• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন

আজ নায়ক রাজ-রাজ্জাকের প্রয়ান দিবস


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২১, ২০১৮, ২:০১ PM / ৬৪
আজ নায়ক রাজ-রাজ্জাকের প্রয়ান দিবস

ঢাকারনিউজ২৪.কম, ডেস্ক : বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার পরপর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ এ প্রবাদপুরুষের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।

নায়করাজের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে কী আয়োজন রয়েছে? এ প্রশ্নে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার জানন, একদিন পরে ঈদ। যার কারণে অনেকেই যার যার গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছে। তাই নায়করাজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভা ঈদের সাতদিন পর অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি নায়করাজ রাজ্জাকের জন্ম। অবিভক্ত ভারতের কলকাতার কালীগঞ্জের নাকতলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আর আট বছর বয়সে বাবা আকবর হোসেন ও মা নিসারুন্নেসকে হারান। ৩ ভাই, ৩ বোনের সংসার ছিল তাদের।

ছোটবেলায় পড়তেন খানপুর হাইস্কুলে। রাজ্জাক যে পাড়ায় থাকতেন, সে পাড়ায়ই থাকতেন ছবি বিশ্বাস (কাঞ্চনজঙ্ঘা, জলসাঘরসহ অসংখ্য বাংলা ছবির অভিনেতা), সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনয়শিল্পীরা।

কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা।

১৯৬৪ সালের দাঙ্গার পর রাজ্জাক ঠিক করলেন বোম্বে চলে যাবেন। কিন্তু পীযূষ বোসের পরামর্শে ক্যারিয়ার গড়তে খুলনা বর্ডার দিয়ে শিমুলিয়া হয়ে স্ত্রী রাজলক্ষ্মী ও আট মাসের সন্তান বাপ্পারাজকে সঙ্গে করে ঢাকায় চলে এলেন তিনি। শুরু হলো নতুন এক সংগ্রামী জীবন। ঢাকার কমলাপুরে ছোট্ট একটি বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন।

নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশনের তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক।

১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় নায়ক হিসেবে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘বেহুলা’। সেই থেকে শুরু। এতে তার বিপরীতে ছিলেন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। প্রযোজক হিসেবে নায়করাজের যাত্রা শুরু ‘রংবাজ’ ছবির মধ্য দিয়ে। এটি পরিচালনা করেছিলেন জহিরুল হক। রাজ্জাকের বিপরীতে ছিলেন কবরী।

ববিতার সঙ্গে জুটি বেঁধে নায়করাজ প্রথম নির্দেশনায় আসেন ‘অনন্ত প্রেম’ চলচ্চিত্র দিয়ে। এই ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে। নায়ক হিসেবে এ অভিনেতার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল শফিকুর রহমান পরিচালিত ‘মালামতি’। এতে তার বিপরীতে ছিলেন নূতন।

রাজ্জাক অভিনীত জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য একটি মাইলফলক। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরও রাজ্জাক ছিলেন খ্যাতির শিখরে। ‘ওরা ১১ জন’, ‘অবুঝ মন’, ‘রংবাজ’-এর মতো ছবি করেছেন। নারায়ণ ঘোষ পরিচালিত ‘আলোর মিছিল’ ছবিটি ছিল ব্যতিক্রমী।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতা, রোজিনার সঙ্গে একের পর এক সফল জুটি উপহার দিয়েছেন। রাজ্জাক অভিনয় ছাড়া পরিচালনাও করেছেন।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে আছে স্বাধীনতা পদক (২০১৫), পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (সেরা অভিনেতা)।

নায়করাজ সর্বশেষ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘আয়না কাহিনী’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন। এ চলচ্চিত্রে জুটি হিসেবে অভিনয় করেছিলেন সম্রাট ও কেয়া।

এ দিকে নায়করাজ রাজ্জাকের জীবনের ওপর নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্র ‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’। নায়করাজের জীবনীভিত্তিক তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন শাইখ সিরাজ।

২১ আগস্ট রাজ্জাকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চ্যানেল আইয়ে ১৭ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটায় ৯০ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘রাজাধিরাজ রাজ্জাক’ দেখানো হয়

অভিনয়শিল্পী হিসেবে রাজ্জাকের ঝুলিতে রয়েছে ৩০০টির মতো চলচ্চিত্র। আর এর মধ্যে বেশ কয়েকটিই পেয়েছে ক্লাসিক সিনেমার খ্যাতি! (প্রিয়.কম)

(ঢাকারনিউজ২৪.কম/আরএম/১:৫৮পিএম/২১/৮/২০১৮ইং)