• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন

‘আজ রাতটা আমার সাথে ফ্রী হও না’


প্রকাশের সময় : মার্চ ১১, ২০১৮, ৯:৩৬ AM / ৪৮
‘আজ রাতটা আমার সাথে ফ্রী হও না’

 

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : এবার নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়ালেন নাট্য পরিচালক সংগঠনের সভাপতি জনপ্রিয় অভিনেতা গাজী রাকায়েত। তার ম্যাসেঞ্জার থেকে এক নারীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তেভোগী। অভিযোগকারী ম্যাসেঞ্জারের কথপোকথনের স্ক্রিন শট একটি ক্লোজ গ্রুপে প্রকাশ করে দিয়েছেন।

গাজী রাকায়েতও তার ম্যাসেঞ্জার থেকে সেসব কথোপকথনের কথা স্বীকার করলেও সেটি নিজে করেননি বলে দাবি করেছেন।

অভিযোগকারী ওই নারী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, গত ৪-৫ দিন আগে একদিন মধ্যরাতে ম্যাসেঞ্জারে তাকে নক করেন রাকায়েত। বছরখানেক আগে রাকায়েতই তাকে খুঁজে বের করে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান।

ওই নারী আরও বলেন, তিনি গাজী রাকায়েতের অভিনয়ের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। তবে রাকায়াতের এমন নোংরামির সঠিক বিচার কিংবা রাকায়েত যেন তার অন্যায় স্বীকার করে ক্ষমা চান সে দাবি জানান তিনি।

ভুক্তভোগী আরও বলেন, রাকায়েত নিজে জেনে-বুঝেই তার নিজস্ব আইডি থেকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। এখন একবার বলছেন যে, তার আইডি হ্যাক হয়েছে তো আবার বলছেন তার ম্যাসেঞ্জার ঘনিষ্ঠ একাধিকজন ব্যবহার করতো।

রাকায়েতের সঙ্গে ওই নারীর কথপোকথন ছিল এরকম…

রাকায়েত: আমি জোর করছি না।

ভুক্তভোগী নারী: কোন ব্যাপারে জোর?

রাকায়েত: না ওটা আমি করি না।

ভুক্তভোগী নারী: কোনটা

রাকায়েত: পান করা। এটা রাতের মাতলামি বলতে পারো

ভুক্তভোগী নারী: ও ভালোতো স্বাস্থ্যের জন্য

রাকায়েত: আমাকে তো চেন

ভুক্তভোগী নারী: অবশ্যই আপনারা আমাদের আইডল

রাকায়েত: আস্থা রাখা যায়

ভুক্তভোগী নারী: কোন ব্যাপারে আস্থা

কথোপোকথনের আরেকটি অংশে আছে

ভুক্তভোগী নারী: নক করছেন, fine

রাকায়েত: একটা আকর্ষণ থেকে

ভুক্তভোগী নারী: free হবার বিষয়টা বোধগম্য হলো না

রাকায়েত: তবে দুঃখ দিয়ে নয়

ভুক্তভোগী নারী: আকর্ষিত হবার কিছু নেই

রাকায়েত: কিছু নেই?

ভুক্তভোগী নারী: বরং আপনার কথাগুলো কেমন এলোমেলো লাগছে

রাকায়েত: রাত বলে হয়তো

ভুক্তভোগী নারী: রাত বলে এলোমেলো হবে কেন কিছু পার (পান) করেছেন?

রাকায়েত: জোর করতে চাই না

ভুক্তভোগী নারী: কোন ব্যাপারে জোর

আরেক অংশে আছে

রাকায়েত: জেগে আছিতো, (ওই নারীর নাম সম্বোধন করে) আজ রাতটা আমার সাথে ফ্রী হও না?

ভুক্তভোগী নারী: যেমন

রাকায়েত: ধারনা কর

ভুক্তভোগী নারী: স্যরি, কুঝতে পারছি না

রাকায়েত: Messenger এ যা খুশী করি

ভুক্তভোগী নারী: দু:খিত, আমি এখনও বুঝতে পারছি না

রাকায়েত: Hurt হয়ো না

ভুক্তভোগী নারী: দুঃখ পাওয়ার মতো কিছু হলে দুঃখ তো পাবোই

রাকায়েত: আমি তো একটা মেয়েকে নক করছি

কথোপকথনের আরেক অংশে ছিল…

রাকায়েত: আমরা প্রবৃত্তির বাইরে কেউ না

ভুক্তভোগী নারী: এখন কি করতে হবে শুনি?

রাকায়েত: কস্ট পেয় না

ভুক্তভোগী নারী: কষ্ট কেন পাবো?

রাকায়েত: ঐযে বললাম Messenger এ যা খুশী করি

ভুক্তভোগী নারী: কি করবেন শুনি এত রাতে হঠাত কি করতে মন চাইলো?

রাকায়েত: তোমার সাথে ফ্রি হয়ে কথা বলবো

ভুক্তভোগী নারী: বলেন দেখি কি এমন কথা

(প্রকাশযোগ্য নয়)

রাকায়েত: হু

ভুক্তভোগী নারী: তাও আবার অপরিচিতা কাওকে

রাকায়েত: অপরিচিতা কেন

ভুক্তভোগী নারী: যাক নাট্যপাড়ার যে বদনাম শুনি তাহলে সেটা মিথ্যা না প্রমাণ আগেও পেয়েছি

একদিন সকালের কথপোকথন…

রাকায়েত: হঠাত ঘুম ভেঙ্গে একটা জিনিস দেখতে ইচ্ছা হয়েছিল

ভুক্তভোগী নারী: কি

রাকায়েত: অভয় দিলে বলি

ভুক্তভোগী নারী: জি সিউর

রাকায়েত: সত্যি বলছি আমিও মানুষ

ভুক্তভোগী নারী: হুম তো

রাকায়েত: (প্রকাশযোগ্য নয়) হা হা হা

ভুক্তভোগী নারী: এজন্য আমাকে নক করছেন আফসোস

রাকায়েত: না

ভুক্তভোগী নারী: ভুল জায়গায় নক করেছেন

ম্যাসেঞ্জারে কথপোকথন প্রকাশের পর যোগাযোগ করলে গাজী রাকায়েত পরিবর্তন ডটকমকে তার ম্যাসেঞ্জার থেকে এসব কথপোকথনের কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন, তার ম্যাসেঞ্জারের পাসওয়ার্ড তার ছাত্র ও পরিচিতজনসহ ৫/৬ জনের কাছে ছিল। তারা কেউ এ কাজ করেছে বলে তার দাবি।

পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ভাই বলুনতো এতো রাতে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে কেউ এসব লিখবে? পাগলেও কি একাজ করবে?

রাকায়েত বলেন, কে করেছে তা প্রায় চিহ্নিত হয়েছে। আমি নাম বলতে চাই না। ধরে নেন আমার কাজের ছেলে করেছে। ভুক্তভোগী মেয়েটিকে তিনি চিনেন না বলেও দাবি করেন।

তিনি বলেন, তার পরিচিত দু’জন ওই নারীর ম্যাসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলাচ্ছে। কিন্তু এখনো কোনো রিপ্লাই পাওয়া যায়নি।

পরিচালকদের সংগঠন এবং সুপরিচিত নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদের সহায়তায় বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা হবে বলেও জানান রাকায়েত।

তার দাবি, পত্রিকা সংশ্লিষ্ট কেউ ভুক্তভোগীর পক্ষ হয়ে এসব প্রকাশ করেছে। তিনি নিজে এবং নাট্য পরিচালকেদের সংগঠনও বিষয়টি সুরাহারর চেষ্টা করছে বলে জানান গাজী রাকায়েত।

এ বিষয়ে তিনি নাট্য পরিচালকদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএ হক অলিকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। অলিকও পরিবর্তন ডটকমের কাছে দাবি করেন, প্রাথমিকভাবে তারা জেনেছেন গাজী রাকায়াতের স্কুলের কিছু ছাত্রসহ যারা পাসওয়ার্ড জানতো তারা এ কাজটি করে থাকতে পারে।

তিনি দাবি করেন, জনপ্রিয়তার জন্য রাকায়েত একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন। সবক’টিতে পাঁচ হাজার করে বন্ধু। ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে তারা যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।

শনিবার বিকেলে এবিষয়ে একটি আপস-মীমাংসার চেষ্টায় শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি এবং ডিরেক্টরস গিল্ট নামে নাট্যজগতের তিন সংগঠনের নেতারা অভিযোগকারীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজধানীর নিকেতনে আলোচনায় বসেন। যেখানে অভিনেত্রী সুইটি, হৃদি হক, অলিক, রনকসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টার আলোচনার পর রাকায়াতের পক্ষে বিষয়টি তদন্তে করে সঠিক সত্য বের না করা পর্যন্ত অভিযোগকারীকে অপেক্ষা করতে বলা হয়।

এ বিষয়ে অভিযোগকারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনটি সংগঠনের সম্মানে আমি হয়তো কয়েকদিন অপেক্ষা করব। কিন্তু কালক্ষেপণ করে ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হলে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/৯:৩৫এএম/১১/৩/২০১৮ইং)