• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০১:৩১ অপরাহ্ন

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তৃষ্ণার ঢাবি জয়ের গল্প…


প্রকাশের সময় : জুলাই ২০, ২০১৮, ৫:৫৭ PM / ৫৪
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তৃষ্ণার ঢাবি জয়ের গল্প…

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : দুই চোখে আলো নেই। নিভে গেছে এসএসসি পরীক্ষার আগেই। কিন্তু তাতে দমেনি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সাদিয়া আফরিন তৃষ্ণা। অদম্য ইচ্ছাশক্তি দমিয়ে রাখতে পারেনি তার প্রখর প্রতিভাকে। দৃষ্টিহীন অবস্থায় পড়ালেখা করে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। হতদরিদ্র নাইট গার্ড পিতা মিজানুর রহমানের স্বপ্ন মেয়ে পড়ালেখা করে শিক্ষক হবেন। দৃষ্টিহীন তৃষ্ণার ঢাবি জয়ের গল্প এলাকায় অনেকটা রুপকথার মতো। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ব্রাহিমপুর গ্রামের হতদরিদ্র মিজানুর রহমানের প্রথম সন্তান সাদিয়া আফরিন তৃষ্ণা। পিতা মিজানুর শৈলকুপার গাড়াগঞ্জ বাজারের হান্নান ফিলিং স্টেশনে ৫ হাজার টাকায় চাকরী করেন নৈশ প্রহরী হিসেবে। এই টাকায় তার সংসার চলে না। অতি কষ্টে মেয়েকে পড়াচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে। পিতার ভাষ্যমতে, ২০০৭ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার আগেই চোখে ঝাপসা দেখা শুরু করেন। রংপুর, সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ ঢাকা ইসলামীয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েও ধরে রাখা যায়নি তৃষ্ণার চোখের আলো। ওই বছরের শেষের দিকে তার দুই চোখের আলো নিভে যায়। দৃষ্টি হারানোর পর কখনো একা একা পড়ার সক্ষমতা হয়নি। কিন্তু একটুও মনোবল হারাননি। এই অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা ব্যাপিষ্ট চার্চ মিশনারিজ স্কুলে। কৃতিত্বের সাথে অষ্টম শ্রেণী পাশ করার পর তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে। ২০১৫ সালে এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হয় বেগম বদরুন্নেছা মহিলা কলেজে। সেখান থেকে পাশ করে ভর্তি হন ঢাবিতে। তৃষ্ণা জানান, শিক্ষকদের লেকচার রেকর্ড করে তাকে পড়তে হয়েছে। এখন লেখাপড়া ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ল্যাপটপ দরকার, কিন্তু সে সামর্থ নেই। প্রতিবন্ধী তৃষ্ণা জানান, আমি ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শিক্ষার দ্বায়িত্ব নিতে চান। লেখাপড়া শেষ করে তিনি বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে একজন ভালো শিক্ষক হতে চান। তৃষ্ণার পিতা মিজানুর রহমান বলেন, নিজের ২ বিঘা জমি বিক্রি করে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু চোখ ভালো হয়নি। এখন অনেক কষ্টে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। সমাজের বিত্তবানরা যদি তার লেখাপড়ার দ্বায়িত্ব নিত তাহলে তার স্বপ্ন পুরণ হতো। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, মেধাবী তৃষ্ণার লেখাপড়ার জন্য জেলা প্রশাসন সকল প্রকার সহযোগিতা করবে। আমরা আশা করি সে লেখাপড়া শেষ করে একজন স্বাবলম্বী ও ভালো মানুষ হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারবে। তৃষ্ণার সহযোগিতা করতে মোবাইল করুন পিতাঃ ০১৭০৮৩২৬৫৯২ ও তৃষ্ণা ০১৮৮৪-৩৭৭০০৭।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৫:৪২পিএম/২০/৭/২০১৮ইং)