বেগম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে কবিরাজ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে।

নিহত শাহানাজ আক্তার শিখা ঢাকার কদমতলী থানাধীন সাদ্দাম মার্কেট এলাকার শাহ আলমের মেয়ে। এ ঘটনায় ভন্ড কবিরাজ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিনকে আটক করেছে পুলিশ। ফারুক মিজমিজি চৌধুরীপাড়া বিল্লাল সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও আব্দুল মতিনের ছেলে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঈদুল ফিতরের ২/৩ দিন পর হতে শাহনাজ আক্তার শিখা তার মাকে প্রায়ই কোন কিছু মনে থাকেনা বলে জানায়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসার জন্য ১৫ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ১ সপ্তাহের ঔষধ দেয়। ঔষধ খাওয়ানোর একদিন পর মানসিক অবস্থা ভালো হয়না এবং সামনে যাকে পাকে তাকেই মারধর করে শাহানাজ। পরে প্রতিবেশীদের পরামর্শে ১৬ জুন কবিরাজ ফারুক হোসেনকে বাসায় ডেকে নিয়ে আসা হয়। শাহনাজকে দেখে জ্বীনে আছর করেছে বলে এক সপ্তাহের কবিরাজী চিকিৎসায় সে ভালো হবে শাহনাজের পরিবারকে জানিয়ে দশ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করে। একদিন চিকিৎসা চালিয়ে উন্নতি না হওয়ায় নিজ বাসায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেয় কবিরাজ ফারুক। তার কথামত ১৮ জুন সন্ধ্যায় কবিরাজের বাসায় পাঠাতে রাজি হয় শাহনাজের পরিবার। নিজের বাসায় নিয়ে কবিরাজ ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন কবিরাজি চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতন চালায় শাহনাজের উপর। প্রথমে শাহনাজকে ঝাড়ু দ্বারা পেটানো হয়। পরে হাত ও পায়ের আঙ্গুল মোচড়ানো হয়। এতে শাহনাজ চিৎকার করলে তার গলায় এবং বুকে পাঁ দিয়ে চেপে ধরে জ্বীনকে চলে যেতে বলে ভন্ড কবিরাজ দম্পতি। নির্যাতনে শাহনাজ দুর্বল হয়ে পড়লে শাহনাজ ঘুমাচ্ছে বলে তার পরিবারকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় কবিরাজ। পরদিন শাহনাজের অবস্থা খারাপ জানিয়ে কবিরাজ ফারুক শাহনাজের মা সুরাইয়াকে ফোন করা হলে তারা কবিরাজের বাসায় গিয়ে শাহনাজের মৃতদেহ ফ্লোরে চাদর মোড়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ফারুক হোসেন চাঁদপুরের উত্তর মতলব থানাধীন মান্দার আলী এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে এবং জেসমিন আক্তার ফারুক হোসেনের স্ত্রী। তারা সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি চৌধুরীপাড়ার বিল্লাল হোসেনের বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতো।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জসিম উদ্দিন জানান, শাহনাজ আক্তার শিখার শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তার পরিবার কোন এক মাধ্যমে ভন্ড কবিরাজ ফারুকের সাথে সাক্ষাত করলে ফারুক জানায় শিখাকে জিনে ধরেছে। তাকে চিকিৎসার নামে হাত পা বেধে শারীরিক নির্যাতন করার এক পর্যায়ে শিখা অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় কবিরাজ দম্পতিকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের করা হয়েছে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৪:৫২পিএম/২০/৬/২০১৯ইং)