• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

গ্যাস খাত: কোষাগারে ২৬ হাজার কোটি টাকা, লভ্যাংশ ৩২০০ কোটি!


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০১৭, ৪:১৯ PM / ৪৯
গ্যাস খাত: কোষাগারে ২৬ হাজার কোটি টাকা, লভ্যাংশ ৩২০০ কোটি!

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : পেট্রোবাংলা ও এর অধীনস্ত বিভিন্ন কোম্পানি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ২৫ হাজার ৮৭৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ আয় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বাকিটা সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর, ডিএসএল বকেয়া, আয়কর, কাস্টমস শুল্ক ও রয়্যালটি। পাশাপাশি পেট্রোবাংলার কাছে এখন অলস পড়ে আছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।

২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার বণিক বার্তায় ‘পাঁচ বছরে গ্যাস খাত থেকে সরকারের আয়: কোষাগারে ২৬ হাজার কোটি টাকা, লভ্যাংশ ৩২০০ কোটি’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতেও গ্যাস খাতে ভর্তুকি থেকে সরে আসার যুক্তি দেখিয়ে আরেক দফা গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে সরকার। যদিও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে গ্যাস খাতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ভর্তুকিই নেই।

পেট্রোবাংলা সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০-১১ অর্থবছরে গ্যাস খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় ছিল ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৪১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে রাজস্ব আসে ৪ হাজার ৫৩৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে লভ্যাংশ ছিল ৩৮৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা রাজস্ব আসে, যার মধ্যে লভ্যাংশ ছিল ৮৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাজস্ব আসে ৫ হাজার ৩৭৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং লভ্যাংশ হয় ৪৪৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে গ্যাস খাত থেকে ৬ হাজার ২০৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা রাজস্ব হয় সরকারের, এর মধ্যে লভ্যাংশ দাঁড়ায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

পেট্রোবাংলার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্যাস বিক্রি থেকে প্রাপ্ত লাভের অংশ ছাড়াও গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে (জিডিএফ) জমা আছে ৩ হাজার ৭২ কোটি টাকা। নতুন গ্যাসকূপ অনুসন্ধ্যান, খনন এবং গ্যাস খাতের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যয় বহনের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে এ তহবিল গঠন করা হয়, যেখানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রির বিপরীতে ১ থেকে দেড় টাকা জমা হয়। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির কাছে আয়ের সঞ্চিতি রয়েছে ৬ হাজার ২১১ কোটি টাকা। মূলধন সঞ্চিতিও রয়েছে ১ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। অর্থাত্ সব মিলে বর্তমানে পেট্রোবাংলার ১০ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকার তহবিল রয়েছে, যার পুরোটাই অলস পড়ে আছে।

গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলোর আর্থিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ খাতের সবক’টি কোম্পানিই লাভে আছে বর্তমানে। দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও কূপ খননকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স ২০১৪-১৫ অর্থবছর প্রায় ৬৫ কোটি টাকা লাভ করে। ওই অর্থবছর সরকারকে ৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে বাপেক্স। গ্যাস বিতরণকারী ছয়টি কোম্পানিও লাভে আছে।

বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ বিষয়ে বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো লাভ করছে ঠিকই, কিন্তু উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো লোকসান করছে। আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির (আইওসি) কাছ থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৩-৪ টাকা বেশি দামে কিনে গ্রাহকের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোকসান করছে। সেটা আমাদের পুষিয়ে নিতে হচ্ছে।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৪:১৫পিএম/২৫/২/২০১৭ইং)