• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন

ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প বিলুপ্তির পথে


প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৪, ২০১৭, ৯:৪৭ AM / ৫১
ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প বিলুপ্তির পথে

ঢাকারনিউজ২৪.কম:রাজশাহী:

রাজশাহীর মোহনপুরে বাঁশের ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প বিলুপ্তির পথে। অবহেলা, প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি আর ব্যাংক ঋণ সুবিধা না পাওয়াকে অন্যতম কারণ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার বাকশৈইল গ্রামের মানুষ দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছেন বিকল্প পেশা।

বাকশৈইল গ্রাম ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮৪০ সাল থেকে কেশরহাট এলাকায় কুন্নী আদিবাসীদের বসবাস। তারা বাঁশের তৈরী নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকার আসবাব তৈরি ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওই সময় গ্রামের ময়েজ উদ্দিন ও তমির উদ্দিন আকৃষ্ট হয়ে বাঁশের কাজ শিখে নেয়। ধীরে ধীরে গ্রামে অনেকেই এ কাজে আকৃষ্ট হয়।

জানা গেছে, অতীতে চার হাজার বাসিন্দার মধ্যে প্রায় তিন হাজারের বেশি নারী-পুরুষ এ পেশায় জড়িত ছিল। এক সময় বাঁশের তৈরী হাঁস-মুরগি রাখা খাঁচা, ঝাকা, টেবিল, চেয়ার, আলমারী, কলমদানী, ফুলদানী, মেয়েদের চুল বাঁধানো ক্লিলিপসহ আরও নানান প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে ভালো মুনাফা পেলেও বর্তমানে সেই দিন আর নেই।

৮৫ বছরের বৃদ্ধ কছির উদ্দিন বলেন, সংসারে কাজের অবসরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে বসে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরী করে যে অর্থ উপার্জন হত তা দিয়ে ভালো মত সংসার চলত। বর্তমানে বয়স হওয়ায় তেমন কাজকর্ম করতে পারি না। যদিও আমার তিন ছেলে এ পেশায় আছে কিন্তু আগের মত আর লাভ নেই।

মতিউর রহমান বলেন, ১৮/২০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত থাকলেও বর্তমানে বাঁশের দাম বৃদ্ধি এবং খরচের তুলনায় লোকসান হওয়ায় মুদি দোকান করে সংসার চালাই।

কুলসুম বেগম জানান, এক সময় গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এ পেশায় জড়িত থাকলেও এখন অন্য কাজ করছে। গ্রামের রেহেনা, সেফালী, জামেলা, পেয়ারা, ছানু বেগম, সিলা, মরিনা, তসলিমা, সুমিসহ অনেকে কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে গেছেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কেশরহাটের মেয়র শহিদুজ্জামান শহিদ বলেন, পৌরসভার বেশ কিছু গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন এ পেশায় জড়িত আছেন। তাদের তৈরী সামগ্রী দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। এটা আমাদের গর্ব। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমার সব রকম চেষ্টা থাকবে।

 

 (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০৯.৪৮ এএম/০৪//২০১৭ইং)