• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১২:১১ পূর্বাহ্ন

নব্য জেএমবির নামে বাংলাদেশে মূলত হামলা চালাচ্ছে আইএস -রোহান গুণারত্নে


প্রকাশের সময় : মার্চ ১২, ২০১৭, ৬:০৯ PM / ৫২
নব্য জেএমবির নামে বাংলাদেশে মূলত হামলা চালাচ্ছে আইএস -রোহান গুণারত্নে
  • অনলাইন ডেস্কঃ

নব্য জেএমবির নামে বাংলাদেশে যেসব জঙ্গিরা হামলা চালাচ্ছে তারা হোম গ্রোন (দেশে গজিয়ে ওঠা) নয়, তারা মূলত আইএস। ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে হত্যা ও হলি আর্টিজানের হামলাও আইএস সদস্যরাই করেছে। পুলিশ এটা জানলেও কৌশলগত কারণে হয়তো তারা তা স্বীকার করছে না বলে দাবি করেছেন সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেররিজম রিসার্চের (আইসিপিভিটিআর) পরিচালক রোহান গুণারত্নে। তিনি বলেছেন, দেশের জঙ্গিদের আইএস বলে স্বীকার করে নিয়েই তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত।

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনের লক্ষ্যে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে শুরু হওয়া পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে আজ রবিবার (১২ মার্চ) দুপুরে অধ্যাপক রোহান গুণারত্নে এসব কথা বলেন। এ সময় ১৪টি দেশের পুলিশ প্রধান ছাড়াও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পুলিশের শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ও অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রোহান গুণারত্নে বলেন, ‘গুলশানের হলি আর্টিজানে আইএস জঙ্গিরাই হামলা করেছিল। তারা তিনটি ভাগে বিভক্ত ছিল। আর এই জঙ্গিদের হামলা প্রতিরোধে কমান্ডোদের অপেক্ষা করাও ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ, জঙ্গিরা তাদের টার্গেটদের প্রথমেই হত্যা করে ফেলে। পরের সময়টুকু তারা আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রোপাগান্ডা চালানোর কাজ করে। এছাড়া, ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজারকেও আইএস জঙ্গিরাই হত্যা করে। বর্তমানে পুলিশ যাদেরকে নব্য জেএমবি বলছে, তারা মূলত আইএসের সদস্য।’ হলি আর্টিজানে হামলার সময় হামলাকারী জঙ্গিরা যোগাযোগের জন্য যেসব মাধ্যম ব্যবহার করেছিল, সেগুলোর প্রতি তার প্রতিষ্ঠান আইসিপিভিটিআর নজর রেখেছিল বলেও জানান তিনি।

এসব জঙ্গিকে আইএস হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া উচিত দাবি করে সিঙ্গাপুরের এই অধ্যাপক জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি দমনের জন্য তার মতো নেতৃত্বের প্রয়োজন রয়েছে।’

বাংলাদেশ যদি এসব জঙ্গিদের আইএস বলে স্বীকার না করে তাতে সমস্যা কোথায় জানতে চাইলে রোহান গুণারত্নে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশও জানে তারা যাদের সঙ্গে লড়াই করছে তারা আইএস। তাই সেটা স্বীকার করেই লড়াই করতে হবে।’

২০১৪ সালের পর থেকেই বাংলাদেশে আইএস কাজ করছে দাবি করে আইসিপিভিটিআর পরিচালক বলেন, ‘পুলিশ, র্যা ব, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন সংস্থা জঙ্গি দমনে কাজ করছে। এই কাজ সমন্বিতভাবে না হলে জঙ্গি দমন সম্ভব নয়। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো জঙ্গিবাদের বড় ক্ষেত্র উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘সব বড় বড় ধর্মেই ধর্মীয় সন্ত্রাসী রয়েছে। তবে ইসলাম কখনই সন্ত্রাসবাদকে পছন্দ করে না, প্রশ্রয়ও দেয় না।’ গুণারত্নের এ ব্ক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত পুলিশের এক কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, ‘একতরফাভাবে কওমিপন্থীদের জঙ্গি বলা ঠিক হবে না। তাদের সঙ্গেও মিশতে হবে, কথা বলতে হবে। তাদেরকেও কথা বলতে দিতে হবে।’

সাধারণ অপরাধীদের সঙ্গে জঙ্গিদের পার্থক্য দেখাতে গিয়ে গুণারত্নে বলেন, ‘সাধারণ অপরাধীরা পুলিশ দেখে পালাতে চায়। আর জঙ্গিরা মরতে চায়। হলি আর্টিজানে হামলার পরও জঙ্গিরা কোনও ধরনের দর-কষাকষিতে যায়নি।’

বিটি/ক্যানি