• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন

ড. শহীদুল আলমের মুক্তি চাই


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৭, ২০১৮, ৯:১০ AM / ৩৪
ড. শহীদুল আলমের মুক্তি চাই

গৌতম রায় : আমি জানি না আমার এই লেখার জন্য আমাকেও আবার রিমান্ডে নেয়া হবে কিনা। তবু আমি কিছু বলবোই আজ। সরকারের এত উন্নয়ন এত গৌরব কারা যেন ম্লান করে দিচ্ছে। প্রশ্ন জাগে, সরকারের ভেতরে কি ভূত ঢুকে গেছে? দেশের পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে? ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর সরকারের দমন পীড়ন যে সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে সেটা কি নেতারা বুঝতে পারেন না, নাকি গায়ের জোরে সবকিছু চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন?

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ড. শহীদুল আলমের সাথে পরিচয় আমার দীর্ঘদিনের। সারাবিশ্বে প্রধানসারীর বহু ফটোগ্রাফার তার ছাত্র। বিশ্ব মিডিয়ায় রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে তিনি উপদেষ্টা। ছবিপাগল এই মানুষটির সাথে যতবার কথা বলেছি কখনো শুনিনি তিনি রাজনৈতিক কোন প্রসঙ্গ টানতে। যতদূর জানি তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ চেতনার লোক। গতবছর তিনি মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন আমাদের শ্রমিকদের জীবন যাপন নিয়ে কাজ করতে। তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগীতাও করেছি। এই বিষয়ে ইংরেজীতে একটি বই লিখেছেন তিনি।
কিন্তু আল জাজিরায় চলমান ছাত্র আন্দোলনকে নিয়ে সাক্ষাৎকার দেয়ায় তাকে দু’দিন আগে রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি। তারপর গতকাল ৭ দিনের রিনান্ডে নেয় পুলিশ। টিভি পর্দায় তার বীভৎস্য চেহারা দেখে চোখে পানি এসে যায়। বুঝতে বাকী নেই তাকে কি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি চলমান আন্দোলনে ছাত্রদের উস্কানী দিয়েছেন। এ জন্য তাকে ৫৭ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমি হতভম্ভ, স্তম্ভিত। একি করছে সরকার?

আলজাজিরায় সাক্ষাৎকার দেয়ায় সরকারের কতবড় ক্ষতি হয়েছে জানি না। কিন্তু আমি মনে করি তাকে গ্রেফতারের পর ক্ষতিটা হয়েছে অনেক বেশী। গতকাল বিশ্বের তাবৎ বড় বড় মিডিয়া তার গ্রেফতার সংবাদটি প্রচার হয়। এতে তার বিদেশী ছাত্রদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিবে।

মাত্র কয়েক দিন আগে ফোন করে বললেন- আপনি এখনো আমার দৃক গ্যালারীতে এলেন না? এবার আসুন। তারপর তিনি বাহরাইন সৌদিতে নারী শ্রমিকদের নিয়ে কিছু কাজ করবেন জানালেন। আমি তাকে সহযোগীতার আশ্বাস দিলাম। তারপর যখন দেখা করতে যাবো তখনই ছাত্রদের আন্দোলন। আর যাওয়া হয়নি। এখন তিনি পুলিশে রিমান্ডে রাত্রিযাপন করছেন।

এসব কি করছে সরকার? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত নিরলস শ্রম দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তারপরও এসব ঘটনা সবকিছু ম্লান করে দিবে। সরকার ক্রমশ: মিত্রহীন হয়ে পড়বে। যা সরকারের জন্য শুভ সংবাদ নয়। সরকারের ভেতর কোন গুপ্তঘাতক ঘাঁটি মেরে আছে কিনা বুঝতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয় অনুরোধ করবো, ড.শহীদুল আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৯:০৫এএম/৭/৮২০১৮ইং)