• ঢাকা
  • রবিবার, ১৬ Jun ২০২৪, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন

তারেক রহমানের নির্দেশেই সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৩০, ২০১৯, ২:১৪ AM / ৩২
তারেক রহমানের নির্দেশেই সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত

 
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই দলের নির্বাচিত চারজন শপথ নিয়েছেন। সোমবার বিকালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চারজনের শপথ নেয়ার পর রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারার অংশ হিসেবে সীমিত সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে শপথ নেয়ার ‘সিদ্ধান্ত দিয়েছেন’ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি আরও বলেন, রোববার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেয়া হয়েছে। তবে কোনো চাপ বা সমঝোতায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

ফখরুল বলেন, রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনা করেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ভোটের দিনের আগের রাতেই সব ব্যালট বক্স ভরে রাখে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা। ব্যাপক কারচুপি ও রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে এ সরকার। আমরা এখনও মনে করি নির্বাচনই ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র পথ। কিন্তু এ সরকারের স্বেচ্ছাচারিতায় সেটা প্রায় বন্ধের পথে। এখন বিরোধী দল হিসেবে সংসদে গিয়ে সরকারের বিপক্ষে কথা বলার মতো সামান্য এ সুযোগটুকু আমাদের জন্য বাকি আছে। আমরা এখনও নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছি। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা সংসদে গিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে সংসদে কথা বলার সীমিত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজপথের সংগ্রামকে যুগপৎভাবে চালিয়ে যাওয়াকে আমরা যুক্তিযুক্ত মনে করছি। জাতীয় রাজনীতির এ সংকটময় জটিল প্রেক্ষিতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসেবে আমাদের দল সংসদে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, আশা করি দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এ সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় অবিলম্বে একটি অবাধ জাতীয় নির্বাচন আদায় করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রীসহ সব রাজবন্দিকে মুক্ত করে আমরা খালেদা জিয়া ঘোষিত জাতীয় ঐকমত্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলব। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ছিল একটি কলঙ্কজনক প্রহসনের নির্বাচন। যা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলও প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ নির্বাচনের ফলাফল ছিল সম্পূর্ণ সাজানো এবং দেশের দলমত নির্বিশেষে সব ভোটারই এ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার থেকে জোরপূর্বক বঞ্চিত হয়েছেন। যা ক্ষমতাসীন মহলের কারও কারও মুখ থেকেও স্বীকারোক্তি হিসেবে বেরিয়ে এসেছে। নজিরবিহীন সন্ত্রাস, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সর্বোপরি নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে ভোটের দিনের আগের রাতেই ভোটের ফলাফল একতরফা ভাবেই তাদের পক্ষে সাজিয়েছে সরকার। আমরা সঙ্গত কারণেই ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণের ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় এ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলাম এবং জাতীয় সংসদে আমাদের মনোনীত বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণ না করার জন্য আহ্বান করেছিলাম।

তিনি বলেন, আমরা বরাবরের মতই দাবি করছি, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে জনগণের সংসদ নির্বাচন করাই এ সংকট সমাধান করার একমাত্র পথ।

তাই একদিকে নতুন নির্বাচনের দাবি ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের অব্যাহত দাবি অন্যদিকে দেশের চলমান অর্থনৈতিক, আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক চরম সংকট যথাক্রমে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি, ব্যাংক লুট, নারী নির্যাতন, গুম-খুন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী ও জোরালো গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আমাদের নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হতে হবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিপূর্বে শপথ নেয়ার কারণে বিএনপির যে সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তার বিষয়ে পরে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। এক প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, কোন পরিস্থিতিতে আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি। কোনো চাপে এ পরিবর্তন হয়নি। সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমঝোতার প্রশ্ন কোথায় দেখলেন। তাহলে কি আপনাদের ওপর কোনো চাপ নেই- এমন প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, আমরা মহা চাপে আছি। গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। আমাদের কথা বলতে দেয়া হয় না। সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কি নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া নয়- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈধতা দেয়ার প্রশ্নই উঠে না। আমরা এ সংসদকে বৈধতা দিচ্ছি না। তিনি বলেন, রাজনীতিতে আজকে যেটা হবে, কালকে যে সেটাই হবে, এমন তো মানে নেই। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন হতেই পারে- সেটাই পলিটিক্স।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/০২:১৫এএম/৩০/৪/২০১৯ইং)