শের মোহাম্মদ, গুরুদাসপুর (নাটোর) : নাটোরের গুরুদাসপুরে বিভিন্ন টোব্যাকো কোম্পানীর সহযোগিতায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শুরু হয়েছে তামাক চাষ। ধান চাষের ভরা মৌসুম হলেও তামাক চাষ লাভজনক হবে বলে প্রলোভন দেখিয়ে কৃষকদের তামাক চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন। ফলে কৃষকরা অধিক লাভের আশায় আবার তামাক চাষ শুরু করেছে।
তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগের কোন কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় সরকারী বিধিনিষেধ থাকা সত্বেও তিন ফসলী জমিতে খাদ্যশস্য ফলানো বাদ দিয়ে ক্ষতিকর তামাক চাষ শুরু করেছেন এলাকার কৃষক। কয়েক বছর আগে বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিলচলন ডেভেলোপমেন্ট সার্ভিস সেন্টার (বিডিএসসি) তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, সভা, সমাবেশ, লিফলেট বিতরনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণার কারনে ২০১০ সালে তা বন্ধ হলেও তামাক চাষ আবার শুরু হয়েছে। কোম্পানী গুলোর পক্ষ থেকে কৃষকদরে স্বল্পমুলে সার-বীজ ও কীটনাশক দেওয়াসহ উৎপাদন খরচের জন্য সহজশর্তে ঋণ দেওয়া হয়েছে। তামাকের সুকনো পাতা জমি থেকে উঠায়ে কয়েকদিন বাড়ীতে রাখতে হয় এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় ঘর নিমাণ করে ভিতর জ¦ালানি দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ওই ঘর থেকে নির্গত ধুঁয়ায় শিশুসহ আশপাশের মানুষের ক্যান্সার, স্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানীসহ বিভিন্ন সিগারেট-বিড়ি কোম্পানীর কর্মীরা কৃষকের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তামাক চাষের লাভের দিক তুলে ধরেন। সেই সাথে কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করেন। উৎপাদন শেষে ওই কোম্পানী গুলো তা চড়া মুল্যে কিনে নেন তারা। ফলে নগদ লাভের আশায় কিছু কৃষক তামাক চাষ শুরু করেছেন।
তামাক চাসে অনাগ্রহী কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাঘ মাসে তামাকের চারা বোপন করতে হয়। বৈশাখ মাসে সুকনো পাতা উঠানো শুরু হয়। সুকনো পাতা বাড়ীতে কিছুদিন রাখতে হয়। এর প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে বাড়ী ও আশপাশের মানুষের স্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ফলে যত লাভই হোক তামাক চাষ করা ঠিক নয়।
উপজেলার দড়িহাঁসমারী গ্রামের তামাক চাষী আফসার আলী জানান, তামাক চাষে কেউ তাকে নিষেধ করেনি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভের আশায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে তামাকের চাষ করেছেন তিনি।
তামাক বিরোধী আন্দোলনের এনজিও বিডিএসসি পরিচালক মজিবুর রহমান মজনু জানান, তামাক লাভজনক ফসল হলেও চরম ক্ষতিকারক একটি উপাদান। এর কারনে ক্যান্সার, স্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আবার তামাক চাষ শুরু হয়েছে তা তার জানা নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম জানান, উপজেলায় খুবই সামান্য চাষ হয়েছে। তামাক চাষ না করার জন্য বললেও অধিক লাভের আশায় তারা করছেন। তবে তিনি উপজেলাতে কি পরিমাণ তামাক চাষ হয়েছে তার পরিসংখ্যান দিতে পারেননি।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/২:২৬পিএম/১৯/৩/২০১৮ইং)
আপনার মতামত লিখুন :