• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আইন বন্ধ কর


প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮, ১০:০৩ PM / ৩২
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আইন বন্ধ কর

মুশফিকুর রহমান : শাহবাগ সারা বাঙ্গলাকে জাগিয়ে তুলেছিল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রিয় জীবনে সকল অবস্থায়, ব্যবস্থায় ধর্মের অপ: ব্যবহার নিশে^ষিত করে, তবে ধর্মের মান্যতা প্রসূত ধর্ম যার রাষ্ট্র সবার এবং সাংবিধানিক সেক্যুলারিজম পুন: প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৭১ সালে যে সব মূলনীতি নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। ধর্ম নিরপেক্ষ ছিল তার মধ্যে একটি ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগষ্ট জাতির জনকের হত্যা কান্ডের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার স্বপেড়বর বিলুুপ্ত ঘটে ছিল। সামরিক শাসন মসনদে বসে ধর্ম নিরপেক্ষতার পরিবর্তে ইসলাম ধর্মকে রাজনীতির প্রধান অস্ত্র হিসাবে বেচেঁ নিল। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে সেনা শাসক জিয়াউর রহমান ৭১ এর যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম গং তমা জামায়াত ইসলামীকে বাংলাদেশে রাজনীতি করবার পথ খূলে দিল। তখন থেকে শুরু হলো উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদের রাজনীতি। শাহবাগে সব শ্রেনী পেশার মানুষ এসেছিলেন এ সত্যকে স্বীকার করার সুনেত্র দৃষ্টিহীন হওয়ার কারনে আওয়ামী লগি নিজেই প্রগতিহীন এক প্রভাবে বলয়ের মধ্যে নিজেদের অবস্থান নির্ণয় করেছেন। সৃজন, শক্তি, সম্মান আর প্রাপ্তির নতুন উদ্দীপনা নিয়ে জেগে উঠলো শাহবাগ। সামাজিক ন্যায়বিচার ও আধুনিক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়, ধর্মনিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার বিকল্প নেই। একটি সমাজ বা রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্ম, পেশা, বিশ^াস ও প্রথার মানুষ বাস করে। তারা আশা করে সংখ্যাগুরুর তত্বের উর্দ্ধে গিয়ে ন্যায়বিচার পাবার। পঁচরধরা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থার গণতন্ত্র ও ধর্ম উদ্ধারের নামে ব্যাহত হচ্ছে ন্যায়বিচার। ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা ও ধর্মনিরপেক্ষ মিডিয়া আলোকিত করতে পারে একটি রাষ্ট্রকে। আমার জ্ঞানের গভীরতা খুবই কম। ভাবনা থেকে লেখা, তবে প্রাসঙ্গিক। বিচার ব্যবস্থায় ধর্মের প্রভাব আমরা অঙ্গীকার করতে পারিনা। বিশ^জুড়ে অনেক দেশ ত্যাগের বিচার ব্যবস্থাকে ধর্মীয় বলয়ের বাহিরে নিয়ে এসছে। তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্যে অন্যতম। যুক্তরাজ্যে ধর্ম নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার প্রতিযোগিতার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে। তারা প্রমাণ করেছে মানুষ বা রাষ্ট্রের পরিচয় ধর্ম নয়। একটা দেশে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের বেশী অনুসারী থাকতে পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়। তাই রাষ্ট্র , বিচার ব্যবস্থার উচিৎ অন্যদের প্রতি বিরুপ আচরণ না করা। যুক্তরাজ্যে ব্ল্যাসফেমি আইন তুলে নিয়েছে। বল্যাসফেমি আইনটি মানবাধিকারের সাথে সংঘর্ষপূর্ণ এবং বিশ^জুড়ে এ আইনের অপব্যাবহার হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালুগু অধার্মিক, ভিন্ন প্রথার বিশ^াসীদের নির্যাতনের জন্য কৌশলে এ আইন ব্যবহার হচ্ছে। মাত্র ৪৭ বছর আগের কথা, ১৯৭১ সাল, সকল মানুষ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ স্বাধীন হয়। মৌলবাদীরার স্বাধীনতার ডিবরোধী ছিল। ধর্ম ও পাকিস্তান রক্ষার নামে মানুষ হত্যা, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছিল। হিন্দুদের প্রতি নির্যাতন করেছিল। ইতিহাস তার স্বাক্ষী। সংখ্যালগু নির্যাতন, ধর্ম নিরপেক্ষ ও মুক্তচিন্তায় বিশ^াসীদের নির্যাতন ও হত্যা আজও থামেনি। কারণ আমরা ব্যার্থ হয়েছি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়। বাংলাদেশে মৌলবাদীরা ব্ল্যাসফেমি আইনের জন্য আন্দোলন করছে। তারার জানোন এ আইন মানবাধিকার ও শান্তির পরিপন্থী। এটি রাজনৈতিক যন্ত্রাংশ হিসাবে ব্যবহার হবে এবং কৌশলে ব্যবহার হবে মুক্তমনা ও ঈশ^র অস্বীকৃতিকারি দমনে। শাহবাগই প্রজন্মের সত্যের শক্তি। এখন প্রজন্মের সত্যের সামনে যারা বেঈমান হয়ে দাড়িঁয়েছে আজ তারাই ডা: ইমরান ও গণজাগরন মন্চের অনুসারীদের হত্যার চেষ্টা করছে। লোভ, লালসা, ভোটের ভাগ আর ক্ষমতায় টিকে থাকার মায়াজাল আওয়ামী লগিকে সাহসের সীমাবদ্ধতায় আটকে দিয়েছে। স্যেকুলারিজম ধর্ম অস্বীকার না করে সব ধর্মের মানুষের সমান সহবস্থানে বিশ^াসী।  শাহবাদ ছিল মৌলবাদের বিরুদ্ধে স্যেকুলার বাংলাদেশ গড়ার জীবনদায়ী প্রেরনা। অর্থাৎ ধর্মের মান্যতায়, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। শাহবাগ ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী থেকে আজ অবদি রাজাকার নিধনের মগ্নতা থেকে এক চুলও সরে আসেনি।  বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ষাট হাজার। এই সব মাদ্রাসায় কোমলমতি শিশুরা কি শিখছে সেই প্রশ্ন আগামী কয়েক বছর পরের জন্য থাক। বাংলাদেশে মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক লক্ষ ষাট হাজার (কম বেশী)। গড় হিসেব দুই জন মূলধারার ছাত্রের সাথে এক জন মাদ্রাসার ছাত্র বেড়ে উঠছে। ফলে তৈরি হচ্ছে সামাজিক আদর্শিক দ্বন্দ। আর এই দ্বন্দ সামাজিক স্মপ্রীতি বজায় রাখা অতিশয় দুরুহ করে তুলছে। আর এই দ্বন্দ নিরশনের একমাত্র উপায় মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করে উন্নত বিশে^র অনুপ্রাণিত একমাত্রিক মূলধারার মর্ডানাইজড এডুকেশন। প্রায় দুই হাজার বছর আগের এই শিক্ষা ব্যবস্থায় না আছে জ্ঞানিক বোধ না আছে উন্নত কোন জীবন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার উদগ্র বাসনা। শাহবাগের গণজাগরন মন্চের মূল স্পিরিটে ধর্মের মান্যতা অমান্যতার বাড়া বাড়ির চেয়ে ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার দার্শনিক সত্যের প্রতিষ্ঠা নির্ণিত হয়েছে। রাজাকার বিরোধী, ৭১ বিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী নিয়ে শাহবাগের গণজাগরণ মন্চের আহ্বানকে নিরেট সুনিপণ পরিকল্পনা মনে করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষেরা। আমরা যারা উগ্র ইসলামীকে মৌলবাদের কাছে জীবন রাজি রেখে ধর্ম নিরপেক্ষ একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বি-নির্মানের স্বপ্ন দেখছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধে স্বপক্ষের রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ধর্ম নিরপেক্ষতাকে বাংলাদেশের রাপষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বহাল রেখে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। তা না করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেফাজত ইসলামীর নামে রাজনৈতিক আপস করে বসলেন। আবারো উগ্র ইসলামীকে মৌলবাদের দিকে হাটতে শুরুর করলো বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক এই মৌলবাদে গোষ্ঠরি সাথে রাজনৈতিক সমজোতা মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে আরো উস্কে দিবে। যুদ্ধপরাধীর বিচার চাওয়া যদি নাস্তিকতা হয় সেটা ধারণ করেও আসুন না আরেকবার রাজাকারের গলার পর রাজাকারী ও ধর্মান্ধবাদী রাজনীতি ও নিও রাজাকারী চিন্তকদের গলায় পাঁস পরাই। আস্তিক্য-নাস্তিক্যর রাজনীতি বন্ধ হোক। আমাদের স্লোগান হোক-সোচ্ছারে জানিয়ে দেই। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আইন করে বন্ধ কর।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৯:৫৬পিএম/২৫/৯/২০১৮ইং)