• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

এক বছরেও ফেরত আসেনি রিজার্ভ চুরির ৬৬ মিলিয়ন ডলার


প্রকাশের সময় : মার্চ ২৮, ২০১৭, ৩:৫৩ PM / ৩৮
এক বছরেও ফেরত আসেনি রিজার্ভ চুরির ৬৬ মিলিয়ন ডলার

ঢাকারনিউজ২৪.কম:

এক বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হয় ১০১ মিলিয়ন ডলার। এখন পর্যন্ত নানাভাবে ফেরত এসেছে ৩৫ মিলিয়ন ডলার। বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলার এখনো ফেরত আসেনি।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির হোতাদের শনাক্ত করতে কয়েকটি দেশ মিলে তদন্তে নামলেও তার সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক এক কর্মকর্তা। শন কানুক নামে এ সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ফিলিপিন্সের এ সরকারি তদন্তে দৃঢ় কোনো অবস্থান দেখতে না পাওয়ার কথাই জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকের কার্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন শেষে গত মে মাসে অবসরে যান কানুক।

এর আগে সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তাবিষয়ক এক সংলাপের ফাঁকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির তদন্ত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বলে রয়টার্স জানিয়েছিল। তদন্তকারীরা এ সাইবার অপরাধের হোতাদের খুঁজে বের নাও করতে পারে বলে সংশয় প্রকাশ করে শন কানুক রয়টার্সকে বলেছিলেন, ‘তারা কখনো সফল নাও হতে পারে।

এদিকে টাকা উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের তৎপরতা চোখে না পড়ায় প্রবল হচ্ছে টাকা ফেরত না পাওয়ার আশঙ্কা। সাধারণ জনগণ মনে করেন, বর্তমান সময়ে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে মনে হয় রিজার্ভ চুরির বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। এমনকিছু বের হয়ে আসতে পারে যাতে অনেকের সমস্যা হবে। তাই এই ইস্যু চাপা পড়ে যাচ্ছে। শুধু টাকা উদ্ধারে ধীরগতি নয়, রিজার্ভ চুরির প্রতিবেদন প্রকাশে অর্থমন্ত্রীর লুকোচুরিতে সন্ধেহ আরও বেড়েছে। প্রতিবেদন পেয়েও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে হোতারা আরও উৎসাহী হবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

এছাড়া অপরাধীদের কবে গ্রেফতার করা হবে তাও জানাতে পারেনি তদন্ত সংস্থা সিআইডি (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ)। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শাহ আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, রিজার্ভ চুরির সাথে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ে দেশি-বিদেশি চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। চুরি যাওয়া টাকা কোথায় গেছে আর কার কাছে তাও চিহ্নিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, চুরি হওয়া ১০১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৫ মিলিয়ন ডলার ফেরত এসেছে। এর মধ্যে ১৫ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার এবং ২০ মিলিয়ন ডলার ফেরত এসেছে। আশা করছি, বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলারও ফেরত আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, চুরি যাওয়া ডলার ফিরিয়ে আনতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। আশা করছি, শিগগিরই তা ফেরত আনতে পারব। ইতোমধ্যে ৩৫ মিলিয়ন ডলার ফেরত পেয়েছি। বাকি ৬৬ মিলিয়ন ডলারও আমরা ফেরত পাব।

গেল বছর ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০১ মিলিয়ন ডলার (১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার) চুরি হয়ে যায়। চুরি হয়ে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত পাওয়া গেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ফিলিপাইনে চলে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি ডলার এরই মধ্যে ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু বাকি প্রায় সাড়ে ৬ কোটি ডলার আদৌ ফেরত পাওয়া যাবে কিনা- তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া রিজাল ব্যাংক বিবৃতিতে চুরির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য বাংলাদেশের নিজস্ব তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করতেও বলেছে। ফলে অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ সঠিক ছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। চুরির ঘটনায় ওই বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব ও বাজেট বিভাগের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪-সহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৪ ধারায় এবং ৩৭৯ ধায়ায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

 

  (ঢাকারনিউজ২৪.কম/এনএম /০৪.০০ পিএম/২৮//২০১৭ইং)