• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

না’গঞ্জের গোলাম দস্তগীর গাজী হলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৬, ২০১৯, ৬:৪৪ PM / ৬৬
না’গঞ্জের গোলাম দস্তগীর গাজী হলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী

মো. রাশেদুল হাসান, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের অবসান ঘটিয়ে এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী মন্ত্রী হচ্ছেন। তিনি হতে যাচ্ছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী।

(৬ জানুয়ারী) সোমবার বিকেলে মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ করা হবে। গাজী (নারায়ণগঞ্জ-১) তথা রূপগঞ্জ আসনের এমপি। ২০০৮, ২০১৪ ও সবশেষ গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হন গাজী। যদিও তার মনোনয়ন নিয়ে ছিল নানা নাটকীয়তা।

জানা যায়, এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের বর্তমান ক্ষমতানসীন দলের মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হন এদের মধ্যে দুইজন হ্যাট্টিক বিজয় অর্জন করেছেন। তাঁরা হলেন (নারায়ণগঞ্জ-১) (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী এবং (নারায়ণগঞ্জ-২) (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু।

একই সাথে অন্যরা টানা দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন (নারায়ণগঞ্জ-৩) (সোনারগাঁ) আসনে লিয়াকত হোসেন খোকা, (নারায়ণগঞ্জ-৪) (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে শামীম ওসমান ও (নারায়ণগঞ্জ-৫) (সদর-বন্দর) আসনে সেলিম ওসমান। আর শামীম ওসমান ২০১৪, ২০১৮ ও ১৯৯৬ সালে এমপি নির্বাচিন হন।

প্রতিবারের মতো এবারেও আওয়ামী লীগের তিনজনকে ঘিরে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী পরিষদে জায়গা নিয়ে আলাপ আলোচনায় সরগরম হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জ।

সূত্র বলছে, রাজধানী লগোয়া হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে রাজনীতির সূতিগার হিসেবে পরিচিত নারায়ণঞ্জ। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে এ জেলার অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ফলে সব সরকারই রাজনৈতিক বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জকে গুরুত্বের সহিত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছেন। ফলশ্রুতিতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (আওয়ামীলীগ) সরকারের সময় (১৯৭৩ এর নির্বাচনে) এমপি হয়েছিল নারায়ণগঞ্জের ভাষা সৈনিক একেএম সামসুজ্জোহা। সত্তর দশকের শেষের দিকে জিয়াউর রহমানের (বিএনপি) শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ থেকে এম এ সাত্তারকে পাটমন্ত্রী করা হয়। তিনি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের এমপি ছিলেন। এম এ সাত্তারকে মন্ত্রী করার মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসী প্রথম মন্ত্রীত্বের স্বাদ পায়।

আশির দশকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের (জাতীয় পাটি) শাসনামলে সোনারগাঁয়ের আ ন ম বাহাউল হককে উপ-মন্ত্রীর পদমর্যায় জেলা পরিষদের চেয়াম্যান করা হয়। ফলে তখন প্রথম উপমন্ত্রীরও স্বাদ পেল নারায়ণগঞ্জবাসী। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে আব্দুল মতিন চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়। মতিন চৌধুরী রূপগঞ্জ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) করার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর মুখ উজ্জল হয়ে উঠে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনেই আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জবাসীর কপালে মন্ত্রী জোটেনি। ২০০১ সালে আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসে। তখন আব্দুল মতিন চৌধুরীকে পুনরায় বস্ত্রমন্ত্রী করা হয়। একই সাথে সোনারগাঁও আসন থেকে নির্বাচিত এমপি অধ্যাপক রেজাউল করিমকেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়। একই জেলায় দুইজনকে মন্ত্রী করার কারণে আরেক ধাপ নারায়ণগঞ্জবাসীর মুখ উজ্জল হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে বিআরটিসির চেয়ারম্যান করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আবার আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসে।

এরপর থেকে আওয়ামীলীগ সরকারই সবসময় সরকার গঠন করে আসছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে আওয়ামীলীগ তিনটি ও তাদের শরিক জাতীয় পাটি দুটি আসনে এমপি নির্বাচিত হয়। কিন্তু এবারের মন্ত্রী সভায়ও নারায়ণগঞ্জ স্থান পায়নি। তার ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ জয়লাভ করে। এই সরকারের মন্ত্রীসভার গঠন নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মন্ত্রীসভা গঠন করা হতে পারে।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৬:৪৩পিএম/৬/১/২০১৯ইং)