• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

তাহিরপুর সীমান্তে মামলার আসামীদের দৌড়াত্ব বৃদ্ধি, কয়লাসহ নৌকা আটক


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ৯:৪৪ PM / ১১০
তাহিরপুর সীমান্তে মামলার আসামীদের দৌড়াত্ব বৃদ্ধি, কয়লাসহ নৌকা আটক

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে বিভিন্ন মামলার আসামীদের দৌড়াত্ব দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা, পাথর, মদ, গাঁজা, গাছ, নাসির উদ্দিন বিড়ি ও চিনিসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করছে। সেই সাথে পাচাঁরকৃত মালামাল থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতে আজ রবিবার (৩০ এপ্রিল) ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট বড় মসজিদের সামনে অবস্থিত চুনখলার হাওরে একাধিক মামলার আসামী খোকন মিয়া, রুবেল মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, সুহেল মিয়া, রফ মিয়া, সুলতান মিয়া ও নেকবর মিয়াগং ভারত থেকে পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা ৭টি বারকি নৌকায় বোঝাই করে বালিয়াঘাট সীমান্তের বোরাঘাট নিয়ে যাওয়ার সময় চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় মেঃটন চুরাই কয়লাসহ ১টি বারকি নৌকা আটক করে। অপরদিকে বালিয়াঘাট সীমান্তের দুধেরআউটা গ্রামের সামনে অবস্থিত পাটলাই নদীতে একাধিক মামলার আসামী মনির মিয়া ও জিয়াউর রহমান জিয়াগং ২টি স্টিল বড়ি ইঞ্জিনের নৌকায় বিপুল পরিমান অবৈধ কয়লা বোঝাই করে নিয়ে গেলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে একাধিক মামলার আসামী ইয়াবা কালাম, রতন মহলদার, ইসাক মিয়া ও কামাল মিয়াগং টেকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া, বড়ছড়া, চুনাপাথর খনি প্রকল্প, লাকমা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে প্রতিদিন শতশত শ্রমিক দিয়ে অর্ধশতাধিক মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে বিন্দারবন্দ, নিলাদ্রী লেকপাড় ও পাথরঘাটাসহ বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনের বিভিন্ন ডিপুতে নিয়ে বিক্রি করছে। একই ভাবে চাঁনপুর সীমান্তের রজনী লাইন, নয়াছড়া, গারোছড়া, রাজাই, কড়ইগড়া ও বারেকটিলা এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী আবু বক্কর ও রফিকুল মিয়াগং কয়লা, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, পান-সুপারী, মদ, গাঁজা ও গরু পাচাঁর করছে। এছাড়া বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের লামাকাটা, সুন্দরবন ও সোনাপুর এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী লেংড়া জামালগং ভারত থেকে চিনি, মদ, কয়লা ও গরু পাচাঁর করছে। আর বিভিন্ন মামলার এই সব আসামীদের নিয়ন্ত্রণ করছে সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার হাবিব সারোয়ার ( তোতলা আজাদ)। এজন্য সে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে পাচাঁরকৃত ১ মেঃটন চোরাই কয়লা থেকে ১হাজার করে চাঁদা নেয়সহ অন্যান্য অবৈধ মালামাল থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক হারে মোটা অংকের চাঁদা নেয়। এছাড়া সে নিজেও চোরাই কয়লা ও মাদক ব্যবসা করছে। এজন্য সে একাধিক বার হয়েছে গণধৌলাইয়ের শিকার, থানা ও আদালতে হয়েছে একাধিক চাঁদাবাজি মামলা। অপরদিকে লাউড়গড় সীমান্তের যাদুকাটা নদী, শাহআরেফিন মোকাম ও পুরান লাউড় এলাকা দিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে কয়লা, পাথর ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর করেছে চোরাকারবারীরা। ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচাঁরকৃত মালামালের মধ্যে বল্ডার পাথর সীমান্তের লাউড়গড় বাজার ও তার আশেপাশে অবস্থিত পাথর ভাঙ্গার মিলগুলোতে নিয়ে প্রথমে মজুত করা হয়। আর পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা যাদুকাটা নদীর তীরসহ সীমান্তের বিভিন্ন বসতবাড়ির ভিতর ও উঠানে মজুদ করে। পরে এসব অবৈধ পাথর ও কয়লা ইঞ্জিনের নৌকা ও ট্রাকের মাধ্যমে সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এই অবৈধ বাণিজ্য চলছে দীর্ঘদিন যাবত। তাই সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ করাসহ একাধিক মামলা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও র‌্যাব বাহিনীর সহযোগী জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান- সীমান্ত এলাকায় প্রতিদিন অভিযান চালিয়ে অবৈধ কয়লা ও নৌকাসহ বিভিন্ন মালামাল আটক করা হচ্ছে। চোরাচালান প্রতিরোধ করার জন্য বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে।