চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘মেয়র পদ নয়, আওয়ামী লীগের রাজনীতিই আমার কাছে বড়। মেয়র পদে মনোনয়ন না পাওয়ায় আমার মনে রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা কিংবা অভিমান কিছুই নেই।
তবে একটি জায়গায় আমার কষ্ট আছে, সেটি হচ্ছে অপরাজনীতি। আমার মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার নেপথ্যে ছিল অপরাজনীতি ও ষড়যন্ত্র।’ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র নাছির উদ্দীন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করেছি। দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে, চট্টগ্রাম শহরকে শিবিরমুক্ত করতে গিয়ে, বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুকের ফ্রিডম পার্টির রাজনীতি বন্ধ করতে গিয়ে কতবার যে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি, তার হিসাব নেই। আমি যে এখনও বেঁচে আছি বরং সেটাই আমার কাছে মিরাকল মনে হয়।’
সভায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলামসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় মেয়র আক্ষেপ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর যে খুনিকে (কর্নেল ফারুক) চট্টগ্রাম শহর থেকে তাড়াতে এবং তার ফ্রিডম পার্টির রাজনীতি বন্ধে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি, ব্রাশফায়ার করে সভা পণ্ড করেছি, বিভিন্ন সভায় হামলার পর হামলা করে চট্টগ্রাম শহরে দাঁড়াতেই দেইনি- সেই আমাকেই বানানো হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুকের আত্মীয়ের ব্যবসায়িক পার্টনার।’
তিনি বলেন, ‘একরাম নামে আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক উপসম্পাদক চরম দুঃসময়ে আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোটের রোষানল থেকে বাঁচতে তার আশ্রয়ে দুই মাস অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ছিলাম, সূর্যের আলো দেখিনি। সেই একরামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমি উদ্বোধন করেছিলাম চট্টগ্রামে। সেই অনুষ্ঠানে খুনি ফারুকের কোনো আত্মীয়ও নাকি ছিল। ওই ছবিটিকেই আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে।’
মেয়র বলেন, ‘আদৌ এ ধরনের কেউ ছিল কিনা, থাকলেও তার সঙ্গে আমার দূরতম সম্পর্ক বা চেনাজানা থাকার কথা নয়। শতভাগ একটি মিথ্যাকে সত্য বলার অপচেষ্টা হয়েছে। এ ধরনের অপরাজনীতি আমি কখনও করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।
নাছির বলেন, মেয়র পদ আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডেকে দিয়েছেন। এখন নিয়ে গেছেন। এতে আমার কোনো দুঃখ নেই। কর্পোরেশনেও শতভাগ স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে কাজ করেছি। অনেকেই নানা ক্ষেত্রে আমাকে ব্যর্থ বলছেন।
কিন্তু আমি এটা মানতে নারাজ। আমার আগে ২৫ বছরে যেখানে কর্পোরেশনে উন্নয়ন কাজ হয়েছে মাত্র আড়াই হাজার কোটি টাকার, সেখানে আমার পাঁচ বছর মেয়াদে কাজ হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার। প্রধানমন্ত্রীই এসব প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে ত্যাগী রাজনীতিবিদ উল্লেখ করে মেয়র নাছির বলেন, তাকে ভোটে জেতানোর জন্য এবং কর্পোরেশন তথা চট্টগ্রামের উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, এর সবকিছুই আমি করব।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/কেএস/১০:৪৪এএম/১৯/২/২০২০ইং)
আপনার মতামত লিখুন :