• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১২:১৪ অপরাহ্ন

তারা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়: ড. কামাল


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২০, ১১:০০ AM / ৩৯
তারা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়: ড. কামাল

সিটি নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেছেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়ররা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের মোটেই সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে মতিঝিলে নিজের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দু’বছর কারাবাসের প্রতিবাদে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেন তিনি।

১৭-১৮ শতাংশ ভোটে নির্বাচিত মেয়রদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত বলা যাবে কি না- জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, মোটেই না। তারা জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত নয়।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুব সমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। দুই মেয়র মাত্র ৫-৭ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছেন। বাকিটা ইভিএমের জাল ভোট।

তিনি বলেন, এই দেশের জনগণ সব ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং পরিবর্তন এনেছে। এর কোনো ব্যতিক্রম এখন হবে না। জনগণের মধ্যে একটা ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। তাদের এগিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকার যেভাবে দেশ চালাতে চাচ্ছে, সেটা আর পারবে না।

ঐক্যফ্রন্ট সব সময় জনগণের কাঁধে সবকিছু চাপিয়ে দেয়ার রাজনীতি করছে কি না, জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা তো জনগণের ওপর ভর করেই রাজনীতি করি। শক্তি তো জনগণের, সেটাকে উৎসাহিত করার জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল করি। আমাদের দেশের ৭০ বছরের ইতিহাস দেখেন।

তারা সব সময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন এনেছে। সেই ৬ দফা, ১১ দফা এবং স্বাধীনতার কথা যদি মনে রাখেন সব সময় জনগণ এগিয়ে এসেছে। স্বাধীনতার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও জনগণ এগিয়ে এসেছে। এ দেশের মানুষ সচেতন, তারা কখনও স্বৈরতন্ত্রকে গ্রহণ করেনি। এখনও করবে না। এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, জনগণের ওপর ভর করেই রাজনীতি। শক্তি জনগণের।

তাদের উৎসাহী করতে আমাদের করণীয় অবশ্যই করে যাব। সভা, মিছিল, মিটিং সবই হবে। তিনি বলেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে, পরিবর্তন এনেছে। তার ব্যতিক্রম হবে না। জনগণের মধ্যে একটা ঐকমত্য গড়ে উঠেছে। জনগণ এগিয়ে আসবে। সরকার যা চাইছে, তা করতে পারবে না।

এই জোটের প্রতি মানুষের আশার জায়গা কোনটা? এই প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, জনগণের ওপর আমরা পুরোপুরি ভরসা রাখি। ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণ নিজের পরিবর্তন এনেছে। তিনি ৬ দফা, স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সব সময় জনগণই এগিয়ে এসেছে। এ দেশের মানুষ সচেতন, তারা স্বৈরতন্ত্রকে কোনো দিন গ্রহণ করেনি, এখনও করবে না। মানুষের মুক্তির জন্য ঐক্যফ্রন্ট কী করছে?

এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। আমরা বলে যাচ্ছি। সরকার দায়িত্বহীনভাবে সংবিধান পরিপন্থী কাজ করে নির্বাচন পদ্ধতিকে ধ্বংস করেছে।

এর ফলেই আজ ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মানুষ একদিন অসহ্য হয়ে পরিবর্তন আনবে। ঐক্যফ্রন্ট দুই প্রার্থীকে সমর্থন দিল, কিন্তু নির্বাচনী মাঠে থাকতে তারা ব্যর্থ কি না? এতে সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ পায় কি না?

এ ছাড়া চারটি পথসভার ঘোষণা দিলেও তা হয়নি? তারা ব্যর্থ কি না? এসব প্রশ্নের উত্তরে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের কাজগুলোকে জোরদার করতে হবে। জনগণকে নিয়ে পরিবর্তন আনতে আমরা বাধ্য। এভাবে দেশ চলতে পারে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আমরা জনগণের ওপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। তারা সব ক্ষমতার মালিক, তাই তাদের ওপর ভরসা রেখেছি। তার বিপরীতে সরকার জনগণের সব আস্থা কেড়ে নিয়েছে। তারা ভোটকে ভয় পাচ্ছে। সে জন্য তারা বিনা ভোটে সংসদ নির্বাচন করেছে এবং এখন বিনা ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছে। ফলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পথ আলাদা।

আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখন থেকে তাদের মাঠে দেখা যাবে। খালেদার মুক্তি আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তারা কি যথাযথ কর্মসূচি দিতে পারছে?

এর জবাবে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, রাজনৈতিক দলের কাজ হচ্ছে নির্দেশনা দেয়া। কার্যকর করবে জনগণ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১০:৫৯এএম/৫/২/২০২০ইং)