• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন

আশুলিয়ায় ঠিকাদার কাজিমুদ্দিন হত্যার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক ভাতিজা গ্রেফতার


প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ১০, ২০২৪, ৮:২৬ AM / ৭১
আশুলিয়ায় ঠিকাদার কাজিমুদ্দিন হত্যার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক ভাতিজা গ্রেফতার

লিখন রাজ, রুপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা দ্বন্দে আপন চাচাকে গলাকেটে হত্যা করেছে ভাতিজা। রাজধানীর অদূরে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার কাজিমুদ্দিন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারী ভাতিজা আব্দুল লতিফকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার কওে এমনই তথ্য দিয়েছে র‌্যাব।
জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে ঢাকার আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় লিপি ডেইরী ফার্মের বিশ্রাম রুম থেকে ফার্মটির স্বত্বাধিকারী কাজিমুদ্দিন (৫০) এর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ভিকটিমের আত্নীয় স্বজন ও স্থানীয় কিছু ব্যক্তিবর্গ উক্ত হত্যাকান্ডটিকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বলে ধারণা করলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকান্ড বলে খবর প্রকাশিত হয়। উক্ত ক্লুলেস হত্যাকান্ডের ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-২৮। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। উক্ত ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজদারী বৃদ্ধি করে র‌্যাব।
শুক্রবার সকালে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, গত রাতে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ক্লুলেস ও নৃশংস হত্যাকান্ডের হত্যাকারী মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন (৩২) গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত উক্ত হত্যাকান্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকারী লতিফ ভিকটিমের বড় ভাইয়ের ছেলে। লতিফের বাবা মৃত্যুবরণ করার পর থেকেই সে তার চাচাদের সাথে বসবাস করতো। গ্রেফতারকৃত লতিফের পৈত্রিক সম্পত্তি অংশীদারিত্ব নিয়ে ভিকটিম কাজিমুদ্দিন এর সাথে দীর্ঘ দিন যাবত বিরোধ চলছিল এবং প্রায় সময় তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হতো বলে জানা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভিকটিম কাজিমুদ্দিনের নিজস্ব মালিকানাধীন ডেইরী ফার্মে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে দেখতে আসে। ডেইরী ফার্মটি ভিকটিমের বাসার পাশে হওয়ায় ভিকটিম তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় পাঠিয়ে দেন এবং তিনি ডেইরি ফার্মের বিশ্রাম রুমে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে অবস্থান করে। পরবর্তীতে ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্য রাতে গ্রেফতারকৃত লতিফ ভিকটিমের ডেইরী ফার্মে এসে তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে কথা বললে ভিকটিমের সাথে তার বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে গ্রেফতারকৃত লতিফ উত্তেজিত হলে ক্রোধের বশবতি হয়ে রুমে থাকা বটি নিয়ে ভিকটিমের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত লতিফ হত্যার ঘটনাটি যেন কেউ বুঝতে না পারে সেজন্য ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে ভিকটিমের রুমের দরজা তালা দিয়ে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বটি পাশের রুমে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ৭ সকালে ভিকটিমের স্ত্রী ফার্মে গিয়ে বিশ্রাম রুমের দরজা তালা দেয়া দেখে ধারণা করে যে, তার স্বামী ভিকটিম বাহিরে গিয়েছে। বিশ্রাম রুমের একটি চাবি ভিকটিমের কাছে এবং অপর একটি চাবি ভিকটিমের স্ত্রীর কাছে থাকতো। পরবর্তীতে ফার্মের কাজের লোক গরুর ঔষধ নেয়ার জন্য ভিকটিমের স্ত্রীর নিকট থেকে রুমের চাবি নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলে ভিকটিমের গলাকাঁটা নিথর দেহ ঘরের বিছানার উপরে দেখতে পায়। হত্যাকান্ডের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রেফতারকৃত লতিফ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয়।