- ঢাকা
- রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে বশেমুরবিপ্রবির আইন বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগপ্রাপ্ত কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের বিএনপি-জামায়াত কানেকশন এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বের হয়ে আসছে একর পর এক থলের বিড়াল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সকল অপচেষ্টা অবশেষে ব্যর্থতায় পর্যাবসিত হতে চলছে।
ব্যাপক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সহ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল কেবল একা নয়, তার পরিবার এমনকি আত্মীয় স্বজন সবাই বিএনপি রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের অর্থের যোগানদাতা ও বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতি ক্রীয়াশীল রাখতে নেপথ্যে থেকে অনেক ভুমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের শ্বশুর মো: পারভেজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। জিয়া পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা হিসেবে তিনি একাধিকবার কর্মকর্তা সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের বড় বোনের স্বামী এ্যাড. মাহমুদ হাসান বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেল থেকে সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের পিতা আব্দুল হাকিম মোল্লা বিএনপি আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সার, গ্যাস, রড, সিমেন্ট, টিন ব্যবসার লাইসেন্সসহ একাধিক ব্যবসা বানিজ্য বাগিয়ে নেন। রাতারাতি হয়ে যান অগাধ অবৈধ অর্থের মালিক।
এছাড়া সোহেলের ছোট বোন প্রিয়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির চেষ্টা করলে ইবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আব্দুল হালিমের তীব্র বিরোধীতার মূখে শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। ইবি-র ছাত্রদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলের ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে (বার) আওয়ামী পন্থী রাজনীতির সাথে জড়িত এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বারের সাবেক সাধারন সম্পাদক আইয়ুবুর রহমানের সাথে রাজনীতি করেন বলে দাবী করলেও অনুসন্ধানে তার কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের বিলুপ্তি ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আত্ম প্রকাশ করেন। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সমন্বয়কের ভুমিকা পালন করছেন। পাশাপাশি ঢাকা বারে এখনও পর্যন্ত ওই সংগঠনের কোন পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।
মুস্তাফিজুর রহমান সোহেল তার বিএনপি দলীয় রাজনৈতিক সকল পরিচয় গোপন করার উদ্দেশ্যে অর্থ ও প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সংগঠন থেকে একের পর এক ভূয়া প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে ভাল কোন চাকরি বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা দবির উদ্দিন জোয়ার্দ্দারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দানের মাধ্যমে এদেশের ৩০ লক্ষ শহীদকে অপমান করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে ফৌজদারী মামলা দায়েরের জোর দাবি জানান তিনি।
গোপালগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতার নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিএনপি-জামায়াতের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কলংকিত করা হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ মহল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএনপি-জামায়াতের শিক্ষকদের অপসার ও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারন ছাত্র-ছাত্রীসহ অভিজ্ঞ মহল।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/৪:০২পিএম/২৯/৬/২০১৮ইং)
আপনার মতামত লিখুন :