• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন

একজন তোমার খুবই প্রয়োজন


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ১৫, ২০১৮, ১:৩৯ PM / ৩২
একজন তোমার খুবই প্রয়োজন

সাব্বির আহমেদ : ২0১৮ সালে এসেও আজ আমরা বড়ই অসহায়।হাজারো স্বপ্নের ফেরিওয়ালার মাঝে তোমার অভাব যেন আমরা প্রতিনিয়তই অনুভব করি।তুমি ছিলে মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ,তোমার কথায় মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসতো।অনায়াসেই কাজ করে যেত সেই দেখা স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে।কিন্তু এখন সময় বড়ই বেগতিক,মানুষ এখন স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়।আর দেখা স্বপ্নের বাস্তবায়ন তো অনেকটা দুঃস্বপ্নের মতো।মানুষ ভেদে স্বপ্নগুলো ভিন্ন হয়,ভিন্ন হয় স্বপ্নের প্রেক্ষাপট।বাবা-মা স্বপ্ন দেখে ছেলে মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করার, ছেলে মেয়ে স্বপ্ন দেখে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের একজন যোগ্য নাগরিক হওয়ার, একজন ব্যবসায়ির স্বপ্ন থাকে আস্থার সাথে ব্যবসা করা, একজন শিক্ষকের স্বপ্ন থাকে দেশের কল্যানের জন্য সত্যিকার মানুষ গড়ে তোলা ,একজন ডাক্তার স্বপ্ন দেখে অসহায় দের সেবা করার। এইরকম হাজারো মানুষের হাজারো স্বপ্ন থাকে।ঠিক তেমনি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হয়ে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীনতার অমর কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু স্বপ্ন দেখেন নাই , সেই স্বপ্নের যথাযোগ্য বাস্তবায়নও করেছিলেন।একজন বাঙালী হিসেবে নতুন সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন যা শুধু তাঁর পক্ষেই সম্ভব ছিল।তিনি শুধু স্বপ্ন দেখেই থেমে যাননি,দেখিয়ে দিয়ে গেছেন কিভাবে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে হয়।

নিজের দেখা স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর।তিনি একটা কথা মনে প্রাণে ধারণ করতেন,আর তা হলো স্বপ্ন পূরণের পথে কোন কিছুর সাথে আপোষ নাই ।আর তাইতো ৫৫ বছরের জীবদ্দশাই ১৪ বছরই কাটিয়েছেন চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ অবস্থায়।লাল নীল হাজারো স্বপ্নের ভিড়ে এক মুহূর্তের জন্যও মলিন হতে দেন নাই তাঁর দেখা স্বপ্নের লাল সবুজের একটুকরো বাংলাদেশকে।

বেস্ট মোটিভেশনাল স্পিকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।১৮ মিনিটের এক ভাষণে ৭ কোটি মানুষকে একত্রিত করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য,যা শুধু একজন বঙ্গবন্ধু এর পক্ষেই সম্ভব ছিল।

কিন্তু আমরা তাঁর সেই অসামান্য আত্মত্যাগ কে বুঝতে পারলাম না।আমরা তাকে যথাযথ সম্মান তো দিতে ব্যর্থ হলামই, উপঢৌকন হিসেবে দিলাম ১৮ টি বুলেট।স্বাধীনতার অমর কবিকে রক্তাক্ত করতে একটুও বুক কেঁপে উঠলো না আমাদের । ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘটানো হলো ইতিহাসের নৃশংস ও ঘৃণিত এক হত্যাকান্ড।আজ থেকে ৪৩ বছর আগে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করলো ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল।

আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আমরা সেই মহলের কাছে জিম্মি।একজন তোমার খুবই প্রয়োজন আমাদেরকে আবারো মুক্তির পথ দেখাতে।তোমার মৃত্যুতে বাঙালী শুধু একজন নেতাকে হারায় নি , হারিয়েছে অনেককিছু।যা শুধু তোমার কাছে হতেই আশা করা যেত।স্বাধীনতার পরে তুমি যে গতিতে বলিষ্ঠ হাতে দেশের ভার বইছিলে তাতে এই দেশ একদিন সবার হিংসার কারণ হতো।কিন্তু কিছু কুচক্রী মহল যেন তা আগে হতেই আঁচ করেছিল,তাইতো তোমাকে সরিয়ে দিল , আর আমাদেরকে করে দিল এতিম।

আমরা কি এতটাই বোকা,যে আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও তাঁর অসামান্য ত্যাগগুলোকে বুঝতে পারলাম না ।আসলে আমরা কখনও বুঝতে চেষ্টাই করি নাই।আমরা হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হতে না পারি,অন্তত তাঁর দেখানো পথের ফেরিওয়ালা হয়ে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারি।গর্বের সাথে বলতে পারি “আমি বাঙালী ,আমি গর্বিত আমি বাঙালী”।আর এই স্বপ্নগুলোকে আবারো প্রাণ দিতে একজন তোমার খুবই প্রয়োজন।

লেখক : সাব্বির আহমেদ
বায়োটেকনোলজি বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১:৩৮পিএম/১৫/৮/২০১৮ইং)